শ্যামনগর কেন্দ্রীয় দারুল উলুম কামিল মাদ্রাসা পরীক্ষা কেন্দ্রে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে নকল করার অভিযোগ

রঘুনাথ খাঁঃ সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগর কেন্দ্রীয় কামিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে ফাজিল প্রথম বর্ষের কয়েকজন ছাত্রের বিরুদ্ধে পরীক্ষা কেন্দ্রে শিক্ষকের সহায়তায় মোবাইল ফোনের মাধ্যমে নকল করার অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে অভিভাবকদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
সাতক্ষীরা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের ১৪ জানুয়ারী থেকে শুরু হয়েছে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় বর্ষের ফাজিল পরীক্ষা। কালিগঞ্জের নলতা আহ্ছানিয়া দারুল উলুম ফাজিল মাদ্রাসার পরীক্ষার কেন্দ্র নির্ধারণ করা হয় শ্যামনগর কেন্দ্রীয় কামিল মাদ্রাসায়। নলতা মাদ্রাসা থেকে প্রথম বর্ষে ২০ জন, দ্বিতীয় বর্ষে ১৬জন ও তৃতীয় বর্ষে ১৪জন পরীক্ষার্থী অংশ নেয়।নাম না প্রকাশ করার শর্তে নলতা আহ্ছানিয়া দারুল উলুম ফাজিল মাদ্রাসার কয়েকজন অভিভাবক জানান, শ্যামনগর কেন্দ্রীয় কামিল মাদ্রাসায় ১৪ জানুয়ারি পরীক্ষা শুরু হওয়ার কিছুক্ষণ পর ফাজিল প্রথম বর্ষের ছাত্র পরীক্ষার্থী মারুফ বিল্লাহ’র ফেইসবুক আউডি থেকে পরীক্ষার খাতার ছবি পোষ্ট দেওয়া হয়। বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে অভিভাবকদের মধ্যে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। বিষয়টি তারা শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছাঃ রণি খাতুন ছাড়াও শ্যামনগর কেন্দ্রীয় কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আবু হুজাইবা, কেন্দ্র সচীব পাতাখালি ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুল হান্নান, নলতা আহ্ছানিয়া দারুল উলুম ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা রমিজউদ্দিনকে অবহিত করেন। প্রথম দিনের পরীক্ষা শেষে মারুফ বিল্লাহকে জিজ্ঞাাসাবাদ শেষে তারা জানতে পারেন যে, ভাল ফলাফল করতে নলতা আহ্ছানিয়া দারুল উলুম ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা রমিজউদ্দিন শ্যামনগর কেন্দ্রীয় কামিল মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে কয়েকজন পরীক্ষার্থীকে প্রশ্নপত্রের উত্তর মোবাইল ফোনের মাধ্যমে পাঠিয়ে দেওয়ার জন্য চুক্তিবদ্ধ হন। এজন্য নকলের সুবিধাগ্রহণকারি ওইসব পরীক্ষার্থীদের মোবাইলসহ কেন্দ্রে ঢোকার ব্যবস্থা করা হয়। অনিয়ম ও দূর্ণীতি এড়াতে অতিরিক্ত সতর্কতা হিসেবে কালিগঞ্জের সাংবাদিক শফু, শিমুল ও শ্যামনগরের মোস্তফা কামালের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তোলেন নলতা ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা রমিজউদ্দিন। মারুফ বিল্লাহসহ কয়েকজনের পরীক্ষা কেন্দ্রে মোবাইল ফোন নিয়ে যাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করা গেলেও কর্তৃপক্ষ তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি।কালিগঞ্জের নলতা আহ্ছানিয়া দারুল উলুম ফাজিল মাদ্রাসার প্রথম বর্ষের পরীক্ষার্থী মারুফ বিল্লাহ’র সঙ্গে শুক্রবার বিকেলে কথা বলার চেষ্টা করলে তার মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
এ ব্যাপারে কালিগঞ্জের নলতা আহ্ছানিয়া দারুল উলুম ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা রমিজউদ্দিন তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করে শুক্রবার বিকেলে এ প্রতিবেদককে বলেন, তার প্রতিষ্ঠানের দীর্ঘদিনের একটি সুনাম রয়েছে। প্রথম দিন ১৪ জানুয়ারি তার প্রতিষ্ঠানের এক ছাত্রের বিরুদ্ধে মোবাইলে নকল সরবরাহের একটি ঘটনা তিনি লোক মুখে শুনেছিলেন। বর্তমানে পরীক্ষা চলাকালে প্রশাসনের কঠোর হস্তক্ষেপে পরীক্ষা কেন্দ্র নিয়ম অনুযায়ি চলছে।
এ ব্যাপারে শ্যামনগর কেন্দ্রীয় কামিল মাদ্রাসার কেন্দ্র সচীব পাতাখালি ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুল হান্নান জানান, এ প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ আবু হুজাইবার ছেলে পরীক্ষার্থী হওয়ায় তাকে হল সচীবের দায়িত্ব দেওয়া হয়নি। তাকেই দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে হল সচিব হিসেবে। প্রথম দিন নলতার এক ছাত্রের বিরুদ্ধে মোবাইল ফোনে নকল করার বিষয়টি নিয়ে কথা বলা হয় হয় নলতা আহ্ছানিয়া দারুল উলুম ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা রমিজউদ্দিনের সঙ্গে। তবে ওই ছাত্রের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ না করেই তাকে সতর্ক করা হয়। পরবর্তীতে পরীক্ষা কেন্দ্রে কোন অনিয়ম বা দূর্ণীতি পেলে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)