মংলা বন্দরে পণ্য খালাসে তিন গুণ বাড়তি খরচ

বাগেরহাট:মংলা বন্দরের মূল চ্যানেলে ১০ মিটার ড্রাফটের বড় কোনো বিদেশি জাহাজ প্রবেশ করতে পারছে না। মূলত বন্দরের আউটারবার এলাকায় নাব্য সংকটের কারণেই এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। ফলে বড় জাহাজগুলোকে ফেয়ারওয়েতে নোঙর করে ছোট জাহাজে করে পণ্য খালাস করতে হচ্ছে। তাতে বন্দর ব্যবহারকারীদের স্বাভাবিকের তুলনায় অন্তত ৩ গুণ বেশি খরচ গুনতে হচ্ছে। মংলা বন্দর সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।

সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, বর্তমানে মংলা বন্দর চ্যানেলের গভীরতা সাড়ে ৭ মিটারে নেমে এসেছে। ফলে তার চেয়ে বেশি ড্রাফটের কোনো জাহাজই বন্দরে ভিড়তে পারছে না। ফেয়ারওয়েতে নোঙর করে পণ্য খালাসের কারণে আমদানিকারকদের খরচ বেড়ে যাচ্ছে। ফলে দেশীয় বাজার তার প্রভাব পড়ছে। বন্দর ব্যবহারকারীরা বন্দর চ্যানেলের প্রবেশমুখ ও আউটারবার এলাকায় ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে নাব্যতা বৃদ্ধির দাবি জানিয়েছেন। তাদের মতে, এমনটি করা হলে বেশি ড্রাফটের জাহাজ বন্দরে ভিড়তে পারবে। তাতে বন্দরসংশ্লিষ্টরা লাভবান হওয়ার পাশাপাশি বন্দরে জাহাজের আগমনও বাড়বে।

সূত্র জানায়, গত জানুয়ারির মাঝামাঝিতে ব্রাজিল থেকে ৪০ হাজার টন ভোজ্যতেল নিয়ে বিদেশী জাহাজ এমটি এমআর পেগাসাস মংলা বন্দরের ফেয়ারওয়েতে আসে। আউটারবার এলাকায় নাব্যতা কম থাকায় ১০ মিটার ড্রাফটের জাহাজটি বন্দরের মূল চ্যানেলে প্রবেশ করতে পারেনি। ফলে বাধ্য হয়েই জাহাজটিকে ফেয়ারওয়েতে রেখে পণ্য খালাস করতে হয়েছে। তাতে ৩ গুণ বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয়েছে। জাহাজটি বন্দর চ্যানেলের আউটারবার হয়ে হাড়বাড়িয়া অথবা চ্যানেলের অন্য কোনো বয়া পর্যন্ত আনা গেলেও খরচ অনেক কম হতো। এমন পরিস্থিতির কারণে শিপিং এজেন্টসহ বন্দর ব্যবহারকারীরা দীর্ঘদিন ধরে আউটারবার এলাকায় ড্রেজিংয়ের দাবি জানিয়ে আসছে। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। বরং বছরের পর বছর ধরে বড় জাহাজগুলো ফেয়ারওয়েতে রেখেই পণ্য খালাস করতে হচ্ছে। আউটারবারের (ফেয়ারওয়ে থেকে হিরণ পয়েন্ট পর্যন্ত) ৭-৮ নটিক্যাল মাইল নৌপথ খনন করা হলেই ওই সমস্যার সমাধান হবে এবং বন্দরে বেশি ড্রাফটের বড় বড় জাহাজ ভিড়তে পারবে। বর্তমানে বড় জাহাজগুলো বন্দরে ভিড়তে না পারায় ব্যবসায়ীদের অনেকেই এখন মংলাবন্দর ব্যবহারে অনীহা প্রকাশ করছে।

এদিকে এ প্রসঙ্গে মংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান কমডোর একেএম ফারুক হাসান জানান, মংলাবন্দরের উন্নয়নে বর্তমানে ১০টি প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। তার মধ্যে চ্যানেলের ফুড সাইলো এলাকায় ড্রেজিং করা হবে। সেটি বাস্তবায়িত হলে বন্দর চ্যানেলে ১০ মিটার ড্রাফটের জাহাজ প্রবেশ করতে পারবে।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)