সাতক্ষীরায় তিনটি দোকান ও তিনটি বাড়ি ভাংচুর ও লুটপাট

স্টাফ রিপোর্টার:
জমি সংক্রান্ত বিরোধ ও পূর্ব শত্রুতার জেরে সাতক্ষীরা সদরের বাঁশদহা ইউনিয়নের রেউইবাজারে তিনটি দোকান ভাংচুর ও লুটপাট এবং তিনটি বাড়ি ভাংচুর ও লুটপাট করেছে প্রতিপক্ষরা।শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) বিকালে রেউইবাজারের তিনটা দোকান এবং রবিবার (২৯ ডিসেম্বর) সকালে হাওয়ালখালী  গ্রামে প্রবাসীসহ তিন ভাইয়ের তিনটি বাড়ি ভাংচুর ও লুটপাট করা হয়।
সরেজমিনে গেলে প্রবাসী  শাহজাহানের স্ত্রী ফেরদৌসি খাতুন বলেন, ‘মাঠের ৫১ শতক জমি ও ভিটাবাড়ির সীমানা প্রাচীর দেওয়াকে কেন্দ্র করে চাচাতো দেবরদের সাথে আমাদের বিরোধ চলছিল। গত শুক্রবার জমি সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে সালিশ হয় সালিশে পুণরায় কাগজপত্র দেখার জন্য দিন ধার্য করেন সালিশদাররা। ওই সালিশে বাজারের কয়েকজন দোকানদার উপস্থিত হওয়ায় গতকাল শনিবার বিকালে বাজারের দোকানদার মোতাহারের দুটি দোকান ও আক্কাস ডেকোরেটরের দোকান ভাংচুর ও লুটপাট করা হয়। আজ রবিবার সকালে মৃত. নাজের আলীর ছেলে শফিকুল ইসলাম, আনিসুর রহমান, আশারুল ও সাইফুল, মৃত উজির আলীর ছেলে অছিকুল ইসলাম, মিঠু ও মেয়ে ডলি বেগম, রফিকুলের ছেলে শাহিন ও মামুন, মৃত সামছেরের ছেলে সাজদ্দী ধারালো অস্ত্র ও বাঁশের লাঠি ও জিআই পাইপ নিয়ে আমাদের বাড়িতে হামলা চালায়। এছাড়া আমার দেবর জাহাঙ্গীর আলম ও আলমগীর হোসেনের বাড়িতেও হামলা চালায় তারা। তারা আমাদের তিন বাড়ির বিভিন্ন জানালার থাইগ্লাস, আসবাবপত্র, টিভি, রান্নাঘর, গোয়ালঘর, বাথরুমের পাইপ, ভাংচুর করে। তারা আমাদের ঘরের বাকসো কুপিয়ে ভাংচুর করে  দেড় লক্ষ টাকা, ৩ ভরি ওজনের চেইন, রুলি ও কানের দুল নিয়ে চলে যায়। তারা দা নিয়ে আসলে আমরা প্রানের ভয়তে বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়। এখনও আমরা বাড়িতে যেতে পারছিনা। তারা আমাদেরকে উপর্যুপুরি খুন জখমের হুমকি দিচ্ছে এবং অস্ত্র নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে।’
সরেজমিনে রেউইবাজার এলাকায় গেলে বাজারের দোকানদার অহেদ আলী বলেন, ‘মৃত নাজের আলীর ছেলে শফিকুল ইসলাম ও আনিছুর রহমানগং মোতাহারের মুদি দোকান ২টি ভাংচুর চালিয়েছে। তারা দোকানের ফ্রিজসহ মূল্যবান জিনিসপত্র ভাংচুর করেছে। এছাড়া তারা আক্কাসের ডেকোরেটরের দোকানও ভাংচুর করেছে।’
মুদি দোকানদার মোতাহার বলেন, ‘মুদি দোকানদারি করে আমার পরিবার চালায়। আলমগীর ও আনিছুরদের জমি সংক্রান্ত বিরোধের সালিশে যাওয়ার কারনে মৃত নাজের আলীর ছেলে শফিকুল ইসলাম, আনিসুর রহমান, আশারুল ও সাইফুল,  মৃত উজির আলীর ছেলে অছিকুল ইসলাম ও মিঠু, রফিকুলের ছেলে শাহিন ও মামুন, মৃত সামছুরের ছেলে সাজদ্দীসহ অজ্ঞাত ৮/১০ জন আমার দোকানঘর ভাংচুর ও লুটপাট চালিয়েছে। আমার দামী ফ্রিজটিও তারা তছনচ করে দিয়েছে। আমার প্রায় ৫ লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি হয়েছে। আমি তাদের উপযুক্ত শাস্তি চায়।’
ডেকোরেটরের দোকানদার মোঃ কপিলা বলেন, ‘সালিশে যেয়ে আমার কপাল পুড়েছে। সালিশে যাওয়ার কারনে শফিকুল ও আনিছুরগং আমার ডেকোরেটরের দোকানপাট ভাংচুর ও ক্ষয়ক্ষতি করেছে।’
মৃত বাবর আলীর ছেলে আলমগীর বলেন, ‘জমি ও প্রাচীর নিয়ে আমার চাচাতো ভাইদের সাথে আমাদের বিরোধ চলছিলো। গত শুক্রবার সাবেক মেম্বর রেজাউল ইসলামের নেতৃত্বে সালিশ হয়। বিষয়টি শুনেবুঝে সাবেক মেম্বর কাগজপত্র পত্র দেখার জন্য অন্য একটি দিন নির্ধারণ করেন। সালিশ থেকে বের হতে না হতেই আমার চাচাতো ভাই ও তাদের ছেলেরা আমাকে গালিগালাজ করে ও হত্যার হুমকি দেই। এরপর আমি রুম থেকে বাইরে বের হলে তারা ধারালো দা কুরাল নিয়ে আমার উপর হামলা করতে আসলে স্থানীয়রা ঠেকায়। এরপর আমি বাড়ি গেলে আমাকে খুন জখম ও হুমকি দিলে আমি বাড়ি থেকে পালিয়ে আমার কর্মস্থলে চলে যাই। সালিশে থাকার কারনে গতকাল রেউই বাজারের দোকানদার মোতাহার ও আক্কাসের দোকানঘর ভাংচুর চালিয়েছে । তারা স্থানীয় শফিকুল ইসলামের গলায় কোপদিয়ে জখম করেছে আমার চাচাতো ভাই তাদের ছেলেরা। এরপর রবিবার তারা আমাদের তিন ভাইয়ের বাড়িঘর ভাংচুর চালিয়েছে । তদন্ত সাপেক্ষে আমি এই সন্ত্রাসী হামলার সুষ্ঠু বিচারের জন্য প্রশাসনের সু-দৃষ্টি কামনা করছি।’

এ ব্যপারে অভিযুক্ত আশারুল বলেন, ‘সালিশে আলমগীররা গুন্ডা ভাড়া করে নিয়ে আসে। আলমগীররা আমার ভাইকে মারপিট করেছে তবে  কারা দোকানপাট ও বাড়িঘর ভাংচুর করেছে আমরা জানিনা।’এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সাতক্ষীরা সদর থানায় এজহার দায়েরের প্রস্তুতি চলছিলো বলে জানান ভুক্তভুগি আলমগীর হোসেন।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)