ঘূর্ণিঝড় ‘ফণি’ ৪ মে বাংলাদেশে আঘাত হানতে পারে
শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় ‘ফণি’র গতিপথ পাল্টে সরাসরি বাংলাদেশে আঘাত হানলে, তা ভয়াবহ হবে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়া অধিদফতরের পরিচালক ছামছুদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, এটি বর্তমানে গভীর সমুদ্রে বাংলাদেশ থেকে মাত্র এক হাজার কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে।
বুধবার সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ঘূর্ণিঝড় ফণি বিষয়ে জরুরি প্রস্তুতি সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
ছামছুদ্দিন আহমেদ আরো বলেন, এ মুহূর্তে এর গতিপথ যেভাবে রয়েছে তাতে প্রথমে এটি ভারতের উড়িষ্যায় আঘাত করবে। এরপর পশ্চিম বাংলায় আঘাত হানবে। কিন্তু এর গতিপথ যদি পরিবর্তন হয়, তাহলে সমুদ্রের কোলঘেঁষে সরাসরি বাংলাদেশে আঘাত হানবে। যদি তা হয়, এটি খুলনা, মংলা, সাতক্ষীরা, চট্টগ্রাম হয়ে ভয়াবহ আকারে কক্সবাজার পর্যন্ত বিস্তৃত হবে।
এসময় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান জানান, মন্ত্রণালয় থেকে কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। এনডিআরসি প্রতিনিয়ত সংবাদ দিচ্ছে। সিপিসির হেড কোয়ার্টার এবং উপকূলীয় ১৯টি জেলায় কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে।
তিনি বলেন, এসব জেলার উপজেলা পর্যায়েও কন্ট্রোলরুম খোলা হয়েছে। রেডক্রিসেন্ট এর কন্ট্রোল রুমও খোলা হয়েছে। উপকূলীয় আর্মি স্টেশনগুলোতেও ঢাকা থেকে মেসেজ পাঠানো হয়েছে। সিপিপির ৫৬ হাজার ভলেন্টিয়ারকেও মেসেজ পাঠানো হয়েছে। তারা প্রস্তুত আছে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, তারা এরইমধ্যে মাইকিং করে প্রস্তুতিমূলক কাজ শুরু করেছেন। শুকনো খাবার, আশ্রয় নেয়ার ব্যবস্থা ও চিকিৎসার জন্য প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। এসব জেলার প্রশাসকদের কাছে দুইশ মেট্রিকটন চাল পৌঁছে দেয়া হয়েছে। প্রত্যেক জেলা প্রশাসককে ৫ লাখ করে টাকাও দেয়া আছে।
একইসঙ্গে ৪১ হাজার প্যাকেট শুকনা খাবার পৌঁছে দেয়া হয়েছে। স্যালাইনের জন্য সুপেয় পানির ট্রাক পৌঁছে দেয়া হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী লন্ডনে যাওয়ার আগে তার মুখ্য সচিবকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিয়েছেন। সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। হতাহত যেন কম হয়, সে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
তবে ফসলের ক্ষতিটা রক্ষা করা যাবে না। ঘুর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে প্রাণীসম্পদ রাখার জায়গা নেই, তাই যতটুকু সম্ভব হয় প্রাণীসম্পদকেও যেন আশ্রয়কেন্দ্রে আনা যায় স্বেচ্ছাসেবকদের সে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, যে প্রস্তুতি রয়েছে তাতে ঝড়ের আঘাত সহনীয় পর্যায়ে রাখা সম্ভব হবে। ঘূর্ণিঝড়প্রবণ এলাকার সব কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সাপ্তাহিক ছুটি এবং অন্যান্য ছুটি বাতিল করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্মস্থলে উপস্থিত থেকে সবাইকে সহযোগিতার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
বৈঠকে বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট, ফায়ার সার্ভিস, আবহাওয়া অধিদফতরসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোর প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।