খাজরা ইউনিয়ন পরিষদে নানা জটিলতা ও ষড়যন্ত্রের অভিযোগ

জি এম মুজিবুর রহমানঃ আশাশুনি উপজেলার খাজরা ইউনিয়ন পরিষদে নানা জটিলতা ও ষড়যন্ত্রে স্বাভাবিক কার্যক্রমে বিপত্তির অভিযোগ পাওয়া গেছে।
বিগত ইউপি নির্বাচনের পর ইউনিয়ন পরিষদের মিটিংএ ইউপি সদস্য সাইফুল ইসলাম বাচ্চুকে প্যানেল চেয়ারম্যান নির্বাচিত করা হয়। উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশ গ্রহনের জন্য খাজরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহ নেওয়াজ ডালিম ১৪ মে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেন। কিন্তু নতুন করে পরিষদের সভায় প্যানেল চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম বাচ্চুর পরিবর্তে রামপদ মেম্বরকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান করা হয়। এনিয়ে দ্বন্দ্ব শুরু হয় এবং জেলা প্রশাসক বরাবর প্রতিকারের আবেদন করা হলে ডিসি সাহেব উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে তদন্তের নির্দেশ দিলে ইউএনও মৎস্য কর্মকর্তাকে তদন্তভার প্রদান করেন। তদন্ত শেষে প্রতিবেদন প্রাপ্তির পর প্রায় ৪১ দিন পর সাইফুল ইসলাম বাচ্চুকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব প্রদান করা হয়। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম বাচ্চু জানান, দায়িত্ব প্রাপ্তির পর থেকে মেম্বারবৃন্দকে নিয়ে মিটিং ও সকল কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। এপর্যন্ত ৪/৫টি মিটিং করা হয়েছে। যার রেজুলেশনও হয়েছে। সকল মেম্বারদের নিয়ে টিসিবির সংশোধনী তালিকা করা হয়। মাতৃত্বকালীন ভাতার তালিকা মেম্বারদের সম্মতিতে করা হয়েছে। সবশেষ ৫টি কার্ড ২, ৫ ও ৬ নং ওয়ার্ডে আমি, মহিলা মেম্বার রওশনারা ও তহমিনার সহায়তায় করা হয়েছে। ৫ আগষ্টের পর থেকে অদ্যাবধি মেম্বার রামপদ ও সন্ধ্যারানী পরিষদে আসেননা। তিনি বলেন, আমি পরিষদকে স্বচ্ছ ও দুর্নীতিমুক্ত রাখতে ৩০ কেজি চাউলের কার্ড হতদরিদ্রদের মাঝে বিনা টাকায় শতভাগ করার ঘোষণা, ট্যাংকি বিতরনে (৩ থেকে ৬০০০ টাকা নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে) দুর্নীতিমুক্ত রাখতে ফেসবুকে পোষ্ট করা হলে, জামাত-বিএনপি নেতাদের সাথে নিয়ে সকল সহায়তার তালিকা ও কার্ড করা, ৯নং ওয়ার্ডের মেম্বার কার্ডের ব্যাপারে টাকা দাবী করার বিষয়টি প্রতিরোধে ফেসবুকে পোষ্ট করা এবং দুর্নীতিমুক্ত ও স্বচ্ছতার সাথে পরিষদ পরিচালনার চেষ্টা করা, ফেসবুকে ঘোষণা দেওয়া নিয়ে কিছু মেম্বার ও স্বার্থান্বেষী ব্যাক্তি আমার উপর বিরূপ মনোভাব পোষণ করতে শুরু করেছেন। শত বাধা বিপত্তিকে উপেক্ষা করে তিনি দায়িত্ব পালনে স্বচেষ্ট থাকবেন বলে অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।
এব্যাপারে ইউনিয়নের বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সমন্বয়ক সাইফুল ইসলাম সুমন, দুর্গাপুর গ্রামের আফছার গাজী, ছাত্র সজীব হোসেন, নয়ন, যুবদলের ২নং ওয়ার্ড সেক্রেটারী আজিজুল, চেউটিয়ার আবু দাউদ, খাজরা ইউনিয়ন মৎস্যজীবি সমবায় সমিতির সভাপতি সুবোধ মন্ডল জানান, তারা প্রায়ই পরিষদে যাতয়াত করে থাকেন এবং ভারপ্রাপ্ত চেঢারম্যারকে নিয়মিত পরিষদে আসতে, শালিসসহ সকল কার্যক্রম করতে দেখেন। পরিচয়পত্র, ওয়ারেশ কায়েম সনদসহ সকল সেবা প্রদানে কোনরকম অনিয়ম হতে দেখেননি। মৎস্য সমিতি তাদের বরাদ্দপ্রাপ্ত চাউল থেকে ৮০০ কেজি চাউল অসহায় দরিদ্রদের মাঝে বিতরনের জন্য স্বেচ্ছায় প্রদান করেন এবং ছাত্র সমন্বয়ক ও ছাত্রদের নেতৃত্বে বিতরণ করা হয় বলে সমিতির সভাপতি জানান। পরিষদের গ্রাম পুলিশ, ২নং ওয়ার্ড যুবদল সভাপতি ইমরান হোসেন, পিরোজপুরের ঘের ব্যবসায়ী আজিজ, খাজরা বাজার ভ্যান শ্রমিক সভাপতি মফিজুল জানান, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নিয়মিত অফিস করেন। কোন কাজ ও সেবা প্রদানে কোন টাকা নেননা, সকলের সাথে ভাল আচরন করেন এবং বিচার শালিসসহ পরিষদের কাজ করে থাকেন।
ইউপি সচিব (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মঞ্জুরুল হক জানান, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সাহেব কোন অবৈধ লেনদেন করেছেন এমন কোন অভিযোগ আমার জানানেই। নিয়মিত মিটিং ও অফিস করে থাকেন। এলাকার কাজে সময় দিয়ে থাকেন। তার বিরুদ্ধে কোন অভিযোগের কথা আমার জানানেই। মেম্বারদের সাথে সমন্বয় করে দায়িত্ব পালন করে থাকেন। পরিষদ শান্তিপূর্ণ ভাবে চলে আসছে বলে তিনি জানান।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)