মায়ের অভিযোগে ছেলের কারাদণ্ড
নীলফামারীর সৈয়দপুরে মায়ের অভিযোগে ছেলেকে এক বছরের কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। মাদক সেবনের অপরাধে অসহায় মা মাদকাসক্ত ছেলেকে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছেন।
পরে মো. রাজুকে এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয় ভ্রাম্যমাণ আদালত। শুক্রবার রাতে ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিজ্ঞ বিচারক সৈয়দপুর উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পরিমল কুমার সরকার এ দণ্ডাদেশ দেন। শনিবার সৈয়দপুর থানা পুলিশ তাকে নীলফামারী কারাগারে প্রেরণ করেছে।
সৈয়দপুর থানার ওসি মো. শাহজাহান পাশা বলেন, এলাকার বখাটেদের সঙ্গে মেলামেশার কারণে রাজু মাদকাসক্ত হয়ে পড়েছে। তাকে ফিরিয়ে আনতে ব্যবসার জন্য তাকে পরিবারের পক্ষ থেকে টাকাও দেয়া হয়। কিন্তু তারপরও সে মাদক সেবন না ছেড়ে উল্টা ব্যবসার টাকায় মাদক সেবন করে আসছিলো। দেড় বছর আগে তাকে মাদক নিরাময় কেন্দ্রেও পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু এতেও কোনো ফল হয়নি। সেখান থেকে ফিরে আবার মাদকের সাথে জড়িয়ে পড়ে সে।
এতে তার মা কমলা বেগমসহ পরিবারের লোকজন তাকে মাদক সেবনে বাঁধা দিলে বা নিষেধ করলে সে তাদের ওপর চড়াও হয়ে মারধর করতো। এমনকি অনেক সময় সে মাদক সেবন করে এলাকার মানুষকে মারধরসহ নানাভাবে হয়রানি করতো।
তিনি আরো জানান, শুক্রবার সকালে আবারো মায়ের কাছে ১০ হাজার টাকা চায় রাজু। মা টাকা দিতে অস্বীকার করায় সে ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করেন। এর এক পর্যায়ে সে মায়ের ওপর চড়াও হয়ে তাকে মারধর করাসহ ঘরের আসবাবপত্র ব্যাপক ভাঙচুর করে।
এ সময় তাকে থামাতে পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা এগিয়ে এলে মাদকসেবী রাজু তাদের মারধর করতে যায়। আর তাকে মাদক সেবনের টাকা না দিলে এবং বিষয়টি থানা পুলিশকে অবগত করলে সে সবাইকে মারধর করে আত্মহত্যার হুমকিও দেয়।
এ অবস্থায় তারা সৈয়দপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দেন। পরে এর পরিপ্রেক্ষিতে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) পরিমল কুমার সরকার থানা পুলিশ সদস্যদের নিয়ে রাতেই কমলা বেগমের বাড়িতে যান।
এ সময় মাদকাসক্ত ছেলে রাজুকে পুলিশের হাতে তুলে দেন। রাজু তাদের কাছে মাদক সেবন ও পরিবারের সদস্যদের নির্যাতন এবং ঘরের আসবাবপত্র ভাঙচুরের কথা স্বীকার করেন। পরে রাজুকে এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।