সাতক্ষীরায় বাল্য বিবাহ প্রতিরোধে নানান উদ্যোগ গ্রহণ
এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশে বাল্য বিয়ের হার সবচেয়ে বেশি। শুধু বাংলাদেশ নয়, পৃথিবীব্যাপী বাল্য বিবাহ একটি মারাত্মক সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রতিবছর সারাবিশ্বে ১৮ মিলিয়ন মানুষ বাল্য বিয়ের শিকার হচ্ছে। বাংলাদেশে বাল্য বিয়ের হার ৫২ শতাংশ। খুলনা বিভাগে বাল্য বিয়ের হার ৭১ শতাংশ ও সাতক্ষীরায় এই হার ৭২ শতাংশ। বাংলাদেশে বাল্য বিয়ের গড় বয়স ১৫ বছর। যাদের প্রথম বাচ্চা জন্মদানের গড় বয়স ১৭ বছর।
আজ রোববার (২৮ এপ্রিল) সাতক্ষীরা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে ইউএসএইড’র খাদ্য নিরাপত্তা উন্নয়ন কার্যক্রম- নবযাত্রা’র প্রকল্পের আওতায় ওয়ার্ল্ডভিশন আয়োজিত “১৮’র আগে বিয়ে নয় : বাল্যবিবাহ নিরসনে করণীয়” বিষয়ক গোলটেবিল বৈঠকে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর উদ্ধৃতি দিয়ে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
বৈঠকে অংশ নিয়ে বক্তারা বলেন, খাতা-কলমে নয়, বিয়ে অনলাইনে রেজিস্ট্রির মাধ্যমে বাল্যবিবাহে প্রতিরোধের উদ্যোগ নিতে হবে। সামাজিক নিরাপত্তার অভাব, আর্থিক অসঙ্গতিসহ নানা কারণে কোনভাবেই বাল্য বিয়ে বন্ধ করা যাচ্ছে না। সংশ্লিষ্টদের দায়িত্বে অবহেলা, সামাজিক দায়বদ্ধতা না থাকা, কর্মসংস্থানের অভাব, ভুয়া রেজিস্ট্রার খাতা ব্যবহার করে বিয়ে দেওয়ায় কোনভাবেই বাল্য বিয়ে থামানো যাচ্ছে না। নোটারি পাবলিক বাল্যবিয়ে প্রতিরোধে বিপদজনক হয়ে দাড়িয়েছে।
বৈঠকে বক্তারা কাজীরা বিয়ে পড়ালেও তার কপি জেলা রেজিস্ট্রার কর্তৃক সরবরাহ, শিক্ষকদের কার্যকরী ভূমিকা রাখা, প্রত্যেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে স্টুডেন্ট ফোরাম গঠন করে বাল্য বিয়ের তথ্য দ্রুত আদান-প্রদান, যারা বাল্য বিয়ে করবে না তাদের ক্ষেত্রে উপবৃত্তির পরিমান বৃদ্ধিসহ অব্যাহত সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলে বাল্য বিবাহ প্রতিরোধে উদ্যোগ নেওয়া আহবান জানান।
বৈঠকে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সভাপতি আবু আহমেদের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম।
আলোচনায় অংশ নেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জিয়াউর রহমান, সাতক্ষীরা জেলা নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব এড. আবুল কালাম আজাদ, সদর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান কোহিনুর ইসলাম, জেলা পরিষদ সদস্য অ্যাডভোকেট শাহনেওয়াজ পারভীন মিলি, নাগরিক আন্দোলন মে র আহবায়ক অ্যাডভোকেট ফাহিমুল হক কিসলু, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক আব্দুল কাদের, সাতক্ষীরা সরকারি কলেজের সহকারী অধ্যাপক আ ন ম গাউছার রেজা, স্বদেশের নির্বাহী পরিচালক মাধব চন্দ্র দত্ত, প্রথম আলোর সাংবাদিক কল্যাণ ব্যানার্জি, এটিএন বাংলার নিজস্ব প্রতিনিধি ভয়েস অব সাতক্ষীরা সম্পাদক এম কামরুজ্জামান, সদর উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. রোকনুজ্জামান, অ্যাডভোকেট নাজমুন নাহার ঝুমুর, মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের প্রোগ্রাম অফিসার ফাতেমা জোহরা, টিআইবির এরিয়া ম্যানেজার আহাদুজ্জামান, নবযাত্রা প্রকল্পের জেন্ডার ম্যানেজার তাসনুভা জামান, প্রোগ্রাম ম্যানেজার মোক্তার হোসেন, ইয়ুথ ডেভলপমেন্ট কো-অর্ডিনেটর আশিক বিল্লাহ প্রমুখ।