ভারতে ভয়াবহ ভূমিধসে এক পরিবারের ৭ জনের মৃত্যু
আন্তজার্তিক ডেস্ক: ভারতের দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য তামিল নাডুতে ভয়াবহ ভূমিধসের ঘটনায় এক পরিবারের সাত সদস্যের সবাই নিহত হয়েছেন।
রোববার (১ ডিসেম্বর) রাজ্যটির তিরুভান্নামালাই শহরে এই ভূমিধসের ঘটনা ঘটে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।সম্প্রতি আঘাত হানা ঘূর্ণিঝড় ফেইনজালের অবশিষ্টাংশের প্রভাবে তামিল নাডুর বিভিন্ন অংশে ভারি বৃষ্টিপাত হচ্ছে। টানা ভারি বৃষ্টির পর রোববার স্থানীয় সময় বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে আন্নামালাইয়ার পাহাড়ের নিচের দিকের ঢালে ভূমিধসের ঘটনাটি ঘটে। পাহাড় থেকে আবাসিক ভবনের ওপর ভারী বোল্ডার পড়ে এক পরিবারের সাতজন নিহত হন।এর পরদিন সোমবার বিকালে শহরটির এক মন্দিরের কাছে ফের ভূমিধসের ঘটনা ঘটে। দ্বিতীয় এ ভূমিধসে কেউ হতাহত হয়েছেন বলে খবর পাওয়া যায়নি।
চেন্নাইয়ের ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির বিশেষজ্ঞ টিমের সহযোগিতা নিয়ে ঘটনাস্থলে উদ্ধার অভিযান চালানো হচ্ছে। কিন্তু ভারি বৃষ্টি ও পাহাড়ের ওপরে আরেকটি বোল্ডার বিপজ্জনকভাবে ঝুঁলে থাকায় উদ্ধার অভিযান ব্যাহত হচ্ছে। ওই বোল্ডারটি যে কোনো সময় ধসে পড়ে বিপর্যয়ের কারণ হতে পারে, এ কারণে সতর্কতার সঙ্গে উদ্ধার অভিযান চালানো হচ্ছে।
শনিবার বিকালে ফেইনজাল বঙ্গোপসাগর থেকে স্থলে উঠে আসার পর থেকে ভারতের দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্যটিতে প্রচুর বৃষ্টিপাত হচ্ছে। সোমবারও বৃষ্টি অব্যাহত ছিল।
তামিল নাডুর উত্তরাঞ্চলীয় জেলা ভিলুপুরামে নজিরবিহীন বন্যা দেখা দিয়েছে; বন্যার পানির স্রোতে অনেকগুলো সেতু ভেসে গেছে, এতে বহু গ্রাম ও আবাসিক এলাকায় প্রবেশের পথ বন্ধ হয়ে গেছে, বহু একর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং রেল চলাচল ব্যাহত হচ্ছে।
পশ্চিম তামিল নাডুর কৃষ্ণগিরি ও ধর্মপুরী জেলার বিভিন্ন অংশেও রেকর্ড বন্যা দেখা দিয়েছে। কৃষ্ণগিরির উথানগিরিতে মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ৫০ সেন্টিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।
সামাজিক মাধ্যমে আসা ভিডিওতে দেখা গেছে, টানা ১৪ ঘণ্টা ধরে বৃষ্টি হওয়ার পর উথানগিরির একটি বাস স্টেশনে দাঁড় করিয়ে রাখা বড় বড় বাসসহ বহু গাড়ি বন্যার পানির স্রোতে রাস্তা থেকে গড়িয়ে পড়ে যাচ্ছে।
ভারতের আবহাওয়া বিভাগের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা পিটিআইকে জানিয়েছেন, ঘূর্ণিঝড়ের অবশিষ্টাংশের প্রভাবে তামিল নাডুর কিছু অংশে অতি ভারি বৃষ্টিপাত হচ্ছে। ঘূর্ণিঝড়ের অবশিষ্টাংশটি একটি শক্তিশালী নিম্নচাপ হিসেবে এখন রাজ্যটির উত্তরাংশে অবস্থান করছে।
এটি আরো শক্তি সঞ্চয় করে মঙ্গলবারের মধ্যে কেরালার উত্তরাঞ্চল ও কর্নাটকের দক্ষিণাঞ্চল হয়ে আরব সাগরে গিয়ে হাজির হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কেরালার উত্তরাঞ্চল ও কর্নাটকের দক্ষিণাঞ্চলে ভারি বৃষ্টির সতর্কতা জারি করা হয়েছে।