জমি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে প্রতিপক্ষের ৫০টি ফলজ গাছ কাটলেন ভাদড়ার মিন্টু

শহর প্রতিনিধি:জমির মালিকানা নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে সাতক্ষীরা সদরের ভাদড়া গ্রামে সাবেক এক ব্যাংক কর্মকর্তার প্রায় ৫০টি ফলজ গাছ কেটে সাবাড় করার অভিযোগ উঠেছে একই এলাকার জুলফিকার আলী মিন্টুর বিরুদ্ধে। শুক্রবার(২৮ ফেব্রুয়ারি) সকালে স্থানীয় ও অজ্ঞাতনামা কয়েকজন ব্যক্তির সহায়তায় আহসান হাবিব নামের সাবেক ওই ব্যাংক কর্মকর্তার ফলজ বাগান কেটে তছনছ করেন মিন্টু।অগ্রনী ব্যাংকের সাবেক কর্মকর্তা ভুক্তভোগী জমির মালিক আহসান হাবিব জানান, ‘এই জমিটি আমার পৈর্তৃক সম্পত্তি। ৫০ বছর যাবত আমি নিজস্ব মালিকানাধীন জমি ভোগদখল করে আসছিলাম। জমিটির নামপত্তন করা হয়েছে দীর্ঘদিন আগে। সেখানে ৫০টির মত ফলজ গাছ ছিলো। হঠাত কিছুদিন পূর্বে আমাদের শরীক মৃত জিয়াদ আলী সরদারের ছেলে জুলফিকার আলী মিন্টু জমির একটি অংশ দাবি করে। কিন্তু জমির দলিল, মাঠপর্চা ও মূল কাগজপত্র সহ সবই আমার কাছে রয়েছে। এমনকি ২০২৪-২৫ সাল পর্যন্ত খাজনা পরিশোধ করা রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে মিন্টু হাইকোর্টে মামলা করে। পরে সেখান থেকে একটি রায় হলেও পরে রায়টির ‘স্টে’ অর্ডার দেয় হাইকোর্ট। এছাড়াও একটি মামলায় আমি রীট করি। এই রীট নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত কোনভাবেই এই জমিতে হাত দেয়া যাবে না বলে রীটে উল্লেখ রয়েছে। সুতরাং আইনগতভাবে আমিই জমির মালিক। শুক্রবার সকালে আমার অনুপস্থিতির সুযোগে মিন্টু, মেহেদী হাসান শুভ, গোলাম সরোয়ার, শাহীন আলম, আব্দুর রউফ, জাহাঙ্গীর আলম, আলমগীর হোসেন, হাসানুজ্জামানসহ অজ্ঞাতনামা বেশ কয়েকজন দেশীয় ধারালো অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে এসে আমার জমিটি দাবি করে এবং ফলন্ত আমগাছ, লিচু গাছ, লেবু গাছ, কলাগাছ, ডালিম, পেয়ারা ও মাল্টা গাছ সহ প্রায় ৫০টি ফলজ গাছ কেটে তছনছ করে চলে যায়। যাবার সময় তারা বাজারে হৈহুল্লোড় করে এবং চিৎকার করে আগামীকাল ওই জমিতে বিল্ডিং বানাবে বলে প্রচার করে’।
আহসান হাবিব আরও জানান, ‘জমি নিয়ে বচসার জেরে কিছুদিন পূর্বে মিন্টু আমাকে হেনস্থা করে। এটা নিয়ে সাতক্ষীরা আদালতে ১০৭/১১৭ ধারায় একটি মামলা করি। পরে অভিযুক্ত মিন্টু মুচলেকা দিয়ে ছাড়া পায়’।
স্থানীয় জাহাঙ্গীর, হাবিব ও ইব্রাহিম হোসেনসহ অনেকেই জানান, ‘জমি নিয়ে বিরোধ থাকতেই পারে। সেটি আলোচনা বা আইনগতভাবে সমাধান করা যায়। কিন্তু তাই বলে ফলজ গাছ কেটে ফেলাটা কোনভাবেই মেনে নেওয়া যায় না, এর অবশ্যই শাস্তি হওয়া উচিত। বিশেষ করে গাছ কাটা একটি অন্যায় কাজ কারন একেকটি গাছ বড় করতে কয়েকবছর করে সময় লাগে’।
এদিকে গাছ কেটে ফেলার বিষয়টি সাংবাদিকদের কাছে স্বীকার করেছেন অভিযুক্ত জুলফিকার আলী মিন্টু। তিনি বলেন, ‘আমি মামলা করেছিলাম। মামলায় সাতক্ষীরা আদালত থেকে আমার পক্ষে রায় দেয়া হয়। পরে হাইকোর্ট থেকেও জমিটি আমার- এই মর্মে রায় দেয়া হয়। সুতরাং জমিটা যেহেতু আমার, সেখানে আমি যা ইচ্ছা করতে পারি। এজন্য আমি সেখানে থাকা গাছগুলো কেটে দিয়েছি। কারন আমি সেখানে বাড়ি করতে চাই’।
ফলজ গাছ কেটে ক্ষয়ক্ষতি করায় সদর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী আহসান হাবিব।
এ ব্যাপারে সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক শফিকুল ইসলাম জানান, অভিযোগ পাবার পরপরই তদন্ত করার জন্য ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। তদন্ত শেষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সাতক্ষীরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) মো: শামিমুল হক পুরো বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)