অগ্নিনির্বাপক যে প্রযুক্তিগুলো নেই বাংলাদেশে

বিশ্বে মানবসৃষ্ট দুর্ঘটনাগুলোর অন্যতম একটি অগ্নিকাণ্ড। বিশ্ব যত বেশি আধুনিক হয়েছে, এই দুর্ঘটনার প্রকৃতি ও ধ্বংসাত্মক প্রভাব তত বেড়েছে। আর সেই সঙ্গে আবিষ্কৃত হয়েছে আগুন নিয়ন্ত্রণের নানা প্রযুক্তি। আগ্নিকাণ্ড নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য বাংলাদেশে নেই এমন তিনটি কার্যকর প্রযুক্তির কথা তুলে ধরা হল এই আয়োজনে-

ফায়ার হাইড্রেন্ট

প্রায় দুইশ বছর আগে আবিষকৃত হয় আগুন নিয়ন্ত্রণে ব্যবস্থায় একটি কার্যকরি পদ্ধতি, নাম ‘ফায়ার হাইড্রেন্ট’। এটি হচ্ছে পানির একটি সংযোগ উৎস, যা পানির প্রধান উৎসের সঙ্গে যুক্ত থাকে। যে কোনো জরুরী প্রয়োজনে এই উৎস থেকে পানি সরবরাহ করা যায়। তবে এর সবচেয়ে বড় সুবিধা হচ্ছে- এর সঙ্গে লম্বা পাইপ যুক্ত করে ইচ্ছেমত যে কোনো দূরত্বে পানি সরবরাহ করা যায়।

এটি মাটির উপরে কিংবা নীচে দুই পদ্ধতিতেই স্থাপন করা যায়। এটি দুই ধরণের হয়ে থাকে। একটি হল ‘ওয়েট ব্যারেল ফায়ার হাইড্রেন্ট’। এতে অবিরত পানি সরবরাহ থাকে। অন্যটি হল ‘ড্রাই ব্যারেল ফায়ার হাইড্রেন্ট’। এ ধরণের পাম্পে বৈদ্যুতিক যন্ত্র বা ঢাকনি দ্বারা পানি সরবরাহ বন্ধ রাখা হয়। প্রয়োজনের সময় ঢাকনি সরিয়ে দিলে বা বৈদ্যুতিক যন্ত্র চালু করলে পানি সরবরাহ হয়।

ফায়ার বল

আগুন নেভানোর জন্য ব্যবহৃত একটি অত্যাধুনিক প্রযুক্তির নাম ফায়ার বল। কোথাও বড় কোনো অগ্নি দূর্ঘটনা ঘটলে এই বল ব্যবহার করে আগুন নিয়ন্ত্রণ করা হয়। এতে আগুন দ্রুত নিয়ন্ত্রণ করা যায় এবং ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি প্রতিরোধ করা সম্ভব হয়। অগ্নিনির্বাপক বল ওজনে হালকা এবং সহজে বহনযোগ্য। ফলে এর ব্যবহার খুবই সহজ। এটা খুব দ্রুত আগুন নিভাতে সক্ষম। এটি পানি-নিরোধক প্লাস্টিকের খোসা দ্বারা তৈরি একটি বল যার ভেতর, “নন-টক্সিক মনো-অ্যামোনিয়াম ফসফেট” নামে এক ধরনের রাসায়নিক পাউডার দ্বারা পরিপূর্ণ। এই পাউডার পরিবেশের কোনো ক্ষতি করে না। এই বলে কোনো প্রকার সুইচ নেই। কারণ এটি একটি স্বয়ংক্রিয় বল। তাই এটি ব্যবহারে কোনো বিশেষ দক্ষতার প্রয়োজন নেই। সাধারণত এর ওজন ১.৩ কেজি হয়ে থাকে। তাই নারী, শিশু, বৃদ্ধ যেকোনো ব্যক্তি এটি ব্যবহার করতে পারেন।

বিস্ফোরক

জ্বালানি থেকে বিচ্ছিন্ন হলেই আগুন নিভে যায়। কিন্তু তার জন্য চাই বিশাল পরিমাণ ‘কমপ্রেসড এয়ার’ বা ঘনীভূত বাতাস। সহজেই এমন ‘কমপ্রেসড এয়ার’ তৈরি করতে নাইট্রোগ্লিসারিনের মতো বিস্ফোরক কাজে লাগানো যেতে পারে। সিডনি শহরে নিউ সাউথ ওয়েলস বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্র্যাহ্যাম ডইগ বিষয়টি নিয়ে গবেষণা করেছেন। তিনি মনে করেন, ভবিষ্যতে হেলিকপ্টার থেকে এমন বিস্ফোরক আগুনের উপর ফেলে দেয়া যাবে। তবে শুধু তাতেই কাজ হবে না। এক সার্বিক কৌশলের অংশ হিসেবে এই প্রক্রিয়া কাজে লাগাতে হবে। তাছাড়া ব্যাপক আকারে দাবানল দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিলে এই বিস্ফোরক আগুনের প্রসার সাময়িকভাবে বন্ধ করতে পারবে।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)