আশাশুনির দয়ারঘাট-জেলেখালী টেকসই বেড়ী বাঁধ নির্মান কাজ মেয়াদ উত্তীর্ণ হলেও শেষ হয়নি
জি এম মুজিবুর রহমানঃ আশাশুনি উপজেলা সদরের দয়ারঘাট-জেলেখালী টেকসই বেড়ী বাঁধ নির্মান কাজ মেয়াদ উত্তীর্ণের পর এক দফা সময় বাড়ানো হলেও নির্ধারিত সময় কাজ সম্পন্ন হচ্ছেনা বলে জানাগেছে। ফলে এলাকার মানুষের দুর্দশা, দুর্গতি ও বাঁধ ভেঙ্গে ঘরবাড়ি-সম্পদ হারানোর দুর্বিসহ ভীতি বেড়েই চলেছে।
জাইকার সহায়তায় ডিজিস্টার ম্যানেজমেন্ট ইনহান্সমেন্ট প্রজেক্ট কম্পোনেন্ট-১ বিডব্লিউডিবি পার্ট এর আওতায় ২১ কোটি ৯২ লক্ষ ৯০ হাজার ১৫০ টাকা ব্যয় বরাদ্দে এনটিএমএলজেভি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কাজটি পায়। কাজ বাস্তবায়ন করছে বিআইএসসিওএন লিঃ চট্টগ্রাম। ১৫ জানুয়ারী ২০২৩ সালে কাজ শুরু করা হয়। মেয়াদ ছিল ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত। ১২৭০ মিটার বাঁধে ১২৭০ মিটার মাটির কাজ ও ব্লক প্লেসিং এর কাজ করার কথা। যার মধ্যে ৪০০ মিটার ব্লক ও ৪০০ মিটার ব্যাগ ডাম্পিং, গাইড ওয়াল ১২৭০ মিটারে ২৮ হাজার পিচ (৩৫ ইঞ্চি: ৩৫ ইঞ্চি: ৩৫ ইঞ্চি) ও জিও ব্যাগ ২৭০০০ পিচ। কিন্তু নির্দ্ধারিত সময়ে কাজের অগ্রগতি হতাশাজনক ছিল। তখন এক দফা সময় বাড়িয়ে নেওয়া হয়। বর্ধিত সময়ের মেয়াদ শেষ হবে আগামী ২৫ জুন। তারপরও কাজ শেষ হবে না। এখন পর্যন্ত কাজের অগ্রগতির হিসাবে দেখা যায়, ১২৭০ মিটার কাজের মধ্যে মাটির কাজ হয়েছে ৬০%, ব্লক ডাম্পিং ৯৮ হাজার ১৯৩ পিচের মধ্যে ৩৪ হাজার ৫৯৩ পিচ, বাকী রয়েছে ৬৭ হাজার ২৬৭ পিচ। ব্লক নদীতে ফেলান হয়েছে ২১ হাজার ৫৯৩ পিচ, প্লেসিং ব্লক ৯১ হাজার ৮৭০ পিচ, তৈরি হয়েছে মাত্র ১২ হাজার ৫১৬ পিচ। বাকী রয়েছে ৭৯ হাজার ২৫৭ পিচ। দায়িত্বরত ঠিকাদারের ম্যানেজার আবু নাসিম জানান, মাটির কাজ শেষ না হওয়ায় প্লেসিং ব্লক ফেলান যাচ্ছেনা। মাটির কাজ শেষ হলে প্লেসিং ব্লক ফেলান হবে। জিও ব্যাগ ডাম্পিং ৪২ হাজার ৯৫৫ তৈরির কথা, যার মধ্যে ৩৩ হাজার ৭৬০ পিচ নদীতে ডাম্পিং হয়েছে। বাকী ১২ হাজার ১৯৫ পিচের মধ্যে ৪০০০ পিচ রেডি আছে। আর জিও ব্যাগ প্লেসিং বাকী আছে সবগুলো। কাজের অগ্রগতির ক্ষেত্রে নানাবিধ সমস্যা বাধা হয়ে দাড়িয়েছিল। যার কারনে কাজে ব্যাঘাত ঘটেছে এবং নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ সম্পন্ন করা সম্ভব হয়নি। তারা জানান, এখানে ব্লক তৈরির জন্য পর্যাপ্ত জমির অভাব প্রকট হয়ে দেখা দিয়েছে। তারপর গত বছর প্রচুর বৃ্ষ্টিপাতের ফলে ব্লক তৈরির জায়গা নিমজ্জিত হয়ে ছিল। ফলে কাজ করা সম্ভব হয়নি। রাজনৈতিক অস্থিরতার কারনে ৭ মাস কাজ বন্ধ ছিল। এছাড়া স্থানীয় নিমাই মন্ডল ও দুখীরাম মন্ডল মাটি ফেলতে দেয়নি। তাছাড়া রাস্তার দুরাবস্থার কারনে পাথর, সিমেন্ট, বালি পরিবহন করা কঠিন হয়ে যায়। এস্কেভেটর মেশিন পথে আনা নেওয়া বাধা প্রদান করা হয়। কাজ শেষ করতে বিলম্ব হওয়ায় এলাকায় নানা ভাবে বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান সমস্যায় ভুগছেন। দয়ারঘাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠ ব্লক তৈরিতে ব্যবহার করায় ছাত্রছাত্রীদের বিড়ম্বনা দীর্ঘায়িত হচ্ছে। বিদ্যালয়ের নতুন ভবন নির্মান কাজ বাধা গ্রস্থ হচ্ছে। স্থানীয় মাছ বাজার, দোকান পাট, হ্যাচারীসহ নানা প্রতিষ্ঠান, ভবন, বসতবাড়ির লোকজন সমস্যা জর্জরিত হচ্ছে। দ্রুত কাজ শেষ করতে বাধা দূর করা ও কাজের গতি বাড়ানোর ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট সকলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন