সিরিজ বাচাঁতে উইন্ডিজের বিপক্ষে আজ মাঠে নামছে বাংলাদেশ
স্পোর্টস ডেস্ক:
সিরিজ বাঁচানোর লড়াইয়ে আজ সন্ধ্যায় উইন্ডিজের বিপক্ষে মাঠে নামছে বাংলাদেশ। মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় সেন্ট কিটসের ওয়ার্নার পার্কে মুখোমুখি হবে দুই দল।
মুখোমুখি পরিসংখ্যান
বাংলাদেশ ও ওয়েস্ট উইন্ডিজ দুই দলের হার ও জয় বলা যায় একই সুতোয় গাঁথা। দুই দলের মুখোমুখি দেখা হয়েছে এখন পর্যন্ত ৪৫ বার। যেখানে উইন্ডিজের ২২ জয়ের বিপরীতে বাংলাদেশর জয় ২১টি। আর বাকি দুটি ম্যাচ পরিত্যক্ত। এ বছর মোট সাতটি ওয়ানডে খেলেছে বাংলাদেশ। যেখানে জয় তিনটি, হার চারটি। শ্রীলংকার বিপক্ষে ঘরের মাটিতে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ জয়ের পর আফগানিস্তানের বিপক্ষে সংযুক্ত আরব আমিরাতে মাটিতে একই ব্যবধানে হার। অর্থাৎ ২-১ ব্যবধানে। সর্বশেষ উইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম ওযানডেতে হার। অন্যদিকে ২০২৪ সালে গত ম্যাচসহ ১০ ওয়ানডের খেলেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। বিপরীতে হেরেছে ছয় ম্যাচ। জিতেছে ৪টি। দুই দলই চাইবে দ্বিতীয় ওয়ানডে জিতে সিরিজ এগিয়ে যেতে।
আইসিসি র্যাংকিং
প্রত্যেক ম্যাচের পয়েন্টের ভিত্তিতে আইসিসির র্যাকিং নিয়মিত আপডেট হয়। উইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজে নামার আগে বাংলাদেশের পয়েন্ট ছিল ৮৫। একই পয়েন্ট ছিল ৮ থাকা আফগানিস্তানের। কিন্তু অন্যান্য পয়েন্টে এগিয়ে থাকায় তারা ছিল ৮ নম্বরে। বাংলাদেশ ছিল ৯ নম্বরে। সর্বশেষ ম্যাচ হেরে যাওয়ার কারণে বাংলাদেশের রেটিং পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ৮৪। উইন্ডিজের বিপক্ষে এ ম্যাচ জিতলে টাইগারদের পয়েন্ট দাঁড়াবে ৮৫। সেক্ষেত্রে আইসিসি র্যাংকিং ৮ উঠার জন্য এ ম্যাচে জয় গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশের চেয়ে ৯ পয়েন্ট কম উইন্ডিজের। তাদের পয়েন্ট ৭৫। তারা রয়েছে ওয়ানডে র্যাংকিং ১০ নম্বরে।
ওয়ার্নার পার্কের পিচ
প্রথম ওয়ানডের ভেন্যুতেই উইন্ডিজ ও বাংলাদেশের দ্বিতীয় ম্যাচটি গড়াবে। বিগত কয়েক বছরের পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ওয়ার্নার পার্কের পিচ কিংবা মাঠটি ব্যাটিং সহায়ক। এখানে ব্যাটাররা ইতিবাচক সুবিধা করতে পারেন, অর্থা,ৎ তারা এখানে বেশি রান পান। ব্যাটারদের ব্যাট এই মাঠে জ্বলে ওঠে। এই মাঠে গড় ২০০ রানের অধিক। যে দল আগেই ব্যাট করে বেশি রান করতে পারবে সে দল জয়ের সম্ভবনা থাকবে। এই মাঠে বোলিং সুবিধা পেয়ে থাকেন ডানহাতি পেসাররা। বিগতে সময়ের পরিসংখ্যানে এমনটি দেখা যায়। এছাড়া মাঝে মাঝে স্পিনরাও সুবিধা পেয়েছে থাকেন। তবে সেক্ষেত্রে স্পিনের ধরণ হতে হবে লেগ স্পিন। অর্থা মাঝে মাঝে গুগলি বোলিং করলে উইকেট পাওয়ার সম্ভবনা থাকে স্পিনারের।
আবহাওয়া
দিনের বেলা খেলা হওয়ার আপাতত বৃষ্টি হওয়ার সম্ভবনা নেই। ১১ কিলোমিটার ঘন্টায় বাতায়স বইতে পারে। এছাড়াও ১৯ ড্রিগ্রি তাপমাত্রা থাকতে পারে। রাতের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে এবং দিনের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে।
কেউ কাউকে ছাড় দিতে নারাজ-
বাংলাদেশের অধিনায়ক মেহেদি মিরাজ বলেন- সিরিজ জয়ের চান্স এখনও আছে। যেহেতু একটা ম্যাচ হেরেছি, পরের ম্যাচ জিততে পারলে সিরিজ জেতার সুযোগ আছে এখনও। দেখেন সেঞ্চুরি কোনো ইস্যু ছিল না। আমার দরকার ছিল দলকে ভালো জায়গায় নিয়ে যাওয়া। আমি রানের জন্য খেলেছি। ৪০ ওভারের আগে আমি চেষ্টা করেছি ভালো একটা স্কোর দাঁড় করাতে। এই উইকেটে ৩০০+ করতে পারলে আমাদের জন্য ভালো হত। এজন্যই রানের জন্য খেলেছিলাম। ওভারঅল জাকের এবং রিয়াদ ভাই যেভাবে ফিনিশ করেছে এটা ভালো ছিল। নাহলে রান আরও কম হত। ওভারঅল আমরা খুব ভালো ব্যাটিং ইউনিট হিসেবে খেলেছি বোলাররাও ভালো করেছে কিছু কিছু জায়গায়।
প্রথম ওয়ানডেতে উইকেট শিকারের পর উদযাপন করছেন তানজিদ হাসান সাবিক
প্রথম ওয়ানডেতে উইকেট শিকারের পর উদযাপন করছেন তানজিদ হাসান সাবিক
উইন্ডিজের অধিনায়ক শাই হোপ বলেন, আমরা গত কয়েক মাসে অনেক ক্রিকেট খেলেছি। ভালোও করেছি। বেশিরভাগ সময় আমরা ব্যক্তিগতভাবে ক্রিকেট খেলেছি। এখন আমাদের দল হিসেবে ভালো করতে হবে। এখানে সবাই নিজেদের শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতিটা সেরে নিয়েছি। ছেলেরা ম্যাচের জন্য প্রস্তুত আছে। আমরা বাংলাদেশকে সমীহ করতেছি। আমরা সিরিজ জিতেতে চাই।
দুই দলের সম্ভব্য একাদশ-
বোলিং বিভাগ নিয়ে দুশ্চিন্তা নেই বাংলাদেশের। চিন্তা শুধু ব্যাটারদের অধারাবাহিক ফর্ম। টেস্টে জাকের বাদে আর কেউই ভালো কিছু করতে পারেননি। আশা জাকেরের আত্মবিশ্বাস ছড়িয়ে যাক বাকি ব্যাটারদের মাঝে। এতে টেস্টের মতো ওয়ানডেতেও ভালো কিছু আসবে।
বাংলাদেশের সম্ভাব্য একাদশ: সৌম্য সরকার, তানজিদ তামিম, লিটন দাস, মেহেদি হাসান মিরাজ (অধিনায়ক), মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, জাকের আলী, আফিফ হোসেন, পারভেজ হোসেন ইমন, রিশাদ হোসেন, তাসকিন আহমেদ ও নাহিদ রানা/শরিফুল ইসলাম।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের সম্ভাব্য একাদশ: শেই হোপ (অধিনায়ক), ব্রেন্ডন কিং (সহ-অধিনায়ক), কেসি কার্টি, রোস্টন চেজ, ম্যাথু ফোর্ড, জাস্টিন গ্রিভস, শিমরন হেটমায়ার, আমির জাঙ্গু, আলজারি জোসেফ, শামার জোসেফ, এভিন লুইস, গুড়াকেশ মোতি, শেরফানে রাদারফোর্ড, জায়ডেন সিলস ও রোমারিও শেফার্ড।