পলাশপোলে জোর করে জমি দখলের চেষ্টা করছে খলিলুর ও তার সহযোগীরা
কোবালা দলিল মূলে আমার স্ত্রী মনজুয়ারা ইমতিয়াজের প্রাপ্ত চার শতক জমিতে ‘ আলা বারাকা কম্পিউটার এন্ড ইলেকট্রনিক মার্কেট প্রতিষ্ঠা করে আমি ব্যবসা করে আসছিলাম। সেখানে আমাদের ২০ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে। বর্তমানে সেখানকার দোকানে কোটি কোটি টাকার মালামাল রয়েছে। আর এই সম্পদ ও সম্পত্তি অবৈধভাবে দখলের লক্ষ্যে গত ২৪ এপ্রিল সন্ত্রাসী হামলা চালিয়েছে বাবুর আলি সরদারের ছেলে খলিলুর রহমান ও তার সহযোগীরা। এ ব্যাপারে মামলা করা হলে পুলিশ আল জামিকে গ্রেফতার করেছে।
মঙ্গলবার সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন করে এ কথা বলেন শহরের পলাশপোলের শওকত আলির ছেলে কামরুজ্জামান বুলু। তিনি বলেন তারা গায়ের জোরে ওই সম্পত্তি দখলের জন্য হামলা চালিয়ে তাকে ও তার স্ত্রীকে মারপিট করে গুরুতর আহত করে। এ ঘটনায় স্ত্রী মনজুয়ারা ইমতিয়াজ ১১ জনের বিরুদ্ধে মামলা করলে পুলিশ আল জামিকে গ্রেফতার করেছে ( মামলা নম্বর ৬১, জিআর ২২২/১৯) ।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে কামরুজ্জামান বুলু বলেন পলাশপোল মৌজায় ডিএস খতিয়ান ১০৫৫ নম্বর এবং এসএ ১০৮৬ খতিয়ানে ১১৬৭ দাগে ২২ শতক সম্পত্তির মধ্য থেকে চার শতক জমি নিয়ে জরিনা খাতুনের সাথে মামলা চলছিল বাবুর আলির। মামলা নম্বর ২২৪/৮৯। এ মামলায় জরিনা খাতুন জজ আদালতে ডিক্রি প্রাপ্ত হন। ডিক্রি প্রাপ্তির পর জরিনা খাতুন কোবালা দলিল মূলে চার শতক জমি আমার স্ত্রী মনজুয়ারা ইমতিয়াজের কাছে বিক্রি করেন। ডিক্রির বিরুদ্ধে বাবুর আলি সরদার সুপ্রীম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে ৩৮২৭/০২ সিভিল রিভিশন মামলা করেন। এই মামলায় মনজুয়ারা খাতুন ২১ নম্বর পক্ষভূক্ত হন। বাবুর আলির মৃত্যুর পর তার ওয়ারেশগন মামলায় পক্ষভুক্ত হন।
লিখিত বক্তব্যে কামরুজ্জামান বুলু বলেন ২০১২ সালে সিভিল রিভিশন মামলাটি একতরফাভাবে খারিজ হয়ে যায় এবং আগের আদেশ বহাল থাকে। প্রতিপক্ষ এর বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে ১২৫২/১৩ নম্বর আপিল করেন। ২০১৬ এর ৩০ মে তারিখে প্রধান বিচারপতিসহ চারজন বিচারপতির সমন্বয়ে উচ্চ আদালতে মামলাটি ডিসমিস হয়ে যায়। এরপর প্রতিপক্ষ প্রধান বিচারপতির আদালতে রিভিশন করলে সেটিও ২০১৩ এর ২১ নভেম্বর ডিসমিস হয়ে যায়। প্রতিপক্ষ ৬৪৩/১৭ নম্বর রিভিউ পিটিশন করলে সেটিও সাতজন বিচারপতির সমন্বয়ে গঠিত বে শুনানি শেষে ডিসমিস করে দেন। এ সব ঘটনার পর সাতক্ষীরা জজ আদালতে প্রাথমিক ডিক্রিটি চূড়ান্ত ডিক্রী হিসাবে ঘোষিত হয় এবং দেওয়ানি জারি ০৫/১৭ মামলায় জজ আদালতের নির্দেশে একজন প্রথম শ্রেণির ম্যাজিস্ট্রেট ২০১৮ সালের ২৮ নভেম্বর নালিশী জমিতে হাজির হয়ে কামরুজ্জামান বুলুর স্ত্রী মনজুয়ারা ইমতিয়াজকে সম্পত্তির দখল বুঝে দেন।
সংবাদ সম্মেলনে বুলু বলেন এসবের পরও ওই জমি দখলের জন্য বারবার চেষ্টা করছে প্রতিপক্ষের লোকজন। এই লক্ষ্যে গত ২৪ এপ্রিল বাবুর আলির ছেলে খলিলুর রহমান, আবদুল জলিল, আবদুল বারী, তাহাজ্জেদ আলি, আহাজ্জেদ আলি আহাদ, সাগর, আবদুল বারির ছেলে মোস্তাকিন, কাজল, আবদুল জলিলের ছেলে জামি, রানা ও সুফলসহ ১৫/২০ জন ধারালো অস্ত্রশস্ত্র ও লাঠিসোটা লোহার রড নিয়ে আমাদের জমিতে হামলা করে। এ সময় তারা আমাকে ও আমার স্ত্রীকে মারপিট করে গুরুতরভাবে আহত করে। এ ব্যপারে থানায় দেওয়া মামলায় পুলিশ আল জামিকে গ্রেফতার করেছে।
কামরুজ্জামান বুলু বলেন তাদের জমিতে হামলাকারীরা নিজেদের অপরাধ ঢাকতে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন করে মিথ্যা তথ্য তুলে ধরে তাকে সামাজিকভাবে হেয় করার চেষ্টা করেছে অন্যতম হামলাকারী আল জামি। বুলু বলেন তিনি শহরের একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী । তার বিরুদ্ধে মিথ্যে ভিত্তিহীন ও কুরুচিপূর্ণ তথ্য তুলে ধরার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান তিনি। একই সাথে তিনি যাতে আইনগতভাবে তার স্ত্রী ওই জমি দখলে রাখতে পারেন সেজন্য তিনি সাতক্ষীরা পুলিশ সুপারের দৃষ্টি আকর্ষন করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন ব্যবসায়ী মো. আবু মুসা, ব্যবসায়ী মো. শহিদুল ইসলাম ও মো. সিরাজুল ইসলাম।