ফাইনালে মাঠে নামছে খুলনা-চিটাগং

স্পোর্টস ডেস্ক:গেলবারের চ্যাম্পিয়ন ফরচুন বরিশাল এবারও ফাইনাল নিশ্চিত করেছে। টানা দ্বিতীয় শিরোপার হাতছোঁয়া দূরত্বে অবস্থান করছে দলটি। শিরোপার লড়াইয়ে তাদের বিপক্ষে কোন দল মাঠে নামবে, সেটি নির্ধারণের জন্য আজ মাঠে নামছে খুলনা টাইগার্স-চিটাগং কিংস।মিরপুরের শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারের এই ম্যাচ শুরু হবে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায়। মাঠে নামার আগে দুটি দলই নিজেদের মতো করে পরিকল্পনা করেছে প্রতিপক্ষকে আটকাতে।এবারের বিপিএলে সবচেয়ে বেশি সমালোচনা হয়েছে ক্রিকেটারদের পারিশ্রমিক নিয়ে। দুর্বার রাজশাহীর পাশাপাশি সেই সমালোচনায় নাম ছিল চিটাগংয়েরও। তবে দলটি মাঠের লড়াইয়ে পিছিয়ে ছিল না। টেবিলের দুইয়ে থেকে প্রথম কোয়ালিফায়ার নিশ্চিত করেছে কিংস বাহিনী। কিন্তু সেই ম্যাচে বরিশালের বিপক্ষে সুবিধা করতে পারেনি। এবার ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে আরো একটি সুযোগ এসেছে।প্রতিপক্ষ দল খুলনাও পিছিয়ে নেই। গ্রুপ পর্বের দুই ম্যাচ বাকি থাকতেই মেহেদী হাসান মিরাজের দল নকআউট ম্যাচ হিসেবে খেলে আসছে। তাদের সমীকরণটাই ছিল তেমন, কোনো ম্যাচে হারলেই বাদ পড়তে হবে। আজই তেমনই সমীকরণ, জিতলে ফাইনাল নিশ্চিত হবে আর হারলে বাদ পড়তে হবে।মাঠে নামার আগে চিটাগংয়ের অধিনায়ক মোহাম্মদ মিঠুন বলেছেন, ‘আলাদা করে কোনো পরিকল্পনা করছি না। দলের যে শক্তির জায়গা রয়েছে, সেটি ধরেই এগিয়ে যেতে চাই। আর প্রতি দলেরই আলাদা আলাদা কৌশল রয়েছে, আমাদেরও এমন কৌশল রয়েছে। সেগুলো নিয়েই এগিয়ে যেতে চাই। খুলনার বিপক্ষে আমরা দুটি ম্যাচ খেলে এসেছি, তাদের শক্তি সম্পর্কেও আমাদের ধারণা রয়েছে। নতুন কিছু খেলোয়াড় এসেছে, সেটি নিয়েও পরিকল্পনা রয়েছে আমাদের। এই স্বাভাবিক বিষয়গুলো ধরেই এগিয়ে যাব।’
নতুন কোনো বিদেশি ক্রিকেটার দলে যোগ দেবেন কি না, এমন প্রশ্নে মিঠুন বলেছেন, ‘না, এখনো পর্যন্ত এমন কোনো পরিকল্পনা নেই। আমরা ঐটাতে বিশ্বাসী না যে, রাতারাতি একজন খেলোয়াড়কে আনলাম আর ডেলিভার করল। দলের সঙ্গে, কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার একটা ব্যাপার থাকে। আর আমাদের দলের বিদেশিরা খারাপ করেনি, ভালোই করেছে তারা। সুতরাং তাদের ওপর আমরা বিশ্বাস রাখতেই পারি। হায়দার আলীর ইনজুরি আমাদের কিছুটা ভোগাবে। তবু টি-টোয়েন্টি একটা দিনের খেলা, এই দিনে যে ভালো করবে সেই এগিয়ে থাকবে।এদিকে প্রথম কোয়ালিফায়ার খেলার আগে গুঞ্জন উঠেছিল, টাকা না পেলে মাঠে নামবে না চিটাগং। সেই বিষয়ে মিঠুন বলেছেন, ‘এই ধরনের কোনো তথ্য আমার কাছে নেই। আমি টিম হোটেলেই আছি। এই ধরনের কোনো কথা শুনিনি কোনো খেলোয়াড়ের কাছে যে, টাকার জন্য খেলতে যাচ্ছে না।’ একাদশ বিপিএলে অবশ্য বিষয়টি নতুন নয়। টাকা না পেয়ে রাজশাহীর বিদেশি ক্রিকেটাররা মাঠে আসেননি। এমনকি পুরো দলই অনুশীলন বয়কটের মতো ঘটনাও ঘটিয়েছিল।এদিকে চিটাগংয়ের মালিকপক্ষ নিয়ে মিঠুন বলেছেন, ‘আমি বলব না, আমাদের সবকিছু ভালোভাবে চলছে। একটা মানুষ যখন ১২-১৩ বছর কিংবা ১৫ বছর পর আসে একটা সংগ্রামী জীবন শেষে, তাকে কিছুটা ছাড় দেওয়া উচিত। তিনি মানুষ হিসেবে অসাধারণ। ক্রিকেটারদের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক, আন্তরিকভাবে মেশেন। টুকিটাকি ভুল সবারই থাকে, সব ফ্রাঞ্চাইজিরই আছে। কোনো কিছুকে বড় করে হাইলাইটস করার কিছু নেই। আমরা সমস্যার ঊর্ধ্বে কেউই না। সমস্যা থাকলে সেটার সমাধানও আছে।এদিকে টালমাটাল পরিস্থিতিতেও শান্তভাবে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে চিটাগং। দলটির দেশি খেলোয়াড়দের ওপর বেশি ভরসা রাখছেন মিঠুন। বিশেষ করে শামীম পাটোয়ারিকে নিয়ে বেশ আত্মবিশ্বাসী তিনি। মিঠুন বলেন, ‘বাংলাদেশিদের মধ্যে শামীম আলাদা। সাধারণত বাংলাদেশিরা যেভাবে ব্যাটিং করে, সেটি থেকে শামীমের ব্যাটিং ব্যতিক্রম। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে এই ধরনের শট দেখতে মজা লাগে। আমি নিজেই শামীমের একজন বড় ভক্ত। সে ফিল্ডিংয়েও অসাধারণ। আশা করব সে এভাবেই জ্বলে উঠবে।খুলনাও দেশি ক্রিকেটারদের নিয়ে মূল পরিকল্পনা সাজিয়েছে। গতকাল খুলনার ব্যাটিং কোচ নাসিরউদ্দিন ফারুক সজিব বলেছেন, ‘যারা আসর জুড়ে পারফরম করে এসেছে, তাদের ওপরই ভরসা রাখা হচ্ছে। আর বিদেশিরা থাকবে বোনাস হিসেবে। মূল কাজটি করতে হবে স্থানীয় ক্রিকেটারদের, বিদেশিরা সেখানে এগিয়ে এলে কাজটি সহজ হবে।’ এদিকে খুলনা আগে থেকেই নকআউট ম্যাচের মধ্যে আছে বলে মিরাজদের ব্যাটিং কোচও মনে করিয়ে দিয়েছেন। যে প্রক্রিয়ায় তারা এগিয়ে চলেছেন, তারই ধারাবাহিকতা আজকের ম্যাচে দেখাতে চায় খুলনা।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)