কেশবপুরে সাবেক এমএনএ সুবোধ মিত্রের আজ ১৮ মৃত্যুবার্ষিকী

এস আর সাঈদ:আজ ২০ জানুয়ারি মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ট সহচর ও সাবেক এমএনএ সুবোধ মিত্রের ১৮ তম মৃত্যুবার্ষিকী।সুবোধ মিত্র কেশবপুর উপজেলার বালিয়াডাঙ্গা গ্রামে ১৯২৮ সালের ১২ মার্চ জন্মেছিলেন। তিনি ১৯৪২ সালে বনগাঁ হাই স্কুলের ৭ম শ্রেণীতে পড়াকালীন ‘ভারত ছাড়’ আন্দোলনে বনগাঁয়ে ছাত্র মিছিলে নেতৃত্ব দিয়ে গিয়ে গ্রেফতার হন এবং একদিনের জন্য কারাবরণের শিকার হন। ১৯৪৫ সালে মাত্র ১৭ বছর বয়সে তিনি যশোর জেলা কমিউনিস্ট পার্টির জেলা কমিটিতে সর্বকনিষ্ঠ সদস্য হিসেবে রেড কার্ডপ্রাপ্ত সদস্য পদ লাভ করেন। ১৯৪৬ সালে বনগাঁ মহকুমা ফরোয়ার্ড ব্লকের প্রথম কংগ্রেসের কমিটি গঠিত হলে তিনি সে কমিটির সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। আওয়ামী মুসলীম লীগ থেকে আওয়ামী লীগ হওয়ার পর সুবোধ মিত্র দেশ ও জনগণের কল্যাণে আওয়ামী লীগে যোগাযোগ করেন। ১৯৫৮ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সফরে যশোরে আসলে সেখানে বঙ্গবন্ধুর সাথে কেশবপুরের সন্তান সুবোধ মিত্রের পরিচয় হয়। একই বছর আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলনে সুবোধ মিত্র এক দীর্ঘ বক্তব্য দিয়ে সকলের নজরে আসেন। এরপর থেকে তাকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। পাকিস্তান আমলের শেষ দিকে তিনি যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সম্পাদক পরবর্তীতে সহ সভাপতি পদে অধিষ্ঠিত হয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৬ দফা আন্দোলন শুরু হলে তিনি আন্দোলনে দেশের বিভিন্ন জনসভায় অংশগ্রহণ করেন।১৯৭০-এর নির্বাচনে সুবোধ মিত্র যশোর নির্বাচনী কেন্দ্র আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে মনোনীত হন এবং ৪৬ হাজার ভোটের ব্যবধানে এম.এন.এ নির্বাচিত হন। ড.কামাল হোসেনের নেতৃত্বে সংবিধান প্রণয়ন কমিটির সদস্য হিসেবে সুবোধ মিত্র উপস্থিত ছিলেন। কেশবপুরের এ রাজনৈতিক জগতের আদর্শ মানুষটির বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর আপামর জনসাধারণের প্রাণের কথা বক্তব্যের মাধ্যমে উপস্থাপন, জনগণের প্রতি ভালোবাসা দুঃখহীন মানুষের পাশে দাঁড়াবার বাসনা দলীয় কমান্ডের নির্দেশ ও আদেশ, সহনশীলতা একান্ত আনুগত্যতা বিনয়ী ব্যবহার ইত্যাদির কারণে অতি অল্প সময়ে তিনি হয়েছিলেন বঙ্গবন্ধুর একান্ত বিশ্বাসী ও হূদয়ের মানুষ হয়ে উঠে ছিলেন। সে কারণে ঐতিহাসিক ৭ মার্চ তৎকালীন ঢাকায় রেসকোর্স ময়দানের (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে) জনসভায় বঙ্গবন্ধুর পাশে সুবোধ মিত্রও ছিলেন। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে কলকাতা, দিল্লী, মিরাট, নেপালসহ দেশ-বিদেশের বিভিন্ন স্থানে একজন আদর্শ সংগঠক হিসেবে ছুটে বেড়িয়েছেন। দেশের মানুষের মুক্তির লক্ষ্যে অটল বিহারী বাজপেয়ী, সুভদ্রা ঘোশী, ভারত সরকারের পররাষ্ট্র বিষয়ক ডিরেকটর জেনারেল মি. বিডি, নেপালের রাজা মহেন্দ্রসহ তত্বকালীন সময়ের গুরুত্বপূর্ণ বহু মানুষের সাথে জীবনে ঝুঁকি নিয়ে দফায় দফায় বৈঠক করেছেন।কেশবপুর উপজেলাবাসিকে কাঁদিয়ে সাবেক এমএনএ সুবোধ মিত্র ২০০৭ সালের ২০ জানুয়ারি হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে উপজেলার বালিয়াডাঙ্গাস্থ নিজ বাড়িতে মৃত্যু বরণ করেন।এদিকে সাবেক এমএনএ সুবোধ মিত্রের সন্তান অ্যাডভোকেট মিলন মিত্র জানান, আজ বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে তাঁর পিতার মৃত্যুবার্ষিকী পালিত হচ্ছে।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)