বলিউডে ঘনিষ্ঠ দৃশ্যে সাবধান

পর্দায় অভিনেতা-অভিনেত্রীরা কতটা কাছে যাচ্ছেন, কতটা ভালোবাসছেন, এখন থেকে সেসব পর্যবেক্ষণ করা হবে। এ কাজের জন্য বলিউডে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে ‘ইন্টিমেসি সুপারভাইজার’ বা ঘনিষ্ঠতা তত্ত্বাবধায়ক। #মি টু আন্দোলনের জের ধরে হলিউডের মতো বলিউডেও সৃষ্টি হলো এমন পদ।

কী করবেন ‘ইন্টিমেসি সুপারভাইজার’? সিনেমার শুটিংয়ে চুম্বন ও আলিঙ্গন থেকে শুরু করে ঘনিষ্ঠ সব দৃশ্য ধারণের সময় অভিনেত্রীরা অস্বস্তি বোধ করেন কি না, পরিচালকের কোনো আচরণে অপমান বোধ করেন কি না, সেসব নজরদারি করবেন এই সুপারভাইজার।

বলিউডের #মি টু আন্দোলনে উঠে এসেছে অনেক প্রযোজক, পরিচালক এবং অভিনেতার নাম। #মি টু ঠেকাতে তাই এবার নতুন উদ্যোগ নিলেন বাঙালি পরিচালক রামকমল মুখোপাধ্যায়। নারীশিল্পীদের সুরক্ষায় তিনি এবং প্রযোজক অরিত্র দাস যৌথভাবে তাঁদের ছবির শুটিংয়ে ‘ইন্টিমেসি সুপারভাইজার’ নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। যাতে কোনো অভিনেতা, পরিচালক বা প্রযোজক অভিনেত্রীর সঙ্গে অস্বস্তিকর আচরণ করতে না পারেন। চাইলেই যাতে কোনো অভিনেত্রী কারও বিরুদ্ধে অকারণ অভিযোগ তুলতে না পারেন।

নতুন ছবির কাজ শুরু করতে যাচ্ছেন পরিচালক রামকমল মুখোপাধ্যায়। প্রয়াত পরিচালক ঋতুপর্ণ ঘোষের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনে তিনি নির্মাণ করছেন ‘সিজনস গ্রিটিংস’ নামের ছবিটি। এ ছবির মাধ্যমে অনেক দিন পর অভিনয়ে ফিরছেন সেলিনা জেটলি। ছবিতে অভিনেতা আজহার খানের সঙ্গে কয়েকটি ঘনিষ্ঠ দৃশ্যে দেখা যাবে সেলিনাকে। মূলত এই নায়িকাই পরিচালক রামকমলকে ‘ইন্টিমেসি সুপারভাইজার’ নিয়োগের প্রস্তাব দিয়েছেন।

রামকমল বলেন, ‘সিনেমায় আমরা জীবন্ত মানুষের প্রেম দেখাতে চাই। যৌনতার দৃশ্য দেখাতে সূর্যমুখী আর মৌমাছি দেখানোর দিন চলে গেছে। কিছুদিন আগে একটা নিবন্ধে পড়ছিলাম, হলিউডের শুটিং সেটে ইন্টিমেসি সুপারভাইজার নামে একজন থাকেন। সেলিনার সঙ্গে কথা হচ্ছিল, সে-ই আমাকে বলল, বিষয়টি নিয়ে কী করা যায়। এমনকি সেলিনার স্বামী পিটার হাগের সঙ্গেও বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছি। কারণ আজহারের সঙ্গে তাঁর বেশ কিছু ঘনিষ্ঠ দৃশ্য রয়েছে। তিনিও সেলিনাকে সাহায্য করছেন।’

সেলিনা বলেন, ‘ছবিতে বিয়ের পরের কিছু দৃশ্য রয়েছে এবং মাতৃত্বের দৃশ্যও আছে। ভাবলাম পরিচালককে বলি একজন তত্ত্বাবধায়ক রাখা হোক। শুনেই তিনি রাজি হয়ে গেলেন।’

শুটিংয়ে কিছু নারীকর্মী থাকবেন। ঘরের ভেতর কাউকেই ঢুকতে দেওয়া হবে না। রামকমল বলেন, ‘দৃশ্য বুঝিয়ে দেওয়ার পর আমি মনিটরের সামনে বসে থাকব। অভিনেতাকে নির্দেশনা দেব ফোনে।’

বলিউডে যৌন হয়রানি প্রসঙ্গে প্রথম মুখ খুলেছিলেন অভিনেত্রী তনুশ্রী দত্ত। দশ বছর আগে শুটিং সেটে তাঁর সঙ্গে নোংরা আচরণ করেছিলেন অভিনেতা নানা পাটেকার। তার পর দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়ে এই আন্দোলন। একের পর এক মুখ খুলতে শুরু করেন অভিনেত্রীরা।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)