আদালতের রায়ের ২৫ বছরেও রিসিভারের টাকা পায়নি পাইকগাছার চা বিক্রেতার পরিবার
পাইকগাছা প্রতিনিধি:
আদালতের রায়ের পরেও ২৫ বছর পেরিয়ে গেলেও রিসিভারের টাকা পায়নি পাইকগাছার চা বিক্রেতা রাজ্জাক গাজীর পরিবার। বিচারক-পেশকার বদলি হয় প্রতিকার হয় না! বছরের পর বছর ধরে ধার্য্যদিনে উকিল-মোহরারাদের গুনতে হয় ফিসের টাকা। নির্বাহী কোর্টের বারান্দায় আর যেতে মন চায়না। রিসিভারের টাকা না পেয়ে ক্ষোভে-দুঃখের কথা জানান ভুক্তভোগী অসহায় পরিবার। রাজ্জাক উপজেলার গদাইপুর ইউনিয়নের মঠবাটি গ্রামের সাহাজউদ্দীন এর ছেলে। পৌর কাঁচা বাজারের ছোট্ট একটি দোকানে চা- পান বিক্রি করে কোন রকমে জীবন যাপন করেন রাজ্জাক পরিবার।
জানাগেছে,দীর্ঘ বছর উচ্চ আদালতের রায়ের পরেও রাজ্জাকের পরিবার রিসিভারের টাকা থেকে বঞ্চিত রয়েছে। এর কারণ হিসেবে রাজ্জাক বলেন ,পাইকগাছা নির্বাহী কোর্টের এমআর-৬৮/৯২ মামলার মূল নথি পাওয়া যাচ্ছে না। যার ফলে লক্ষ-লক্ষ টাকা ব্যাংকে পড়ে আছে। এরই মধ্যে রিসিভারের মৃত্যুতে সাহাজউদ্দীন-রেয়াজউদ্দীন পরিবার টাকা তুলতে না পেরে আরো হতাশায় দিনগুনছে।
সূত্র বলছেন, উপজেলার হাউলী মৌজায় এসএ ১১১ খতিয়ানের ১,১০ একর জমির বিরোধে প্রতাপকাটির কেদার গাজী বাদি হয়ে গদাইপুরের মঠবাটির ধোনাই গাজীর দু’ছেলে সাহাজউদ্দীন-রেয়াজউদ্দীনের বিরুদ্ধে পাইকগাছা সহকারী জজ আদালতে দেওঃ২৫/৯৭ মামলা করলে তা খারিজ হয়। পরবর্তীতে কেদার গাজী এর বিরুদ্ধে জেলা জজ কোর্টে দেওঃ ২৪৭/৯৯ মামলা করলে আদালত তাও না মঞ্জুর করেন। অতপর তিনি মহামান্য হাইকোর্টে সিভিল রিভিশন ৪৩৯৭/০৭ মামলা করেন। হাইকোর্ট শুনানীন্তে রুলটি ডিসচার্জ করেন। তবে উচ্চ আদালতে মামলা চলমান থাকায় পাইকগাছা নির্বাহী কোর্টে কেদার গাজীর দায়ের করা এমআর-৬৮/৯২ মামলায় বিজ্ঞ বিচারক ন্যায় বিচারের স্বার্থে নালিশী জমি রাড়ুলী আর,কে,বি,কে কলেজিয়েট ইনস্টিউশনের সাবেক প্রধান শিক্ষক আব্দুল মান্নান সরদারকে রিসিভার নিয়োগ করেন।
কিন্তু এ জমি চিংড়ি ঘেরভুক্ত হওয়ায় হারির টাকা ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত বিগত ৮ বছরের রিসিভারের ১ লাখ ৩৩ হাজার ৩৩৩ টাকা ব্যাংকে জমা রাখা হয়।
এ বিষয়ে সাহাজউদ্দীন গাজী জানান,পরবর্তীত বছরগুলোতে ঘের মালিকরা হারির টাকা রিসিভার আব্দুল মান্নান সরদারের কাছে দিতেন। সব মিলিয়ে টাকার পরিমার প্রায় সাড়ে ৪ লক্ষ। তিনি আরো জানান,সব আদালতের রায় আমাদের পক্ষে হয়েছে। ৩ বছর জমির দখলসহ বর্তমান জরিপের রেকর্ডও আমাদের নামে। তার আক্ষেপ এত সব থাকার পরেও রিসিভারে টাকা তুলতে পারছি না।
এ বিষয়ে পাইকগাছা নির্বাহী আদালতের পেশকার দীপঙ্কর জানান, নির্বাহী আদালতে মূল নথি পাওয়া যাচ্ছে না । বহু খোজাখুজি করে একটি পার্ট নথি পাওয়া গেছে। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বা ইউএন’ও স্যার খুবই আন্তরিক পরবর্তী শুনানীতে সবকিছু সমাধান হয়ে যাবে এমন আশা করছি।