সেন্টমার্টিনের শ্রমজীবীদের জীবন-সংগ্রামের রূঢ় বাস্তবতার প্রতিচ্ছবি হচ্ছেন নবী হোসেন
মুনীর চৌধুরী সোহেলঃ সেন্টমার্টিনে বসবাসরত শ্রমজীবীদের জীবন-জীবিকার প্রধান উৎস হচ্ছে দেশী-বিদেশী পর্যটক ও দর্শণার্থীদের ভ্রমণ। এছাড়া স্থানীয়দের আয়ের আরেকটি মাধ্যম হচ্ছে সাগরে মাছ সংগ্রহ করে বিক্রি করা। সর্বজনবিদিত যে, এই পেশার মানুষদের বলা হয় ধীবর বা জেলে। এই জেলে সম্প্রদায় সারা বছর মাছ ধরে প্রায় সচ্ছল জীবনযাপন করছেন। অথচ জেলে সম্প্রদায় ব্যতীত অন্য শ্রমজীবী মানুষদের প্রায় সারা বছরই মানবেতর জীবনযাপন করতে হয়। কারণ সেন্টমার্টিনে দেশি-বিদেশি পর্যটক ও দর্শণার্থীদের ভ্রমণের জন্য ৪ মাস থাকে জনকোলাহলপূর্ণ। এই ভ্রমণপিপাসু মানুষেরা সেন্টমার্টিনের ছেঁড়া দ্বীপ, মিনি সুন্দরবন, দারুচিনি দ্বীপ, সুটকিপল্লী, সুইসাইড পয়েন্ট, পশ্চিম সৈকত, দারুচিনি বীচসহ বিভিন্ন দর্শণীয় স্থান ভ্রমণ করেন। এই ভ্রমণের একমাত্র যানবাহন হচ্ছে অটো বা ইজিবাইক। পর্যটকদের অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত সেন্টমার্টিনে ভ্রমণের একমাত্র সময়। পর্যটকদের ভ্রমণের এই মৌসুমে নবী হোসেনের প্রতিদিন প্রায় ২০০০ থেকে ২২০০ টাকা আয় হয়। অবশিষ্ট ৮ মাসে তাদের খুবই যৎসামান্য আয় হয়। উদাহরণস্বরূপ, প্রতিদিন ২০০ থেকে ৩০০ টাকা আয় হয়, যা’ দিয়ে ইজিবাইকের ব্যাটারী চার্জসহ অন্যান্য খরচ ওঠে না। অটো চালকের এই সময়ের গচ্ছিতনআয় দিয়ে ১২ মাস চলতে হয়। জীবনের এই কঠিন বাস্তবতাকে মেনে নিয়েই ছুটে চলেছেন মোঃ নবী হোসনের মতো জীবনসংগ্রামী শ্রমজীবী মানুষেরা
মোঃ নবী হোসেনের সাথে আমার পরিচয় হয় প্রবাল দ্বীপ নামেখ্যাত সেন্টমার্টিনে ভ্রমণের সময়। পূর্ব থেকে আমার সাথে নবীর কোনো পরিচয় ছিলো না। আমার কনিষ্ঠ ভাই আবু সায়েম চৌধুরী শাকিলের মাধ্যমে তার সাথে আমার পরিচয় হয়। উল্লপখ্য, গত ২০২১ সালে আমার কনিষ্ঠ ভাই ইউটিউবার আবু সায়েম চৌধুরী শাকিল সেন্টমার্টিনে ভ্রমণে যায়। আমার ছোটো ভাইয়ের ভ্রমণসংক্রান্ত একটি ইউটিউব চ্যানেল আছে। সায়েম পেশাগত কারণে সেন্টমার্টিনে ভ্রমণে যায়। সেখানে সায়েম তার নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেল
‘সায়েম ওয়াল্ডে’ ‘অবকাশ’ নামক একটি হোটেল ও পাঁচফোড়ন নামক একটি রেস্টুরেন্টের ভিডিও আপলোড করে পোস্ট করার জন্য যায়। অবকাশ ও পাঁচফোড়নের সত্তাধিকারী মোঃ জুয়েল এর সাথে ইজিবাইক চালক মোঃ নবী হোসেনের সাথে পূর্ব থেকেই সম্পর্ক আছে। এই সর্ম্পকের সূত্র ধরেই আবু সায়েম চৌধুরী শাকিলের সাথে তার পরিচয় ঘটে। সায়েম সেন্টমার্টিনের বিভিন্ন র্দশণীয় স্থানে ভ্রমণের সময় নবী হোসেনের পেশাগত, ব্যক্তিগত ও পারিবারিক জীবন কঠিন বাস্তবতা সম্পর্কে জানতে পারে। জীবন-সংগ্রামের নিষ্ঠুর বলি এই অটো চালকের আতিথেয়তায় মুগ্ধ হয়ে যায় সায়েম ওয়াল্ডের সত্তাধিকারী আবু সায়েম। শুধু আবু সায়েমই নয়, আতিথেয়তায় আমি এবং আমার পরিবারও তার প্রতি ভীষণ মুগ্ধ।
মুগ্ধতা ছড়ানো এই মানুষটির বাবার নাম প্রয়াত মোঃ ছব্বির হোসেন (৩৫) এবং মাতার নাম সকিনা খাতুন (৫০)। বাবা ছব্বির হোসেনের পেশা ছিলো ধীবর বা জেলে। তিনি ১৯৯৯ সালে সাগরে মাছ ধরতে গিয়ে অন্য একটি মাছ ধরা ট্রলারের সাথে সংঘর্ষে মৃত্যুবরণ করেন।এসময় মোঃ নবী হোসেনের বয়স ছিলো ২মাস। পিতার আকষ্মিক মৃত্যুর কারণে পরিবারটি অর্থনৈতিকভাবে মহাসঙ্কটে পড়ে। নবী হোসেনের বয়স যখন ৫বছরে পদার্পণ করে তখন তার মাতা টেকনাফ উপজেলার এক বাসিন্দাকে বিবাহ করেন। নবী নিরুপায় হয়ে তার দাদা বাড়ীতে আশ্রয় নেন। দাদা বাড়ী থেকে নবীর স্বাদহীন জীবন হয়ে ওঠে তপ্ত কড়াইয়ের মতো।
নবীর জীবন-সংগ্রাম শুরু হয় ২০০৯ সাল থকে, তখন তার বয়স ১০ বছর। হোটেল রোজমেরী নামক একটি আবাসিক হোটেলে তিনি ওয়েটার হিসেবে কাজ করেছেন। ভ্রমণের মৌসুম অনুযায়ী বছরে ৪ মাস হোটেলে কাজ পেতেন। হোটেল কর্তৃপক্ষ তাকে প্রতি মাসে ২ হাজার টাকা পারিশ্রমিক দিতেন। এখানে তিনি ৪ বছর কাজ করেছেন। পরবর্তীতে তিনি ২০১৫ সালে ব্লু সী ইস্টার্ণ রিসোর্টে ওয়েটার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। হোটেল কর্তৃৃপক্ষ কাজে নিযুক্ত করার সময় তাকে ৩০০০ টাকা বেতন দিতেন। দ্বিতীয় বছরে ৪০০০, তৃতীয় বছরে ৫০০০, চতুর্থ বছরে ৬০০০, ৫ম বছরে ৭০০০ এবং ৭ম বছরে পদার্পণ করলে ১০,০০০ টাকা বেতন পেয়েছেন। ব্লু সী রিসোর্টে তিনি ৭ বছর কাজ করেছেন। এই হোটেলে প্রথম ৪ বছর ওয়েটার এবং পরবর্তী ৩ বছর ওয়েটার কাম মার্কেটিং ম্যানেজার হিসেবে চাকরী করেছেন। এসময় তিনি পোলাও, বিরিয়ানী, গ্রীল, চাইনিজসহ সকল ধরণের রন্ধনশিল্পের কাজ রপ্ত করেন। তিনি ২০২১ সালে গচ্ছিত র্অথ দিয়ে একটি ইজিবাইক ক্রয় করেন। ইজিবাইক চালিয়ে যে আয় হয় তা হোটেল মালিকের প্রদেয় বেতনের চেয়ে বেশি। এই আয়ে তিনি প্রথম দিকে সচ্ছল জীবনযাপন করেছেন। তিনি ২০২৪ সালের অক্টোবর মাসে এক আত্মীয়ের নিকট থেকে সুদে ৫০ হাজার টাকা ঋণ নেন। কারণ ইজিবাইকের ৪টা ব্যাটারী ক্রয়ের জন্য তার এই টাকা ঋণ নেওয়ার প্রয়োজন ছিলো। ঋণের বিপরীতে সুদ ছিলো ৮ হাজার টাকা। তার অবশিষ্ট ঋণ আছে ২৫০০০ টাকা। ঋণের পরিপূর্ণ টাকা এখনো পরিশোধ করতে পারেন নি।ঋণের বোঝা কাঁধে নিলেও নবী হোসেনের আনন্দের অন্ত ছিলো না। কারণ সুদে আসলে ঋণ পরিশোধ করতে পারলে তিনি ঋণমুক্ত হবেন। কিন্তু তার ভাবনা হলো গুড়েবালী। ভাবলো এক, হলো আর এক। ২০২২ সালের জুন-জুলাই মাসে প্রাকৃতিক দুর্যোগে তার ঘর-বাড়ীর চালা উড়ে যায়। শুধু তারই নয়, এ অঞ্চলের প্রায় ৫০০ থেকে ৬০০ পরিবারের ঘর-বাড়ী ভেঙ্গে যায়। তখন দিশাহীন এই অটোচালক আমার কনিষ্ঠ ভাই আবু সায়েম চৌধুরীর কাছে তার প্রাকৃতিক দুর্বিপাকে আশ্রয়হীনের করুণ কাহিনী বর্ণনা করেন। নবীর ঘরে চালা নেই, অনিরাপদে নবী ও তার পরিবার ঘুমাবে কী করে এই ভাবনায় তাড়িত হয়ে আবু সায়েম তাকে ৫০০০ টাকা অর্থ সহযোগিতা করে। দু’ বছর যেতে না যেতে ২০২৪ সালের জুন-জুলাই মাসে নবী হোসেনের সন্তানসম্ভাবা স্ত্রীর সিজারিয়ান অপারেশন হয়। স্ত্রীর এই সিজারিয়ান অপারেশন সেন্টমার্টিন ২০ শয্যা হাসপাতাল এবং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স টেকনাফ এর যৌথ সহযোগিতায় সম্পন্ন হয়। তবে এই অপারেশন করতে যেয়ে তাকে প্রায় ৬০ হাজার টাকা ব্যয় করতে হয়। এইভাবে ঋণের জট নবী হোসেনের জীবনে ঘোর অন্ধকারের অমানশিায় পরিণত হয়।
ঋণের জালে আটকে পড়া এই মানুষটি ঋণ থেকে মুক্ত হওয়ার মানসে প্রতিনিয়ত ছুটে চলেছেন ইজিবাইক নিয়ে। তার এখন স্বপ্ন ৪ আসনবিশিষ্ট ইজিবাইকটি বড়ো করা। ইজিবাইকটি বড়ো করতে পারলে ৬ জন যাত্রী ও লাগেজ বেশি নিতে পারবেন। কিন্তু তার সংগ্রহে কোনো অর্থ নেই যে, তার স্বপ্নের ইজিবাইকটি বড়ো করবেন। ইজিবাইকটি বড় করার ইচ্ছা প্রকাশ করে আমার ছোট ভাই সায়েমকে অবহিত করলে তাকে ১০,০০০ টাকা সহযোগতিা করে। অর্থনৈতিক সহযোগিতা পেলেও তিনি ঐ টাকা দিয়ে ইজিবাইক বড় ও সংস্কার করতে পারেন নি। কারণ সিজারিয়ান অপারেশনের জন্য মাত্রাতিরিক্ত টাকা ব্যয় হওয়ার কারণে সহযোগিতার ঐ অর্থ খরচ করতে বাধ্য হয়। এভাবে টাকা খরচ হওয়ায় খারাপ লাগলেও তিনি অনুতপ্ত নন। কারণ তার কাছে মনে হয়েছে যে, গাড়ী বড় করার চয়েে মানুষরে জান বাঁচানো ফরজ। টাকা পুনরায় সংগ্রহ করতে পারলে অটো বড় করা যাবে। তিনি এখনো গাড়ী বড় করার স্বপ্ন নিয়ে অটো চালিয়ে যাচ্ছেন। অপেক্ষায় আছেন, যে কোন ভাবেই হোক ইজিবাইকটি বড়ো করবেনই।
যন্ত্রণাকাতর জীবনের সাথে লড়াই করলেও নবী হোসেনের অন্তরের মধ্যে সীমাহীন কষ্ট আর জীবনযাত্রার তীব্র সংকটের যে ব্যকুলতা আমি তার চোখে-মুখে ফুটে উঠতে দেখিনি।
সভাব-সুলভ হাসি যেন নবী হোসেনের জীবন চলার পাথেয়। হাসিমাখা নবীর সাথে আমাদের পরিচয় হয় ২০২৫ সালরে ৯ জানুয়ারী সকালে। তখন তিনি জানতে পারেন আমি সায়েম এর মেজো ভাই। তখন তিনি বললেন, সায়েম ভাই এর সাথে আমার দারুণ সম্পর্ক। কিভাবে সায়েম এর সাথে পরিচয় হয়, সম্পর্ক তৈরি হয় তার রিল ছাড়তে থাকেন এই তরুণ। এই কথা বলতে বলতে তিনি আমাদের ইজিবাইকে বসতে বলেন। আমরা ইজিবাইকে বসলাম। ইজিবাইক ছেঁড়া দ্বীপের দিকে ছুটে চলছে।ভোর সাড়ে ৫টার দিকে আমরা দক্ষিণ পাড়ায় এসে পৗেঁছাই। দক্ষিণপাড়ায় নেমে দেখি কয়েকটি খাবারের স্টল রয়েছে।এর মধ্যে দু’একটি স্টল খোলা আছে। দোকানিরা কফি, চা বানাচ্ছেন, খাবার বিক্রি করছেন। এরই মধ্যে নবীর হাকডাক শুরু হয়ে গেছে, ভাবী, ভাবী চা খাবেন? স্যার মালাই চা খাবেন? ভাইয়া বিস্কুট খাবে? ভোর তো, কফি বা মালাই চা খেলে ভালো লাগব। পরিশেষে আমি এবং আমার স্ত্রী সীমা আক্তার কফির পরিবর্তে মালাই চা খেলাম। আমাদের একমাত্র পুত্র মুস্তাফা ইরফান চৌধুরী বিস্কুট খেলো। আমাদের চা ও বিস্কুটের দাম হলো ১৪০ টাকা। এই সমুদয় টাকা আমাদের অজান্তে দোকানিকে পরিশোধ করে দিয়ে যায়। আমরা তখনো জানতে পারি নি যে, ১৪০ টাকা নবী পরিশোধ করে দিয়ে গেছে। ছেঁড়া দ্বীপ থেকে ফেরার পথে নবীর উত্তেজনা বেড়ে যায়, বেড়ে যায় ভাবী-ভাবী সম্বোধন করার । ভাবী, আপনি আমাদের দেশে এসেছেন, কি খাবেন? আপনাকে আমি আজ তরমুজ খাওয়াবো। নবী তরমুজের ছোটো দোকানে নিয়ে গেলো. তরমুজ কেটে খাওয়ালেন। কিন্তু সে তরমুজ পানসে। এ কথা শোনার পর তিনি খুব মন খারাপ করলেন। নতুন করে আবার তরমুজ খাওয়ানোর জন্য অস্থির হয়ে পড়লেন। আমাদের প্রবল আপত্তি সত্তেও নবী দ্বিতীয় বারের মতো তরমুজ ক্রয় করে খাওয়ালেন। এই আপ্যায়নেও তিনি শান্তি পাচ্ছেন না। আমার স্ত্রী সীমা নবীকে বললো, সেন্টমার্টিনে সারি-সারি নারকেল গাছ অথচ গাছে কোনো নারকেল নেই। তবে এটাও সত্য খুলনা, বাগেরহাটেও নারকেল পাওয়া যাচ্ছে না। একথা শোনার পর নবীর আতিথেয়তা আরো বেড়ে গেলো। নবী তার অটো থামিয়ে বললেন, ভাবী একটু অপেক্ষা করেন। এই তো আমার শ্বশুর বাড়ী, দেখি বাড়ীতে নারকেল পাওয়া যায় কি না? আমরা শত নিষেধ করলেও নবী তার শ্বশুর বাড়ীতে চলে গেলো। দু’ এক মিনিটের মধ্যে নবী ফিরে এসে জানালেন, তার অক্ষমতার কথা। এজন্য ক্ষমা প্রার্থনা করলেন।
কারণ তার দেশে আমাদের নারকেল আপ্যায়ন করতে ব্যর্থ হওয়ার জন্য। নবী একজন সাধারণ ইজিবাইক চালক , তার সাথে আমাদের যাত্রীর সম্পর্ক।
ভাড়া পরিশোধ করলেই অন্য যাত্রী বহনের জন্য ছুটে চলা যার পেশা। নিস্প্রাণ এই পৃথিবীতে এটাই তো হওয়া উচিত।
কিশোর বয়স থেকে নবীর আয় রোজগার হলো ধ্যানজ্ঞান। এই ভাবনা ব্যতীত অন্য কোনো ভাবনা তাকে ভাবায় না। আমরা যেদিন সেন্টমার্টিনকে বিদায় জানাচ্ছি সেদিন আমাদের জাহাজ ছাড়ার সময় ৩টা। নবী দুপুর ১.৩০টায় অবকাশ রিসোর্টে এসে হাজির। আমাদের লাগেজ ইজিবাইকে যত্নের সাথে রাখলেন। তিনি নিরাপদ ও সুন্দরভাবে অটো চালাচ্ছেন। জাহাজের কাছে এলে আমরা ইজিবাইক থেকে নেমে গেলাম।আমাদের লাগেজগুলো বহন করে নিয়ে ছুটে গেলো জাহাজ পানে।আমাদের লাগেজগুলো জাহাজে রেখে এবং আমাদের বিদায় জানিয়ে ছুটে গেলো যাত্রীর সন্ধানে।জীবন-সংগ্রামে বেঁচে থাকার এক অনন্ত যাত্রায়। আমরা তার উপযুক্ত ভাড়া পরিশোধ করে কক্সবাজারের উদ্দেশ্যে রওনা হলাম।
লেখক পরিচিতিঃ মুনীর চৌধুরী সোহেল, গণসংহতি আন্দোলন, খুলনা জেলা কমিটি।