কালিগঞ্জে ছাত্রলীগের চারটি ইউনিটের কমিটি বিলুপ্তির প্রতিবাদে মানববন্ধন ও সংবাদ সম্মেলন

কালিগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সম্পাদকের চাহিদা অনুযায়ী টাকা দিতে ব্যর্থ হওয়ায় মেয়াদ থাকা সত্ত্বেও সম্পূর্ণ আক্রোশমূলক ভাবে উপজেলার রতনপুর, বিষ্ণুপুর ও কুশুলিয়া ইউনিয়ন এবং কুশুলিয়া স্কুল এন্ড কলেজ ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্ত করা হয়েছে। অগঠনতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় ভেঙে দেয়া ওই চারটি ইউনিটের কমিটি পুনর্বহাল এবং বিতর্কিত উপজেলা কমিটি ভেঙে পুনরায় কমিটি গঠনের দাবিতে মানববন্ধন ও সংবাদ সম্মেলন করেছে ছাত্রলীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা।

সোমবার (১৩মে) বিকেল সাড়ে ৪ টায় কালিগঞ্জ উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স প্রাঙ্গণে মানববন্ধন শেষে রিপোর্টাস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্টিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে বিলুপ্ত ঘোষিত চারটি ইউনিটের নেতৃবৃন্দের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন কুশুলিয়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ওসমান খান। লিখিত বক্তব্যে তিনি জানান, সম্পূর্ণ নিয়মতান্ত্রিক ভাবে গত ২৫/০১/১৯ তারিখে ৫১ সদস্য বিশিষ্ট কুশুলিয়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি, ২৪/০১/২০১৯ তারিখে এক বছর মেয়াদে রতনপুর ইউনিয়নের ৭ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি, সম্মেলনের মাধ্যমে কুশুলিয়া স্কুল এন্ড কলেজের পূর্ণাঙ্গ কমিটি এবং বিষ্ণুপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের কমিটি গঠিত হয়। কমিটির গঠনের পর নেতৃবৃন্দের সক্রিয় অংশগ্রহণে দলীয় ও জাতীয় সকল কার্যক্রম যথাযথ ভাবে পালিত হয়ে আসছে। পাশাপাশি সংগঠনের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করতে এবং সাংগঠনিক কার্যক্রম গতিশীল করার লক্ষ্যে নেতৃবৃন্দ অব্যাহত ভাবে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, গত ২২/০৩/১৯ তারিখে কাজী নূর আহমেদ রনিকে সভাপতি এবং ফিরোজ হোসেনকে সাধারণ সম্পাদক মনোনীত করে ৫ সদস্যবিশিষ্ট আংশিক উপজেলা কমিটি গঠন করেন জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সম্পাদক মহোদয়। নবগঠিত কমিটির সভাপতি কাজী নূর আহমেদ রনি ও সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ হোসেনের নেতৃত্বে উপজেলা কমিটি গঠনের পর থেকে তারা বিভিন্ন অজুহাতে আমাদের নিকট টাকা দাবি করতে থাকে। সর্বশেষ গত ১২/০৫/১৯ তারিখ সন্ধ্যায় উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে সংগঠনের একটি প্রোগ্রাম শেষে আবারও সভাপতি কাজী নূর আহমেদ রনি ও সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ হোসেন কমিটি টিকিয়ে রাখাতে প্রত্যেক ইউনিটকে ৫০ হাজার টাকা হারে প্রদানের নির্দেশ দেয়। আমরা চারটি ইউনিট দাবিকৃত টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করি এবং সাথে সাথে টাকা দাবির বিষয়টি জেলা ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দকে অবহিত করি।

জেলা নেতৃবৃন্দ উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে টাকা দিতে নিষেধ করেন। আমাদের কমিটির মেয়াদ থাকা সত্ত্বেও উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ১৩/০৫/১৯ তারিখ প্রথম প্রহরে আক্রোশমূলক ভাবে কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করেন। প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে কমিটি ভাঙার কারণ হিসেবে মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়া এবং সাংগঠনিক কার্যক্রম না থাকার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে যা আদৌ সত্য নয়। তিনি আরও জানান, কালিগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের বর্তমান সভাপতি কাজী নূর আহমেদ রনি ছাত্রজীবনে কালিগঞ্জ থাকাকালে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সক্রিয় নেতা ছিলেন। পরবর্তীতে তিনি সাতক্ষীরায় পড়ালেখাকালে ছাত্রলীগের সাথে যুক্ত হন। ছাত্রজীবন শেষ করে বর্তমানে তিনি কালিগঞ্জের তারালী ইউনিয়নের আমিয়ানে অবস্থিত ‘এসিআই এগ্রো লিমিটেড’ নামক একটি বেসরকারি সংস্থায় এ্যাডমিন অফিসার হিসেবে কর্মরত আছেন। অপরদিকে তার পিতা কুশুলিয়া গ্রামের বাসিন্দা কাজী ছবিয়ার রহমান ওরফে ফকির বিএনপি’র রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন। ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ সংসদ নির্বাচনের পূর্ব মুহূর্তে তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগে যোগদান করেন। অপরদিকে সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ হোসেনের মা জামায়াতের রোকন। বিএনপি-জামায়াত পরিবারের সন্তান বর্তমান উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হওয়ার কারণে সাংগঠনিক কার্যক্রম দারুণ ভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে এবং তারা সংগঠন বিরোধী প্রক্রিয়ায় লিপ্ত হয়ে চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অপকর্মে জড়িয়ে পড়েছেন।
মানববন্ধন ও সংবাদ সম্মেলন থেকে তিনি নিয়মতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় গঠিত কমিটি অবৈধ পন্থায় বিলুপ্ত করার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানোর পাশাপাশি বৈধ কমিটিগুলো পূনর্বহাল এবং উপজেলা ছাত্রলীগের বিতর্কিত স্বেচ্ছাচারী কমিটি বিলুপ্ত করার জন্য জেলা নেতৃবৃন্দের প্রতি আহ্বাণ জানান।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)