কালিগঞ্জে শিক্ষকের বিরুদ্ধে আবারো ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ
সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপটজেলার সন্ন্যাসীর চক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক শহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে সোমবার সকাল ১০টায় তারই স্কুলের পঞ্চম শ্রেণীর এক স্কুল ছাত্রীকে যৌন হয়রানি করার অভিযোগ উঠেছে। বুধবার ওই বিদ্যালয়ের মা সমাবেশে ভুক্তভোগী উপজেলা প্রাথমিক সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান হাজির হলে অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা শিক্ষক শহীদুল ইসলামকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বহিষ্কার করার জন্য ক্ষোভে ফেটে পড়েন। এক সপ্তাহের মধ্যে তাকে অন্যত্র সরানোর প্রতিশ্রুতি দিলে অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা শান্ত হন।
শিক্ষক শহিদুল ইসলাম, কালিগঞ্জ উপজেলার পূর্ব নলতা গ্রামের মৃত ইমান আলী মোল্লার ছেলে।
সন্ন্যাসীর চক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির এক ছাত্রীর বাবা জানান, সোমবার সকাল ১০টার দিকে সহকারী শিক্ষক শহীদুল ইসলাম তার মেয়েকে পাশের কক্ষে ডেতে নিয়ে তার শরীরের বিভিন্ন স্পর্শকাতর স্থানে হাত দেয়। এরপর তার মুখ চেপে ধরে ধর্ষণেরে চেষ্টা করলে মেয়েটি স্যারকে ধাক্কা মেরে বেরিয়ে আসে। পরে বাড়িতে এসে তাকে ঘটনাটি জানায়। দুপুর দু’ টোর দিকে তিনি বিষয়টি প্রধান শিক্ষিকা শিবানী রানী ঘোষকে জানালে তিনি বিষয়টি উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সভাপতিকে অবহিত করেন। বেগতিক বুঝে শহীদুল ইসলাম বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সদস্যদের ও প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও সাংবাদিকদের ম্যানেজ করতে মাঠে নামেন।
অভিভাবক শহীদ হোসেন , আব্দুর রহিম, সেকেন্দার আলী, মাফুজা খানমসহ কয়েকজন জানান, বুধবার উপজেলা প্রাথমিক সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান মা সমাবেশ উপলক্ষে সন্ন্যাসীর চক বিদ্যালয়ে আসেন। সেখানে সহকারী শিক্ষক শহীদুল ইসলাম হাজির হলে তারা তাকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বহিষ্কার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিতর দাবি জানান। এ সময় তারা মৌতলা, কাশিবাটী, কাজলা, নলতা, শুইলপুর, শেহারা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করাকালিন ওই স্কুলের ছাত্রীদের ধর্ষণের চেষ্টাকারী শহীদুল মাষ্টার কীভাবে এখনো চাকরি করে তা জানতে চান। এবার শিক্ষা কর্মকর্তাদের টাকা দিয়ে ম্যানেজ করে থাকার চেষ্টা করলে শহীদুল মাষ্টারকে ঝাঁটা মেরে মুখে কালি লাগিয়ে বাজারে ঘুরিয়ে বিদায় ঘণ্টা বাজানো হবে বলে সতর্ক করে দেন তারা।
সন্ন্যাসীর চক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা শিবানী রাণী ঘোষ পঞ্চম শ্রেণির এক স্কুল ছাত্রীকে শ্লীলতাহানির সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, সংশ্লিষ্ট সহকারী শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদকে অবহিত করা হয়েছে।
বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সভাপতি মুছা করিম ও সদস্য আবু তালেব স্কুল ছাত্রীর শ্লীলতাহানির অভিযোগ যথাযথ উল্লেখ করে বলেন, মেয়েরা যেখানে সন্তানের মত সেখানে তাকে শ্লীলতাহানি করলে নিজের মেয়ে ঘরে কিভাবে নিরাপদ থাকবে?
সন্ন্যাসীর চক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক শহিদুল ইসলাম তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, একটি মহলের ষড়যন্ত্র চলছে। তবে তিনি যে কোন মূল্যে আরো আট মাস তিনি ওই বিদ্যালয়ে থেকে সম্মানের সঙ্গে বদলী হবেন।
কালিগঞ্জ উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান জানান, বিষয়টি জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারকে অবহিত করা হয়েছে।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ রুহুল আমিন বলেন, বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।