অস্বাস্থ্যকর ও নোংরা পরিবেশে কালিগঞ্জ হাসপাতালে দেওয়া হচ্ছে নিন্ম মানের খাবার
কালিগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রোগীদের খাবার রাখা হচ্ছে টয়লেটের ভিতরে। সরকারি বাজেট অনুযায়ী খাদ্য সরবরাহ না করে রোগীদের দেওয়া হচ্ছে নিন্ম মানের খাবার। তালিকা অনুযায়ী খাবার দিচ্ছেনা ঠিকাদার।তাছাড়া রোগীদের খাবারের পরিমাণে কম দেওয়া হচ্ছে এমনই অভিযোগ স্থানীয়দের।
সরেজমিনে যেয়ে দেখা যায় নোংরা ও অপিরছন্ন পরিবেশে রান্না করা হচ্ছে। তাছাড়া খাবার রাখার জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে হাসপাতালের টয়লেট। খাবার সরবরাহের ঠিকাদার ওই হাসপাতালের হেড ক্লার্ক অরবিন্দু ঘোষের আপন ছোট ভাই স্বপন। এজন্য সরকারি মেনু অনুযায়ী খাবার সরবরাহ না করলেও কেউ কিছু বলতে সাহস পায়না। প্রতিদিন একজন রোগীর জন্য সরকারি বরাদ্দ ১’শ ২৫ টাকা। তবে বাজেটের সীমিত টাকা খরচ করা হয় রোগীদের পিছনে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাসপাতালে কর্মরত কয়েকজন কর্মকর্তা জানান ২০১৪ সালের পর থেকে হাসপাতালে নতুন করে কোন ঠিকাদার নিয়োগ হয়নি তার কারণ বর্তমান উচ্চ আদালতে মামলা চলমান আছে। তাছাড়া হাসপাতালের খাদ্যর বরাদ্দে সকালের খাবারের জন্য একজন রোগী পাবে চিড়া ১’শ গ্রাম,চিনি ৩২ গ্রাম,পাকা কলা ১ পিস।
কিন্তু সকালে রোগীদের দেওয়া হয় চিড়া ৫০ গ্রাম, চিনি ১৫ গ্রামের মত তবে প্রতিদিন দেওয়া হয়না কলা। দুপুরের খাবারের জন্য বরাদ্দ আছে পাঙ্গাশ,তেলাপিয়া,রুইও গ্লাস-কাপ মাছ ১’শ ৪ গ্রাম। শিডিউলে রুই মাছ ও গ্লাস-কাপ মাছের উল্লেখ থাকলেও দেখা পায়না রোগীরা। এছাড়া ৫০ গ্রাম ওজনের মাছ দেওয়া হয় তাদের। প্রতি শনিবার সোমবার ও বুধবার দুপুরে ও রাতে মাছ দেওয়ার কথা উল্লেখ থাকলেও দেওয়া হয়না। এর মধ্য রবিবার,মঙ্গলবার ও বৃহস্পতিবার দেশী মুরগী ১’শ ১০ গ্রাম করে রোগীর জন্য বরাদ্দ আছে। কিন্তু রোগীদের দেওয়া হচ্ছে ৫৫ গ্রাম করে পোল্ট্রি মুরগীর মাংস এমনই অভিযোগ রোগীদের। ওই হাসপাতালে তরকারী বরাদ্দ আছে আলু,কলা,লাউ,পেঁপে ও পটল সেখানেও ফাকি দিচ্ছে ঠিকাদার ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
হাসপাতালে চিকৎসারত আলম,মনিরা পারভীন,শেখ ইদ্রিস হোসেনসহ অনেকে জানান,হাসপাতালে বরাদ্দ অনুযায়ী খাবার তাদের দেওয়া হচ্ছেনা। তাছাড়া যে খাবার তাদের দেওয়া হচ্ছে তা অতি নিন্ম মানের ও পরিমাণেও কম দেওয়া হচ্ছে। তারপরও রাঁধুনিরা এমন ভাবে রান্না করছে রোগীরা খেতে পারছেনা বলে জানান।
খাদ্য মজুদ ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে রান্না করার কারণ জানতে চাইলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বাবুর্চি আব্দুল খালেক বলেন, অনেক আগে থেকে টয়লেটটি ব্যবহার করা হয়না এজন্য কিছু খাদ্য ওই খানে মজুদ করে রাখেন। এছাড়া তিনি নোংরা পরিবেশে রান্নার বিষয় অস্বীকার করেন।
নিন্মমানের খাদ্য সরবরাহ ও বরাদ্দের চেয়ে কম দেওয়ার কারণ জানতে চাইলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের খাদ্য সরবরাহের ঠিকাদার স্বপন ঘোষ অস্বীকার করে বলেন, সরকারি নিয়ম অনুযায়ী তিনি খাদ্য সরবরাহ করেন আবাসিক মেডিকেল অফিসারের কাছে। সে অনুযায়ী তিনি রশিদ বুঝে নেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে। পরবর্তীতে কি ঘটে সেটি তার জানা নেই।
হাসপাতালে অনিয়ম ও নোংরা পরিবেশে খাদ্য পরিবেশনের বিষয়ে উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার তৈয়েবুর রহমান বলেন, রোগীরা কোন বিষয়ে তার কাছে অভিযোগ করেননি। এজন্য কোন বিষয় তিনি অবগতনন। তবে এসকল বিষয়ে অতিদ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে জানান।