আশাশুনির প্রতাপনগরে নানামুখী ষড়যন্ত্রে দিশেহারা মৎস্য ঘের মালিক
জি এম মুজিবুর রহমান:
ঘের লুটপাট, বাসা ভাংচুর ও নানামুখী ষড়যন্ত্রে দিশেহারা হয়ে পড়েছে আশাশুনির প্রতাপনগরের এক মৎস্য ঘের মালিক। সরকার পতনের পর এক শ্রেণীর সুবিধাবাদীদের বিরুদ্ধে রাতারাতি ভোল পাল্টে জোটবদ্ধ হয়ে জবর দখল করে প্রকৃত ঘের মালিককে হটিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকার মাছ লুটপাট করে নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।ঘের সংলগ্ন প্রতিবেশী শহিদুল ইসলাম জানান, প্রতাপনগর ইউনিয়নের সুভদ্রাকাটি গ্রামের চাকলা তেলেখালি মৌজায় ২১, ১২৪ খতিয়ানে (পৈত্রিক ও ডিড কৃত) ৪০ বিঘা ও ১ নং খাস খতিয়ানে ৩৫ বিঘা জমি মিলে মোট ৭৫ বিঘা জমিতে ওই গ্রামের শওকত সানার ছেলে সোহরাব হোসেন দীর্ঘদিন মৎস্য চাষ করতেন। ৫ আগস্ট পরবর্তীতে তার মৎস্য ঘেরটি স্থানীয় আলমগীর, গোলাম রসুল, মহরম সরদার, ইউসুফ, রিয়াছাত আলী তাদের দলবল মিলে জবর দখল করে একদফায় মাছ লুটপাট করে। উপায় না পেয়ে সোহরাব সানা রাজাপুর গ্রামের শহিদুল ইসলামের ছেলে আব্দুর রহিম সরদারের কাছে নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে লিখিত ভাবে সাদা মাছ সহ ঘেরের মালিকানা হস্তান্তর করেন। রহিম সরদার ঘেরে ওঠার পর দখলবাজেরা ২য় দফায় ফের লুটপাট করে। বর্তমানে আব্দুর রহিম মৎস্য ঘেরের দখলে আছেন।
লীজ গ্রহীতা আব্দুর রহিম জানান, সোহরাব সানার কাছ থেকে আমি ২০২৪ সালের ১০ সেপ্টেম্বর থেকে ২০২৮ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ডিড/লীজ নিয়ে মৎস্য ঘেরটির দখল বুঝে পাই। কিন্তু কয়েকদিন যেতে না যেতেই ২১ সেপ্টেম্বর রাতে সুভদ্রাকাটি গ্রামের গোলাম রসুল, আরিফুল, আমিনুর, আসলাম, ইউসুফ, এরশাদ, মোজাফফর, ইউনুছ, হারুন, ইয়াছিন, মহররম, কামাল সহ তাদের দলবল মিলে ৫ লক্ষ টাকার চাঁদা দাবি করে জোর পূর্বক আমার মৎস্য ঘেরে জাল টেনে প্রায় ১২ লক্ষ টাকার মাছ লুট করে নেয়। এ ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে বিজ্ঞ আদালতে সি আর- ৪০৬/২৪ নং মামলা বিচারাধীন রয়েছে। এখনও তারা আমার লীজ কৃত মৎস্য ঘেরটি জবর দখলের পায়তারা করছে, পাশাপাশি প্রশাসন এবং সাংবাদিকদের ভুল তথ্য দিয়ে আমাদেরকে সামাজিক ভাবে হেয় প্রতিপন্ন করে যাচ্ছে।
এ ব্যাপারে প্রতাপনগর ইউনিয়ন বিএনপি’র আহবায়ক শেখ শাহ আলম বলেন, যারা আব্দুর রহিমের লিজ নেওয়া মৎস্য ঘেরটি বারবার লুটপাট করছে বিগত সরকারের আমলে তারাই সমস্ত সরকারি সুযোগ সুবিধা গ্রহণ করেছে। ৫ আগস্টের পর রাতারাতি তারাই আবার ভোল পাল্টে বিএনপি-জামায়াতের ভুয়া কর্মী সেজে এখনো লুটপাট, দখল, চাঁদাবাজি চালিয়ে যাচ্ছে। মোস্তফা হেলালুজ্জামান এর মতো বিপথগামী কতিপয় বিএনপি কর্মীদের সাথে নিয়ে তারা বিভিন্ন দফতরে কৃষক দলের কেন্দ্রীয় নেতা আমিনুর রহমান মিনুকে জড়িয়ে মিথ্যা তথ্য দিয়ে সংবাদ প্রকাশ সহ নানা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। আমরা এসবের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।
ইউনিয়ন বিএনপি’র সদস্য সচিব আব্দুর রব ও যুবদলের আহ্বায়ক কেরামত আলী বলেন, যে ২৭ জন নিজেদের ভূমিহীন পরিবার বলে প্রচার করছেন বিগত দিনে সোহরাব সানা এদের নাম ব্যবহার করে সরকারি ডিসিআর কেটে তাদের কাছ থেকে আবার সাব-লীজ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে মাছ চাষ করতো। ৫ আগস্ট পরবর্তীতে এরাই ভোল পাল্টে সোহরাবের ঘের লুটপাট করে। পরবর্তীতে আব্দুর রহিম ডিড/লীজ নিলে মোস্তফা হেলালুজ্জামানের মদতে তাঁরা পূণরায় লুটপাট করে। বিষয়টি নিয়ে কয়েক বার বসাবসি হলেও ওই ২৭ জন নতুন ডিসিআর এর আবেদনের কাগজ ছাড়া কিছুই দেখাতে পারেনি।
এ ব্যাপারে মোস্তফা হেলালুজ্জামান তরফদারের সাথে ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।