‘ভালোবাসা দিবস’এর গল্পটি জানেন তো?

আজ ভ্যালেন্টাইন ডে বা ভালোবাসা দিবস। এ উপলক্ষে বিপনী থেকে রেস্তোরাঁ, সর্বত্রই প্রস্তুতি তুঙ্গে। কাছের মানুষটির সঙ্গে খানাপিনা, ঘোরাঘুরি আর বেলা শেষে পার্কে গিয়ে বসার প্ল্যান এই সব তো করেই থাকেন। কিন্তু এই দিনটি কেন পালন করছেন জানেন কি? আসলে এর পেছনে আছে একটা গল্প-

খ্রিষ্টান ধর্মযাজক ও চিকিৎসক সেন্ট ভ্যালেন্টাইন ইতালির রোম নগরীতে সম্রাট দ্বিতীয় ক্লডিয়াসের সময়ে ধর্ম প্রচার করতেন। আর ঠিক সেই সময়েই রোমে সম্রাটের তরফে ধর্ম প্রচারে বিধি-নিষেধ আরোপ করা হয়। স্বাভাবিকভাবেই ভ্যালেন্টাইনের উপর ধর্ম প্রচারের অভিযোগ আনা হয়। এছাড়াও আরো একটি গল্প প্রচলিত রয়েছে যে, দ্বিতীয় ক্লডিয়াস নাকি মনে করতেন, রোমান সেনাবাহিনীকে আরো বেশি শক্তিশালী করে তোলা যাবে। যদি সৈন্যদের অবিবাহিত রাখা যায়। তাই তিনি সৈন্যদের বিবাহের ওপরেও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন। কিন্তু এই ধর্মযাজক ভ্যালেন্টাইন গোপনে সেনাদের মধ্যে বিয়ে দেয়ার কাজটি চালিয়ে যেতে থাকেন।

এই দুই অভিযোগেই তাকে দ্বিতীয় ক্লডিয়াসের সামনে হাজির করা হলে তিনি নাকি সম্রাটকেও খ্রিষ্ট ধর্মে দীক্ষিত করার চেষ্টা করেন। এত বড় ধৃষ্টতার অপরাধে তাকে দন্ড হিসেবে কারাবাসে পাঠানো হয়। এরপর ওই ধর্মযাজক অলৌকিক চিকিৎসায় এক কারারক্ষীর অন্ধ মেয়েকে দৃষ্টিদান করেন। এর পর ওই মেয়েটির পরিবারের ৪৬ জন সদস্য একত্রে খ্রিষ্টান ধর্ম গ্রহণ করেন।

ধর্মযাজক ভ্যালেন্টাইনের এই জনপ্রিয়তা ও ধর্মপ্রচারের কারণে দ্বিতীয় ক্লডিয়াসের আদেশে কারারুদ্ধ ভ্যালেন্টাইনকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়। ইতিমধ্যেই ওই কারারক্ষীর মেয়ের সঙ্গে ভ্যালেন্টাইনের প্রণয়ের সম্পর্ক তৈরি হয়ে যায়। আর তাই, মৃত্যুদণ্ডের আগের দিন রাতে জেলে বসে একজন প্রেমিক তার প্রণয়ীর উদ্দেশ্যে লিখলেন একটি চিঠি। সেই চিঠির শেষে ছিল ‘তোমার ভ্যালেন্টাইন’–এই কথাটি।

আজ থেকে প্রায় দেড় হাজারেরও বেশি সময় আগে এভাবেই প্রথম ‘ভ্যালেন্টাইন কার্ড’টি লেখা হয়েছিল। ‘তোমার ভ্যালেন্টাইন’ এই কথাটি আজও একই অভিব্যক্তি বজায় রেখেই আপনি যখন কার্ডে লেখেন, তখন এই দেড় হাজার বছরের ইতিহাস সাক্ষী রয়ে যায়।

এমন হাজারো কার্ড ভালোবাসা প্রকাশ করতে দেয়া হয়ে থাকে আজ ওই বিশেষ দিনটিতে, যেদিন সেন্ট ভ্যালেন্টাইনকে মৃত্যুদন্ড দেয়া হয়েছিলো- ১৪ই ফেব্রুয়ারি, ভ্যালন্টাইন’স ডে।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)