সাতক্ষীরায় আসামীর স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি:৭ দিনেও গ্রেপ্তার নেই, হয়নি টাকা উদ্ধার
রঘুনাথ খাঁ:
সাতক্ষীরা থেকে ভোমরা বন্দরে যাওয়ার পথে আলীপুর ঢালীপাড়া মোড়ে ২৩ লাখ ৩৮ হাজার ৫০০ টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনায় জনতার হাতে আটককৃত মেহেদী হাসান মুন্না গত শুক্রবার আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। ঘটনার এক সপ্তাহ পার হয়ে গেলেও পুলিশ আসামী স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা রফিকুজ্জামানসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। এমনকি উদ্ধার হয়নি ছিনতাই হওয়া টাকা।
এদিকে, প্রকাশ্য দিবালোকে হামলা চালিয়ে টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনায় এজাহারভুক্ত তিনজনসহ ১৬৪ ধারার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে উল্লেখিত স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা সদর উপজেলার থানাঘাটার রফিকুজ্জামানকে গ্রেপ্তার ও টাকা উদ্ধার না করতে পারায় ভোমরা বন্দরের ব্যবসায়িদের মধ্যে হতাশা বিরাজ করছে।
১৬৪ ধারায় জবানবন্দি প্রদানকারি মেহেদী হাসান মুন্না (২৪) সাতক্ষীরা সদরের কুচপুকুর এলাকার আতিয়ার রহমানের ছেলে।
ভোমরা বন্দরের “মা’ এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী জিএম আমির হামজা তার দায়েরকৃত মামলার বরাত দিয়ে জানান, গত ১৯ ডিসেম্বর বৃহষ্পতিবার বিকেল ৫টা দিকে তার কর্মচারি শওকত হোসেন ও আব্দুল্লাকে আলীপুর ঢালীপাড়ার মোড়ে মটর সাইকেল থামিয়ে লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে দুটি ব্যাংক খেকে তোলা ও তিনজন ব্যবসায়ির কাছ থেকে আদায়কৃত মোট ২৩ লাখ ৩৮ হাজার ৫০০ টাকা ভর্তি ব্যাগটি দুটি মটর সাইকেলে থাকা পাঁচজন ছিনতাইকারি ছিনতাই করে। পালিয়ে যাওয়ার সময় শহরতলীর কুচপুকুরের মেহেদী হাসান মুন্নাকে জনতা আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে। এ সময় মুন্না নিজেকে ছিনতাইয়ের সাথে সম্পৃক্ত করে দুটি মটর সাইকেলে টাকার ব্যাগ নিয়ে পালিয়ে যাওয়া থানাঘাটার স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা রফিকুজ্জামান,একই এলাকার আরাফাত হোসেন, আবাদেরহাটের নয়ন হোসেন ও নলকুড়ার আবু সাঈদ এর পূর্ণ পরিচয় তুলে ধরে।
জিএম আমীর হামজা আরো বলেন, আটককৃত মেহেদী হাসান মুন্নার দেওয়া জবানবন্দি অনুযায়ি আটককৃতসহ পাঁচজনের নাম উল্লেখ করে বৃহষ্পতিবার রাতেই থানায় এজাহার দায়ের করতে যান তিনি। প্রথমে থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তাকে শুধুমাত্র আটককৃতের নাম উল্লখ করে অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামী করার কথা বলেন। যদিও পরবর্তীতে তিনি আটককৃতসহ পলাতক হিসেবে চারজনের নাম উল্লেখ করে থানায় অভিযোগ দিতে গেলে ছিনতাইয়ের ঘটনার মূল হোতা স্বেচ্ছাস্বেকদলের নেতা রফিকুজ্জামানের নাম বাদ দিয়েই এজাহার দিতে হয়। যাহা পরবর্তীতে ২০ ডিসেম্বর মামলা হিসেবে রেকর্ড করা হয়। ওই দিন সন্ধ্যায় আটককৃত মেহেদী হাসান মুন্না বিচারিক হাকিম সুজাতা আমিনের খাস কামরায় টাকা ছিনতাইয়ে নিজেকে সম্পৃক্ত থাকার কথা স্বীকার করে টাকার ব্যাগ নিয়ে পালিয়ে যাওয়া স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা থানাঘাটার রফিকুজ্জামান, একই এলাকার আরাফাত হোসেন, আবাদেরহাটের নয়ন হোসেন ও নলকুড়ার আবু সাঈদ ঘটনার সঙ্গে জড়িত বলে স্বীকার করে। ছিনতাইয়ের ঘটনায় জড়িত পলাতক চারজনকে গত সাতদিনেও গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। এমনকি পুলিশ উদ্ধার করতে পারেনি ছিনতাই হওয়া কোন টাকা। আসামী গ্রেপ্তার করা ও টাকা উদ্ধারে পুলিশের ভ‚মিকা প্রশ্নবিদ্ধ বলে তিনি দাবি করেন।
এ ব্যাপারে মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা সদর থানার উপপরিদর্শক মেহেদী হাসান জানান, আসামী গ্রেপ্তারে ও টাকা উদ্ধারে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি।