টেকনাফে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ রোহিঙ্গা নারীসহ ৩ ইয়াবা কারবারি নিহত
কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলায় কথিত বন্দুকযুদ্ধে রোহিঙ্গা নারীসহ তিনজন নিহত হয়েছেন বলে পুলিশ ও বিজিবির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দাবি, নিহতরা ইয়াবা কারবারি।
আজ রোববার ভোররাতে উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের মৌলভীবাজার এবং দমদমিয়া নাফ নদের ওমরখাল এলাকায় এ দুটি ‘বন্দুকযুদ্ধের’ ঘটনা ঘটে বলে টেকনাফ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাশ গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।
নিহতরা হলেন উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের আলী আকবরপাড়া এলাকার মাহামুদুর রহমান (২৮), হোয়াইক্যং ইউনিয়নের নয়াপাড়া এলাকার মোহাম্মদ আফছার (২৫) এবং লেদা রোহিঙ্গা ক্যাম্পের সি/৬ ব্লকের বাসিন্দা বদরুল ইসলামের স্ত্রী রুমানা আকতার (২০)।
ওসি প্রদীপ কুমার দাশ দাবি করেছেন, একদল কারবারি ইয়াবা বিক্রি করছে—এমন খবর পেয়ে পুলিশ উপজেলার মৌলভীবাজার এলাকায় অভিযানে যায়। এ সময় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে ইয়াবা কারবারিরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি করে। আত্মরক্ষার্থে পুলিশও গুলি ছোড়ে। এভাবে প্রায় ৫০টি গুলি চালায়।
‘বেশ কিছুক্ষণ গুলি চালানোর পর ইয়াবা কারবারিরা পিছু হটলে ঘটনাস্থলে দুজনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। তাদের টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক কক্সবাজার সদর হাসপাতালে স্থানান্তর করেন। কক্সবাজার সদর হাসপাতালের চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন। মরদেহ দুটি হাসপাতাল মর্গে রয়েছে।’
এ ঘটনায় পুলিশের একজন উপপরিদর্শকসহ (এসআই) তিন সদস্য আহত হয়েছেন বলে দাবি করেছেন ওসি প্রদীপ। তাঁরা হলেন এসআই দীপক বিশ্বাস, সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) আমির হোসেন ও কনস্টেবল শরিফুল ইসলাম। তাঁদের টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে মাদকসহ পাঁচ-ছয়টি করে মামলা রয়েছে। এ ঘটনায়ও মামলা হয়েছে।
ওসি আরো দাবি করেন, ঘটনাস্থল থেকে ছয়টি এলজি বন্দুক, ১০ হাজার পিস ইয়াবা ও ১৮টি তাজা কার্তুজ উদ্ধার করে পুলিশ।
অন্যদিকে, টেকনাফ ২ নম্বর বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক শরীফুল ইসলাম জোমাদ্দার দাবি করেছেন, ভোররাতে উপজেলার দমদমিয়া ওমরখাল নাফ নদ এলাকায় টহলে বের হন বিজিবির সদস্যরা। এ সময় কিছু লোক মিয়ানমার থেকে ওমরখাল পয়েন্ট দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করছিল। বিজিবি তাদের থামার জন্য সংকেত দেয়। তারা বিজিবির সংকেত অমান্য করে উল্টো টহলদলের ওপর অতর্কিতে গুলি করে এবং ধারালো অস্ত্র নিয়ে আক্রমণ করে।
‘এতে বিজিবি টহলদলের একজন সদস্য আহত হন। এ সময় আত্মরক্ষার্থে টহলদল কৌশলগত অবস্থান নিয়ে পাল্টা গুলি করে। উভয়পক্ষের পক্ষের মধ্যে প্রায় ১০-১৫ মিনিট গোলাগুলি চলে। চোরাকারবারিরা তখন গুলি করতে করতে খালের কিনারা দিয়ে পালিয়ে যায়।’
বিজিবির কর্মকর্তা আরো দাবি করেন, ‘পরবর্তী সময়ে বিজিবি একজন নারীকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় নৌকার মধ্যে পড়ে থাকতে দেখে। পরে স্থানীয়রা তাকে রোহিঙ্গা বলে শনাক্ত করে। এ সময় ১০ হাজার পিস ইয়াবা ও তিনটি লোহার ধারালো কিরিচ উদ্ধার করা হয়।’
মৃতদেহটি টেকনাফ থানার মাধ্যমে ময়নাতদন্ত করার জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে বলে জানান বিজিবির ওই কর্মকর্তা।