২০ বছর পর ইউএনও খান মোঃ নুরুল আমিনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ ও দেড়কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়ে মন্ত্রণালয়ে অভিযোগ

রঘুনাথ খাঁ ঃ সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগর ইউনিয়নের গড়াইমহল জলমহল ইজারা নেওয়ার পর বেআইনিভাবে ইজারা বাতিল করে ইজারার দেড়কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দাবি ও আদালতের তিন মাসের কারাদÐের আদেশ গোপন রেখে এক আওয়ামী লীগ নেতা আত্মীয়ের প্রভাব খাটিয়ে পদোন্নতি পেয়ে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে সহকারি সচীব হিসেবে এলপিআরে যাওয়া ২০০৪ সালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত খান মোঃ নুরুল আমিনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানানো হয়েছে। আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগর ইউনিয়নের কুড়িকাহনিয়া গ্রামের খলিলুর রহমানের ছেলে নূরে আলম ছিদ্দিকী ও বিছট গ্রামের আবু তালেব মাড়লের ছেলে মাদ্রাসা শিক্ষক আব্দুর রশিদ গত বৃহষ্পতিবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচীব বরাবর এ আবেদন জানান।
নূরে আলম ছিদ্দিকী ও আব্দুর রশিদ তাদের আবেদনপত্রে উল্লেখ করেছেন যে, প্রতাপনগরের গড়াইমহল জলমহলটি তারা ২০০৪ সালের ২৭ অক্টোবর ইজারা নেন। তৎকালিন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খান মোঃ নুরুল আমিনের সহযোগিতায় স্থানীয় একটি মহল ওই জলমহলের ইজারা বাতিলের চেষ্টা করলে আব্দুর রশিদ বাদি হয়ে আশাশুনি সহকারি জজ আদালতে দেঃ ১০৯/২০০৫ নং মামলা করেন। আদালত বাদি পক্ষে নিষেধাজ্ঞা দেন। ২০০৬ সালের ১০ মে ১০ মে স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা শুনানীর সময় অসৎ উদ্দেশ্যে পরিকল্পনা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুরুল আমিনের পক্ষে রাষ্ট্রপক্ষ সময়ের আবেদন জানান। এ সূযোগকে কাজে লাগিয়ে ওই দিনই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুরুল আমিন ইজারা বাতিল করে দেন। পরদিন স্থানীয় জনগন ওই জলমহলের প্রায় ৫০ লক্ষাধিক টাকার মাছ লুটপাট করে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার ইজারা বাতিলের অদেশের বিরুদ্ধে আব্দুর রশিদ মহামান্য হাইকোর্টে ৫২১১/২০০৬ নং রিট পিটিশন দাখিল করেন। ২০০৬ সালের ১০ মে হাইকোর্ট ইজারা বাতিলের আদেশের উপর স্থগিতাদেশ দেন। আশাশুনি সহকারি জজ আদালতের নিষেধাজ্ঞা ভঙ্গ করে ইজারা বাতিলের ঘটনায় ওই বছরের ১৭ মে আব্দুর রশিদ হাইকোর্টে ভায়েলেশন মামলা (মিস-১০/২০০৬) দায়ের করেন। আদালত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খান মোঃ নুরুল আমিনকে তিন মাসের কারাদÐ দেন।
আবেদনপত্রে আরো উল্লেখ করা হয় যে, তিন মাসের কারাদÐের খবর পেয়ে নুরুল আমিন আরো বেপরোয়া হয়ে পড়েন। তাদেরকে মামলা প্রত্যাহার করানোর জন্য প্রতাপনগর ইউনিয়ন ভ‚মি কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলীকে দিয়ে নূরে আলম ছিদ্দিকী ও আব্দুর রশিদের নামে ২০০৬ সালের ৫ ডিসেম্বর আদালতে সিআর-৪৪৫/২০০৬ নং মিথ্যা চাঁদাবাজির মামলা করানো হয়। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছ থেকে সুবিধাভোগী এসএম আজিজুল হককে দিয়ে ২০০৬ সালের ২৬ ফেব্রæয়ারি ওই দুই ইজারা গ্রহীতার নামে মিথ্যা জিআর-২৯/২০০৭ নং ও বিসিক লবন প্রকল্পের ম্যানেজার আব্দুস সালামকে দিয়ে ২০০৭ সালের ৩ এপ্রিল জিআর-৬০/২০০৭ নং মামলা করিয়ে বাড়ি ছাড়া করা হয়। আদালতে সাক্ষ্য দেওয়ার সময় মামলার বাদিরা চাকুরি বাঁচাতে নূরে আলম ছিদ্দিকী ও আব্দুর রশিদের নামে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নূরুল আমিনের কথামত এসব মামলা করতে বাধ্য হয়েছিলেন বলে জবানবন্দি দেন। কারাদÐের আদেশ গোপন করে প্রভাব খাটিয়ে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে নূরুল আমিন সহকারি সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করাকালিন কয়েক মাস আগে এলপিআরে যান। তার প্রভাবের কারণে এলপিআরে না যাওয়া এবং আওয়ামী লীগ সরকারের পতন না হওয়া পর্যন্ত নুরুল আমিনের বিরুদ্ধে কোথাও অভিযোগ করতে সাহস পাননি বলে অভিযোগপত্রে নূরে আলম ছিদ্দিকী ও আব্দুর রশিদ উল্লেখ করেন। আবেদনপত্রে ৫০ লাখ টাকার মাছ লুটপাট, জলমহলের ইজারাসহ দেড় কোটি টাকার ক্ষতিপূরণ দাবি করা হয়।
এ ব্যাপারে সদস্য এলপিআরে যাওয়া প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের সহকারি (ডেপুটি )সচিব খান মোঃ নুরুল আমিনের ০১৭১২-৬৮০০২০ নং মুঠোফোনে শনিবার সন্ধা ৬টা ২২ মিনিটে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তিনি তা রিসিভ করেননি।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)