নৌখালী নদীতে অপ্রয়োজনীয় স্লুইস গেট পুনঃনির্মাণের নামে সরকারি কোটি কোটি টাকা লুটপাটের অভিযোগ
নিজস্ব প্রতিনিধি :
নৌখালী নদীতে অপ্রয়োজনীয় স্লুইস গেট পুনঃনির্মাণের নামে সরকারি কোটি কোটি টাকা লুটপাটের পায়তারা করার অভিযোগ উঠেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড সাতক্ষীরা শাখা-২ এর কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে। পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থার উন্নয়ন শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় সদরের ১০নং আগরদাঁড়ী ইউনিয়নের রামনগর নৌখালী নদীতে স্লুইস পুনঃনির্মাণ কাজ ভূয়া প্রকল্পের নামে সরকারের কোটি কোটি টাকা লুটপাটের বিরুদ্ধে ফুসে উঠেছে এলাকাবাসী।
নির্মাণ কাজ বন্ধ করাসহ বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবীতে জনস্বার্থে তথ্য সম্বলিত কাগজ পত্রসহ জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছে আগরদাঁড়ী ইউনিয়নের বাঁশঘাটা গ্রামের অবসর প্রাপ্ত উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা কাজী এনামুল হক।
তিনি লিখিত অভিযোগ পত্রে উল্লেখ করেছেন যে, উপসহকারী প্রকৌশলী/শাখা কর্মকর্তা, সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন শাখা-২ একটি নোটিশ জারী করেছে। নোটিশটিতে বলা হয়েছে পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থার উন্নয়ন শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় রামনগর সুইস পুনঃনির্মাণ কাজটি চলমান রয়েছে। এ থেকে বোঝা যায় নিষ্কাশনের জন্য পূর্বেই রামনগর সুইস নির্মিত হয়েছিল। জারীকৃত নোটিশে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধিগ্রহণকৃত জমির উপর নির্মিত অবৈধ স্থাপনা অপসারণের কথাও বলা হয়েছে। এলাকাতে কোন জমি সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন শাখা-২ কারোর নিকট থেকে এ পর্যন্ত অধিগ্রহণ করে নাই। কোথাও জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হলে তা যদি জনগণের দুর্ভোগের কারণ হয় তাহলে তা নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা হয়। অতীতে এলাকাতে কোন জলাবদ্ধতা ছিল না যা পানি নিষ্কাশনের প্রয়োজন পড়বে। স্লুইস গেট নামে খ্যাত এই প্রকল্পটি এখানে নির্মাণের কোন যৌক্তিকতা নেই। এখানে স্লুইস গেটটি পুনঃনির্মাণ করলে তা হবে অপরিকল্পিত ও অপ্রয়োজনীয়। জনস্বার্থের পরিপন্থি একটি প্রকল্প যা শুধু সরকারি অর্থের অপচয় ঘটিয়ে দুর্নীতিবাজ লোকদের লুটপাট করার পরিকল্পনা মাত্র। ইতিপূর্বে স্লুইস গেট নির্মাণের সময় সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জনৈক্য ব্যক্তির জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছিল এবং বলেছিল তিনি বিধি মোতাবেক ক্ষতিপূরণের টাকা পাবেন। কিন্তু ক্ষতিপূরণের টাকা পাওয়ার জন্য দীর্ঘ ২৫/৩০ বছর অফিসে যোগাযোগ করেও ক্ষতিগ্রস্থ মানুষ কোন ক্ষতিপূরণের টাকা পায় নাই এবং কর্তৃপক্ষ মৌখিকভাবে জানিয়ে দিয়েছিল কোন জমি অধিগ্রহণ করা হয়নি। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ মিথ্যাচার এবং ধোকাবাজি করেছে। যা ঘটনার প্রমাণ স্বরুপ ঐ জমির উপর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্মিত বাড়ীটি আজো কালের স্বাক্ষী হয়ে দাড়িয়ে আছে। স্লুইস গেটটি নৌখালী নদীতে নির্মিত হয়েছিল যার পূর্ব পাশে বাঁশঘাটা গ্রাম এবং পশ্চিম পার্শ্বে রামনগর গ্রাম। নৌখালী নদীতে প্রাকৃতিক নিয়মেই জোয়ার ভাটা বইত। এই নদীটি ছিল এলাকাবাসীর জন্য আশির্বাদ স্বরপ। এই নদীতে ¯øুইস গেট নির্মাণ করে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড সাতক্ষীরা শাখা-২ নদীটির জোয়ার ভাটা বন্ধ করে দিয়েছে। নদীটি এখন মরা নদীতে পরিণত হয়েছে এবং আমরা সকল সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়েছি। নদীটির ২ পাশে ২ গ্রামের বাসীন্দাদের যোগাযোগ ব্যবস্থার সুবিধার জন্য নৌখালী নদীর উপর একটি ব্রীজ দরকার। অবিলম্বে রামনগর সুইস পুনঃনির্মাণ কাজ বন্ধ রেখে নৌখালী নদীতে যে স¬ুইস গেট নির্মিত হয়েছিল তা অপসারণের ব্যবস্থা করে নদীটিকে পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে আনার দাবী জানিয়েছেন। তাহলে নদীটিতে আবার জোয়ার ভাটা চলমান হবে, নদী থেকে এলাকার জনগণ সকল সুযোগ সুধিধা ভোগ করতে পারবে। সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন শাখা-২ নৌখালী নদীতে স্লুইস গেট নির্মান করে পানি চলাচলে কৃত্রিমভাবে প্রতিব›ন্ধকতা তৈরী করে নৌখালী নদীতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি করে তা নিষ্কাশনের কথা বলছে বলে প্রতীয়মান, স্লুইস গেট নামক নির্মিত স্থপনা নৌখালী নদী থেকে অপসারণ করে নিলেই নদীটি পূর্বের অবস্থায় ফিরে আসবে আর কোন জলাবদ্ধতার কারণ থাকবে না, কাজেই নিষ্কাশনের কোন দরকার পড়বে না, এই প্রকল্পটি নৌখালী নদীতে পুনঃনির্মাণের কোন প্রয়োজন নেই। অত্র এলাকায় কোন সময় জলাবদ্ধতা দেখা দেয়নি সেহেতু এলাকাবাসী মনে করি পানি উন্নয়ন বোর্ডের স্লুইস গেট তৈরীর মধ্য দিয়ে সরকারের বিপুল অর্থের অপচয় হবে যা জনগণের জন্য কোন সুফল বয়ে আনবে না, ঐ প্রকল্প নিয়ে এলাকাবাসীর কোন মতামত নেওয়া হয়নি। এবিষয়ে সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন শাখা-২ এর কর্মকর্তা এ প্রতিনিধিকে বলেন, এবিষয়ে আমি কিছুই জানিনা। এটা কি সদর উপজেলার মধ্যে ? এরকম প্রকল্প আছে কিনা আমি জানিনা। আমি বিষয়টি দেখবো।” অভিযোগের সত্যতা পর্যালোচনা পূর্বক বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সরেজমিনে সুষ্ঠুভাবে তদন্ত করলে আসল রহস্য বেড়িয়ে আসবে। অবিলম্বে চলমান কাজটি বন্ধ রাখা অত্রস্থানে স্লুইস গেট নির্মাণের পরিবর্তে ১টি ব্রীজ নির্মাণের ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী জানিয়েছে সচেতন মহল ও ভূক্তভোগি এলাকাবাসী।