কাঠফাটা রোদ গরমে অতিষ্ঠ সাতক্ষীরার জনজীবন
গ্রীষ্মের শুরুতে দেশজুড়ে চলমান তীব্র কাঠফাটা রোদে অতিষ্ঠ জনজীবন। রোদে পুড়ছে প্রকৃতি, বইছে তাপপ্রবাহ, স্বস্তি নেই কোথাও। জনজীবনে কাহিল অবস্থা। চারদিকে মানুষজন ছাড়াও প্রাণিকূলের মধ্যে তীব্র গরমে হাঁসফাঁস অবস্থা।
অনেক জায়গায় বাতাসে যেন আগুনের হল্কা। তীর্যক সূর্যের দহনে দিনমান অতিবাহিত হচ্ছে। কখনও কোথাও আকাশে বিক্ষিপ্ত মেঘের আনাগোনা থাকলেও প্রত্যাশিত বৃষ্টি ঝরছে না। দুপুরের রোদে খোলা আকাশের নিচে হাঁটলে গরম বাতাসের হলকায় মুখমন্ডলল পুড়ে যাওয়ার উপক্রম। শরীর ভিজে একাকার হয়ে যাচ্ছে ঘামে। সূর্য এতটাই তেঁতে উঠেছে যে, বাইরে বের হলেই মনে হচ্ছে অগ্নিকু- শুধু দিনের বেলাতেই নয়, রাতেও গরমে মানুষ ঘুমাতে পারছে না। সপ্তাহ খানেক ধরে চলছে সাতক্ষীরাসহ দেশের অন্যান্য জেলায় ধানকাটার মৌসুম।
আর এই খা খা রোদে কৃষকের মুখ হাসির বদলে দেখাচ্ছে মলিনতার ছাপ। তারপরেও আবহাওয়া অনুকূলে থাকবে না জেনে খাটনিতে ব্যস্ত কৃষক ও দিনমজুররা। এই প্রখর রোদে খাওয়ার স্যালাইনই তাদের একমাত্র ভরসা। একাধিক গ্রাম ডাক্তার জানান, বিগত দুইদিন গরমের কারণে বেশি অসুস্থ হচ্ছে শিশু ও বয়স্করা। প্রচন্ড গরম থেকে বাদ পড়ছে না পশু-পাখিরাও।
কুদ্দুস নামের একজন কৃষক বলেন, তীব্র গরমের মাঝে ধান কাটতে যেয়ে অবস্থা একেবারে নাকাল। ঠান্ডা পানির সাথে খাওয়ার স্যালাইন মিশিয়ে পান করলেও স্বস্তি মিলছে না।। তবে অন্যান্য বারের চেয়ে এবছর সবারই কাজের গতি অনেক কম। গতবার বিঘা প্রতি আমার ৬টা করে জোন (শ্রমিক) লাগতো। কিন্তু এবার ৮টা জোনেও সেই কাজ শেষ উঠবে বলে মনে হচ্ছেনা।
তাপামাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে সাতক্ষীরা ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং খুলনা অঞ্চলের ৩৭ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস
বিশেষজ্ঞদের মতে রাতে বায়ুর তাপ ও জলীয় বাষ্পের তাপের তারতম্যের কারণে গরম অনুভূত হচ্ছে বেশি। রাতে জলীয়বাষ্প বেড়ে যাচ্ছে। জলীয়বাষ্পের পরিমাণ বেশি হলে শরীরের ঘাম বায়ু শুষে নিতে পারে না। এজন্যই বেশি গরম লাগে।
অধিক তাপমাত্রার অতিষ্ঠ হয়ে একেবারেই জরুরি কাজ না থাকলে ঘরের বাইরে বেরোচ্ছেন না অনেকেই। বাজার ও রাস্তার মোড়ে মোড়ে বসা অস্বাস্থ্যকর জেনেও অনেকেই পান করছেন রাস্তার পাশের লেবুর শরবত কিংবা অন্য কোনো ঠান্ডা পানীয়। তাপমাত্রা যে গতিতে বাড়ছে তাতে আগামী সপ্তাহের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত তাপমাত্রা একই রকম থেকে কিছুটা বাড়তে পারে বলে আবহাওয়া অধিদপ্তরের সূত্রে জানা যায়।
এদিকে, অধিক তাপমাত্রায় বাড়ছে ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন ধরনের রোগ। বিভিন্ন গণমাধ্যমে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, তীব্র গরমের কারণেই সারা দেশের বিভিন্নস্থানে পানিবাহিত রোগ ও ডায়রিয়ার প্রকোপ বৃদ্ধি পেয়েছে।