ব্রাজিল–আর্জেন্টিনা থেকে জাহাজে এলো ৫২ হাজার টন সয়াবিন তেল
অনলাইন ডেস্ক:
ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনা থেকে চার দিনের ব্যবধানে চট্টগ্রাম বন্দরে অপরিশোধিত সয়াবিন তেল নিয়ে এসেছে চারটি জাহাজ। এই চার ট্যাংকার বা তেল পরিবহনকারী জাহাজে অপরিশোধিত সয়াবিন তেল রয়েছে ৫২ হাজার টন।
এমন সময়ে এ চারটি জাহাজ বন্দরে এল, যখন বাজারে বোতলজাত সয়াবিনের সংকট চলছে। আবার এই তেল সংকটের মধ্যে সোমবার সয়াবিন তেলের দাম লিটারে আট টাকা বাড়িয়ে পুনর্নির্ধারণ করেছে সরকার। যদিও চারটি জাহাজই ব্রাজিল–আর্জেন্টিনার বন্দরগুলো থেকে এক মাস আগেই রওনা হয় চট্টগ্রামের উদ্দেশে।
ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, সরবরাহ বাড়ায় বাজারে বোতলজাত সয়াবিনের যে সাময়িক সংকট চলছে তা কেটে যাবে। সোমবার সয়াবিনের দাম সমন্বয় করায় রোজার আগে আমদানি আরো বাড়বে।
নতুন দাম অনুযায়ী, প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল এখন থেকে বিক্রি হবে ১৭৫ টাকায়, যা এত দিন ছিল ১৬৭ টাকা। প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন তেলের দাম ১৪৯ টাকা থেকে বেড়ে দাঁড়াবে ১৫৭ টাকা।
চট্টগ্রাম বন্দরের তথ্য অনুযায়ী, শনিবার এমটি আরডমোর শায়ানি ও এমটি ডাম্বলডোর নামে দুই জাহাজে বন্দরে আনা হয়েছে ২১ হাজার ৫০০ টন সয়াবিন তেল। আজ মঙ্গলবার বন্দর জলসীমায় পৌঁছেছে এমটি সানি ভিক্টরি ও এমটি জিঙ্গা থ্রেশার নামের আরো দুটি জাহাজ। এই দুই জাহাজে রয়েছে ৩০ হাজার ৬০০ টন সয়াবিন তেল। এর মধ্যে এমটি আরডমোর শায়ানি জাহাজ থেকে তেল খালাস শেষ হয়েছে। সোমবারই জাহাজটি বন্দর ছেড়েছে। জাহাজগুলোর মধ্যে সানি ভিক্টরি এসেছে ব্রাজিল থেকে, বাকি তিনটি আর্জেন্টিনা।
জাহাজ কোম্পানি সূত্র জানিয়েছে, এই চার জাহাজে সয়াবিন তেল আমদানি করেছে সিটি গ্রুপ, মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ বা এমজিআই ও টিকে গ্রুপ। এর মধ্যে টিকে গ্রুপের ২৫ হাজার টন, সিটি গ্রুপের ২০ হাজার টন ও মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের ৭ হাজার টন সয়াবিন তেল রয়েছে।
টিকে গ্রুপের পরিচালক শফিউল আতহার গণমাধ্যমকে বলেন, সয়াবিন তেলের দাম সমন্বয়ে সরকারের আশ্বাসে এসব সয়াবিন আমদানির জন্য অনেক আগেই ঋণপত্র খোলা হয়েছিল। এখন মূল্য সমন্বয়ের কারণে আমদানি সামনে বাড়বে। রোজার সময় সয়াবিনের সংকট হবে না। যদিও এখন যেসব জাহাজ আসছে সেগুলোতে টনপ্রতি সয়াবিনের দর ১ হাজার ২১৭ ডলার পড়েছে।
নতুন দাম অনুযায়ী, প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল এখন থেকে বিক্রি হবে ১৭৫ টাকায়, যা এত দিন ছিল ১৬৭ টাকা। প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন তেলের দাম ১৪৯ টাকা থেকে বেড়ে দাঁড়াবে ১৫৭ টাকা। দাম পুনর্নির্ধারণের কারণে বন্দরে আসা চার জাহাজের সয়াবিন তেলের বাজারমূল্যও বেড়ে গেছে। যেমন বন্দরে আসা ৫২ হাজার টন তেল পরিশোধন করে বাজারজাত হলে বোতলজাত সয়াবিন হিসেবে বাজারমূল্য দাঁড়াবে ৯৯৬ কোটি টাকা। দাম বাড়ানোর আগে যা ছিল ৯৫০ কোটি টাকা।
ব্যবসায়ীরা জানান, আমদানি হওয়া এই সয়াবিন তেল প্রথমে জাহাজ থেকে খালাস করে রাখা হবে কাস্টমস নিয়ন্ত্রিত ট্যাংক টার্মিনালে। সেখান থেকে শুল্ক–কর পরিশোধ করে কারখানায় পরিশোধনের জন্য নিয়ে যাবে কোম্পানিগুলো। এরপর পরিশোধন করে বাজারজাত হবে এই সয়াবিন তেল। তাতে এক–দুই সপ্তাহ সময় লাগতে পারে।