চাচার ধর্ষনের শিকার কিশোরী জন্ম দিলেন মেয়ে সন্তান
টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে চাচাসহ তিন যুবকের ধর্ষনের শিকার কিশোরী জন্ম দিয়েছেন এক মেয়ে সন্তান।
বুধবার দুপুরে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে স্বাভাবিক প্রসবের মাধ্যমে নবজাতকের জন্ম দেন তিনি।
ওই কিশোরী জানান, তার মা কিছুটা মানসিক অসুস্থ। অন্যের বাড়িতে গৃহকর্মীর কাজ করে আর দোকানে কর্মচারীর কাজ করা ছোট ভাইয়ের আয়ের টাকায় সংসার চলতো। দারিদ্রতার কারণে ষষ্ঠ শ্রেণিতেই পড়াশুনা বন্ধ হয়ে যায়। প্রায় দশ মাস আগে গোসল শেষে কাপড় পাল্টানোর সময় গোপনে মোবাইলে ছবি তোলে প্রতিবেশি রুদ্র। সে টাকার বিনিময়ে মিঠুন পাল ও বসন্ত পালকে ওই ছবিগুলো দেয়। মিঠুন ও বসন্ত ছবি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। বিষয়টি গোপন না রাখলে মা ও ভাইকে মেরে ফেলার হুমকি দিতো তারা। এ ঘটনার ১৫ দিন পর তারা আবারো পালাক্রমে ধর্ষণ করে।
তিনি আরো বলেন, ঘটনার দুইমাস পরে আপন চাচা বিষয়টি জেনে কাজের কথা বলে ডাকেন। তিনিও হাত-পা ও মুখ বেঁধে ধর্ষণ করেন। হুমকিতে আট মাস গোপনে রাখার পর শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। পরে চিকিৎসক পরীক্ষা শেষে আট মাসের গর্ভবতীর কথা জানান। এ সময় বিস্তারিত ঘটনা পরিবারকে জানান কিশোরী। পরে ওই কিশোরীর মা বাদী হয়ে ৪ জনকে আসামি করে ধর্ষণ মামলা করেন। পরে পুলিশ সবাইকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠায়।
ওই কিশোরী জানান, বিষয়টি জানাজানির পর বাচ্চা নষ্ট করতে ডাক্তারের কাছে যায় সে। যেহেতু আট মাস পার হয়ে গেছে, তাই বাচ্চা নষ্ট করা হলে মৃত্যু হতে পারে বলে ডাক্তার জানায়। এমন কথা শুনে বাচ্চা নষ্ট করতে দেয়নি সে। পরীক্ষার মাধ্যমে পিতৃ পরিচয় চিহ্নিত করে সে বড় হোক সঙ্গে সঙ্গে অপরাধীদের শাস্তির দাবি জানায় ওই কিশোরী।
কিশোরীর পরিবার জানায়, বুধবার সকালে প্রসব ব্যাথা শুরু হলে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। সেখানে একটি মেয়ে সন্তানের জন্ম হয়। সে নিজেই এখনো শিশু, তার গর্ভে থেকে জন্ম নিলো আরেকটি শিশু। কি হবে শিশুর পিতৃ পরিচয়? আর কে করবে ভরণ পোষণ?
টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের শিশু বিভাগের চিকিৎসক তাহমিনা সুলতানা জানান, বুধবার দুপুরে শিশুটিকে শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। শিশুটির ওজন কম ও শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। তবে শিশুটির অবস্থা শঙ্কামুক্ত নয়।