সাতক্ষীরার বিতর্কিত শিক্ষক মুকুলের বিরুদ্ধে ডিসি’র কাছে অভিযোগ
নিজস্ব প্রতিনিধি:সাতক্ষীরা সদরের বল্লী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বিতর্কিত শিক্ষক আজহারুজ্জামান মুকুলের বিরুদ্ধে স্থানীয়রা জেলা প্রশাসকের কাছে অভিযোগ দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) অভিভাবক এবং স্থানীয়রা শিক্ষকের নানা অনিয়ম ও বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের কথা উল্লেখ করে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ দেন। এ সময় জেলা প্রশাসক তদন্ত-পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস প্রদান করেন।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, ১৯৯৩ সালে জালিয়াতির মাধ্যমে সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগ পায় আজহারুজ্জামান মুকুল। এরপর দীর্ঘ সময় যাবত তিনি বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থেকেও নিয়মিত বেতন উত্তোলন করেছেন। এ ঘটনায় সংশ্লিষ্ট দপ্তর তাকে সাময়িক বহিষ্কারও করে। তাছাড়া বিদ্যালয়ে অনুপস্থিতির কারণে দারুণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে শিক্ষার্থীরা। দেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট পরিবর্তনের পরে দলীয় প্রভাব কাজে লাগিয়ে পেশি শক্তি প্রয়োগ করে সহকারী শিক্ষক থেকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের পদ দখল করে নেন তিনি। এরপর থেকে নানা ধরনের কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে বিতর্কিত হতে শুরু করেন। অতি সম্প্রতি তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীকে বেধড়ক মারপিট করে বেত ভেঙ্গে ফেলেন। যে বিষয়টি শিক্ষার্থীর পরিবারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দেয়। এছাড়াও বিদ্যালয়ের পার্শ্ববর্তী একটি রাস্তা ঘেরা দিয়ে সাম্প্রদায় ইস্যু তৈরি করেন তিনি। পরবর্তীতে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের হস্তক্ষেপে রাস্তার ঘেরাও অপসারণ করা হয়। তার বিরুদ্ধে সরকারি বই বিক্রির অভিযোগ রয়েছে। এসময় সামগ্রিক বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান অভিযোগকারীরা।
বল্লী ইউনিয়ন বিএনপি’র সভাপতি সেলিম রেজা মন্টু জানান, সরকার পতনের পর প্রতিষ্ঠানের সহকারী শিক্ষক আজহারুজ্জামান মুকুল কিছু বখাটে ছেলেদের ভুল বুঝিয়ে প্রধান শিক্ষক জামিলকে সন্মানহানী করে বিদ্যালয় থেকে বের করে দেয়। পরে প্রভাব খাটিয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হয়ে গেছে। তিনি ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের চেয়ারে বসার পর থেকে একের পর এক বিতর্কিত কর্মকান্ড করে চলেছেন। স্থানীয় একটি সম্প্রদায়ের যাতায়াতের রাস্তা বন্ধ, সরকারি পাঠ্যপুস্তাক বিক্রি, এক শিক্ষার্থীকে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বেধড়ক মারপিট সহ একাধিক শিক্ষকের সঙ্গে অশালীন আচরণ করছেন। তার এমন বেপরোয়া হয়ে ওঠার বিষয়টি মেনে নেওয়া বেশ কঠিন। একজন শিক্ষকের এমন আচরণ সত্যিই দুঃখজনক। তাই তার সমস্ত অপকর্ম ও বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের বিষয়গুলো লিখিতভাবে জেলা প্রশাসকের কাছে অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে যেহেতু বিদ্যালয়ের বর্তমান সভাপতির দায়িত্বে রয়েছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার তাই তাকেও সশরীরে হাজির হয়ে বিষয়গুলো জানানো হয়েছে।
সাতক্ষীরা সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার শোয়াইব আহমাদ জানান, অভিযোগের বিষয়গুলো তদন্ত করা হবে। তদন্ত শেষে সত্যতা পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।