সাতক্ষীরা পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়মের তদন্ত সম্পন্ন
সাতক্ষীরা পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়মের তদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। গত মঙ্গলবার সকালে সাতক্ষীরা জেলা শিক্ষা অফিসারের দুইজন প্রতিনিধি তদন্ত সম্পন্ন করেছেন বলে নিশ্চিত করেছে জেলা শিক্ষা অফিসার আব্দুল্লাহ আল মামুন। শনিবার সংশ্লিষ্ট দপ্তরে তদন্ত প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে বলেও জানান তিনি।
এদিকে, সাতক্ষীরা পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম তুলে ধরে অভিযোগ করায় অভিযোগ কারী মোঃ নুরুজ্জামানকে মঙ্গলবার ৪ ঘন্টা আটকে রাখে প্রতিষ্ঠানের পরিচালক মো. আলাউদ্দিন ফারুকী প্রিন্স ও স্কুলের মঞ্জুরী কমিটির সদস্যরা। এঘটনার সত্যতা স্বীকার করে নুরুজ্জামান বলেন,আমার জীবনের কোন নিরাপত্তা নেই।
সূত্র জানায়, মোঃ নুরুজ্জামান নামের এক ব্যক্তি গত ০৬ডিসেম্বর ২০১৮ তারিখে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড যশোরের ওয়েব সাইটে অনলাইনে একটি অভিযোগ করেন যার আইডি নম্বর-১৬৫৪৫। অভিযোগের প্রেক্ষিতে ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ তারিখে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড যশোরের বিদ্যালয় পরিদর্শক ড.বিশ্বাস শাহিন আহম্মদ স্বাক্ষরিত এক পত্রে পত্র প্রাপ্তির ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত করে তদন্ত প্রতিবেদন তার দপ্তরে প্রেরণের জন্য বিশেষ ভাবে অনুরোধ করেন জেলা শিক্ষা অফিসার সাতক্ষীরার কাছে, সেই সাথে প্রয়োজনীয় কার্যাথে অনুলিপি প্রদান করেন জেলা প্রশাসক সাতক্ষীরা, সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাতক্ষীরা, সাতক্ষীরা সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের কাছে ।
একই সাথে অনুলিপিতে তাগিদ দেওয়া হয় সিস্টেম এনালিস্ট মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড যশোরকে পত্রটি বোর্ডের ওয়েব সাইটে প্রকাশ করার জন্য সিনিয়র এবং উক্ত অনুলিপিতে উল্লেখ করা হয় তদন্ত কাজে সহযোগীতা করতে সাতক্ষীরা পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজের প্রধান শিক্ষককে এবং অভিযোগকারী মোঃ নুরুজ্জামানকে। যার প্রেক্ষিতে গত মঙ্গলবার সাতক্ষীরা জেলা শিক্ষা অফিসার আব্দুল্লাহ আল মামুন’র দুই জন প্রতিনিধি তদন্তে যান।
এই তদন্তে আসার কথা জানতে পেরে বাদী মোঃ নুরুজ্জামানকে সকাল থেকে বন্দী করে রাখে সাতক্ষীরা পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজের পরিচালক মো. আলাউদ্দিন ফারুকী প্রিন্স, তার দুই ভাই হোস্টেল সুপার বাহাউদ্দিন ও প্রধান শিক্ষক কামাল উদ্দিন, তাদের পিতা স্কুল পরিচালনা মঞ্জুরি কমিটির সভাপতি আব্দুল খালেক তরফদার।
এদিকে জেলা জাপার এক নেতা বিরুদ্ধে পাবলিক স্কুলের অবৈধকাজে সহযোগীতা করার অভিযোগ রয়েছে। তিনি জেলা শহরের মানুষের কাছে একজন প্রিয় ব্যক্তি হলেও পাবলিক স্কুলকে আখড়ে রেখে বিভিন্ন অনৈতিক সহযোগীতা করার কারণে মানুষ বর্তমানে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে বলে জানা গেছে। যার ফলশ্রুতি গত কয়েকটি নির্বাচনে লক্ষ করা গেছে।
এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী মোঃ নুরুজ্জামানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাকে ৪ঘন্টা আটকে রাখে যাতে আমি কিছু বলতে না পারি। তার পরেও আমি তদন্ত কর্মকর্তাদের পরে গোপনে আমার কথাগুলো বলেছি। দেখি কি হয়। দু’এক দিনের মধ্যে আমি আমার ঘর মালিক কবির সাহেব কে বলে আইনের আশ্রয় নেব।
এব্যাপারে সাতক্ষীরা পাবলিক স্কুল’র প্রধান শিক্ষক কামাল উদ্দিন জানান, একটি তদন্ত হয়েছে। কাউকে আটকে রাখার ঘটনা মিথ্যা। আমরা নিয়ম মেনেই স্কুল পরিচালনা করছি।
এ ব্যাপারে তদন্তকারী কর্মকর্তা সাতক্ষীরা জেলা শিক্ষা অফিসার আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, তদন্ত সম্পন্ন হয়েছে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে তদন্ত প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে। তদন্তে অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উঠে এসেছে আমরা তদন্তে যেটা পেয়েছি সেটাই সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠিয়েছি। এখনই সবকিছু বলা যাচ্ছে না। তবে অভিযোগ কারীকে আটকে রাখার ঘটনা যদি ঘটে সেটা আমার কোন বিষয়না। আমার তদন্তের বিষয় শিক্ষা সংক্রান্ত। অভিযোগে সত্য মিথ্যা উভয়ই আছে,বিস্তারিত কিছু দিন পরে বলতে পারবো।