জাল ডিড করে শ্যামনগরে জমি দখলের চেষ্টায় হয়রানিমূলক মিথ্যা মামলা

আমার নামে জমির ডিড না করে আকরামের নামে করেছেন। আপনার এ জমি আমি জাল দলিল করে দখল করে নেব। প্রকাশ্যে এমন হুমকি দেওয়ার পর এক একর ৪৯ শতক জমির কাগজপত্র জাল করে রেজিস্ট্রি করে নিয়েছে সাতক্ষীরার সুলতানপুরের মামলাবাজ ও দুদোক মামলার আসামি বাবলু গাজি খোকন। সেই খোকন আবারও আমার পরিবারের সদস্য ও কয়েকজন ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, বোমাবাজি ও লুটপাট ভাংচুরের মিথ্যা মামলা সাজিয়ে হয়রানি করার নেশায় মেতে উঠেছে।

সোমবার দুপুরে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন করে এ কথা বলেন শ্যামনগর উপজেলার বড় কুপোট গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত স্কুল শিক্ষক বঙ্কিম চন্দ্র বৈদ্য। এ সময় তার সাথে তার সহযোগী ঘের ব্যবসায়ী আকরাম হোসেন উপস্থিত ছিলেন।

বঙ্কিম চন্দ্র তার লিখিত বক্তব্যে বলেন বড় কুপোট গ্রামে ১৯০ বিঘার আদ্যশক্তি চিংড়ি প্রকল্প তিনি নিজে, জমির অন্যান্য মালিক এবং বাবলু গাজি খোকনসহ অনেকেই পরিচালনা করে আসছিলেন। কিছুদিন পর টাকার প্রয়োজন হওয়ায় বঙ্কিম চন্দ্র তার ১৩ বিঘা পাঁচ কাঠা জমি ঘের ব্যবসায়ী আকরাম হোসেনের নামে ২০১৬ থেকে ২০১৯ পর্যন্ত বন্দোবস্ত ডিড করে দেন। এতেই ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন বাবলু গাজি খোকন। তিনি হুমকি দিয়ে বলেন ‘ আমি আপনার জমি যেভাবে হোক রেজিস্ট্রি করে নিয়ে নেবো’। তিনি বলেন পরে জানা যায় বাবলু গাজি খোকন শ্যামনগর সাব রেজিস্ট্রি অফিস থেকে জাল কাগজপত্র দেখিয়ে ২০১৭ সালের ২৬ নভেম্বর বঙ্কিম চন্দ্রের এক একর ৪৯ শতক জমি রেজিস্ট্রি করে নিয়েছে। তিনি এ বিষয়ে খুলনায় দুর্নীতি দমন কমিশনের শরণাপন্ন হলে তদন্ত শেষে দুদোক বাবলু গাজি খোকনসহ কয়েকজনকে আসামি করে শ্যামনগর থানায় মামলা করে। তিনি বলেন এরপরই বাবলু গাজি খোকন বঙ্কিম চন্দ্র ও তার ছেলেসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে সাতক্ষীরা যুগ্ম জেলা জজ আদালতে দেওয়ানি মামলা করে। অপরদিকে বঙ্কিম চন্দ্রও বাদি হয়ে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ১৪৫ ধারায় মামলা করেন।

সংবাদ সম্মেলনে বঙ্কিম চন্দ্র আরও বলেন বাবলু গাজির করা মামলা ১/১৮ ও তার করা ১৪৫ ধারার মামলার রায় তার অনুকূলে আসায় এবং চলমান দুদোকের মামলায় ফেঁসে যাবার ভয়ে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন বাবলু গাজি খোকন। তিনি এবার উদ্দেশ্যমূলকভাবে বঙ্কিম পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে নতুন করে মিথ্যাচার করে মামলা দিয়েছেন। আর এই মামলায় হয়রানি করার জন্য বঙ্কিম চন্দ্রের ছেলে সরকারি কলেজ শিক্ষক নিশীথ বরণ বৈদ্য ও বারডেমের ডাক্তার অভিজিৎ বৈদ্য, ব্যবসায়ী ঠাকুর চরণ বৈদ্য ও আকরাম হোসেনের বিরুদ্ধে সম্প্রতি চাঁদাবাজি, বোমাবাজি , লুটপাট ও ভাংচুরের এক কল্পিত অভিযোগে দ্রুত বিচার আইনে বাবলু গাজি খোকন মামলা করেছেন। তবে পুলিশ তদন্ত করে এ ধরনের অভিযোগ সম্পূর্ন মিথ্যা ও বানোয়াট বলে প্রমাণ পেয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে বঙ্কিম চন্দ্র বৈদ্য বলেন তার দুই ছেলের একজন বরিশালে ও অপরজন ঢাকায় সরকারি চাকুরীরত। তাদেরকে ফাঁসিয়ে আমাদের সবাইকে হয়রানি করে জাল জালিয়াতির মাধ্যমে সাড়ে চার বিঘা জমি দখলের পাঁয়তারা করছেন সাতক্ষীরার হোটেল ব্যবসায়ী বাবলু গাজি খোকন। এই মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের মাধ্যমে বঙ্কিম চন্দ্র বৈদ্য ও আদ্যশক্তি চিংড়ি প্রকল্পের ব্যবসায়ীরা যাতে শান্তিপূর্ণভাবে ঘের ব্যবসা করতে পারেন সেজন্য জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের সহযোগিতা কামনা করেছেন বঙ্কিম চন্দ্র বৈদ্য ।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন বাবলু গাজি খোকন একজন ধুরন্ধর প্রতারক। তিনি দক্ষিণ উপকূলের নিরীহ মানুষকে হয়রানি করতে শুরু করেছেন। গ্রামবাসী তার আচরণে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন। বঙ্কিম চন্দ্র এর প্রতিকার দাবি করেন।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)