চট্টগ্রামে আইনজীবী হত্যা: প্রধান আসামি চন্দন গ্রেফতার
অনলাইন ডেস্ক:
চট্টগ্রামে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যা মামলার প্রধান আসামি চন্দনকে (৩৫) গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বুধবার (৪ ডিসেম্বর) রাত পৌনে ১২টার দিকে কিশোরগঞ্জের ভৈরব রেলস্টেশন থেকে চন্দনকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃত চন্দন চট্টগ্রাম বান্ডেল রোডের সেবক কলোনির মেথরপট্টি এলাকার মৃত ধারীর ছেলে। পুলিশ জানিয়েছে, চন্দন হত্যা মামলার ১ নম্বর আসামি।
ভৈরব থানার ওসি মো. শাহিন মিয়া জানান, আইনজীবী অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যার ঘটনার পর মামলা হলে প্রধান আসামি চন্দনকে ধরতে চট্টগ্রামের ডিবি পুলিশ গত দুদিন ধরে ভৈরবে অবস্থান করছিল। ডিবি জানতে পারে আসামি চন্দনের শ্বশুরবাড়ি ভৈরব এলাকায়। কিন্তু ডিবি তার খোঁজ পাচ্ছিল না। বুধবার তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে জানতে পারে তিনি ভৈরবে অবস্থান করছেন। পরে এ খবর আমাদেরকে জানানো হলে পুলিশ সন্ধ্যার পর থেকে ভৈরব রেলস্টেশনে অবস্থান নেয়। রাত পৌনে ১২টার দিকে তাকে রেলস্টেশন এলাকা থেকে আটক করতে সক্ষম হয় পুলিশ।
প্রসঙ্গত, গত ২৬ নভেম্বর কোতোয়ালি থানার রাষ্ট্রদ্রোহের মামলায় চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত। এরপরই আদালত এলাকায় শুরু হয় তার অনুসারীদের তাণ্ডব। কারাগারে নেয়ার জন্য চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে পুলিশের প্রিজন ভ্যানে তোলা হলে অনুসারীরা প্রিজন ভ্যানটি আটকে বিক্ষোভ শুরু করেন। তারা প্রায় তিন ঘণ্টা বিক্ষোভ করেন।
এক পর্যায়ে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় এসি দত্ত রোডের এক বিল্ডিংয়ের সামনে আইনজীবী সাইফুল ইসলামকে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় নিহতের বাবা জামাল উদ্দিন বাদী হয়ে (২৯ নভেম্বর) রাতে চট্টগ্রাম কোতোয়ালি থানায় ৩১ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ১০ থেকে ১৫ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন। ওই মামলার ১ নম্বর আসামি চন্দন।
মামলার আসামিরা হলেন- কোতোয়ালী থানাধীন বান্ডেল রোড সেবক কলোনি এলাকার বাসিন্দা চন্দন, আমান দাস, শুভ কান্তি দাস, বুঞ্জা, রনব, বিধান, বিকাশ, রমিত, রুমিত দাশ, নয়ন দাস, গগন দাস, বিশাল দাস, ওমকার দাস, বিশাল, রাজকাপুর, লালা, সামির, সোহেল দাস, শিব কুমার, বিগলাল, পরাশ, গণেশ, ওম দাস, পপি, অজয়, দেবী চরণ, দেব, জয়, দুর্লভ দাস ও রাজীব ভট্টাচার্য্য। তবে পুলিশ আগেই ৯ জনকে গ্রেফতার করলেও প্রধান আসামি চন্দন ঘটনার পর থেকে পলাতক ছিলেন।
আর ২ ডিসেম্বর সাইফুল ইসলাম হত্যা মামলায় নয়জনকে গ্রেফতার দেখান (শ্যোন অ্যারেস্ট) আদালত। এরা হলেন- রুমিত দাস, সুমিত দাস, গগন দাস, নয়ন দাস, বিশাল দাস, আমান দাস, মুন মেথর, রাজীব ভট্টাচার্য্য ও দুর্লভ দাস। এদের মধ্যে বিজিসি ট্রাস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শুভ কান্তি দাস ছাড়া বাকিরা সকলেই পরিছন্নতাকর্মী।
এছাড়া একইদিন (২৯ নভেম্বর) কোতোয়ালি থানায় আরো একটি মামলা করেন আলিফের বড়ভাই খানে আলম। আদালত প্রাঙ্গণে আইনজীবীদের ওপর হামলা ও ভাঙচুরের অভিযোগে ১১৫ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত পরিচয়ের আরো ৪০০ থেকে ৫০০ জনকে আসামি করে মামলাটি করা হয়।
এর আগে, পুলিশের ওপর হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় তিনটি মামলা করে পুলিশ। নতুন মামলাটি নিয়ে ২৬ নভেম্বর আদালত এলাকায় সহিংসতার ঘটনায় এখন পর্যন্ত মোট ছয়টি মামলা হয়েছে।