শ্যামনগরে ভাতার কার্ড দাবি করায় বাঘ বিধবার উপর ক্ষোপলেন ইউপি সদস্য নিপা
শ্যামনগর প্রতিনিধি :দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলের সুন্দরবন সংলগ্ন সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার মুন্সিগঞ্জ জেলে পল্লীর বাঘ বিধবা আন্ধারী রানী (৬৫)। অভাব-অনাটনে নিত্য দিনের সঙ্গী হয়ে বেঁচে আছে জেলে পল্লীতে। বাঘ বিধবা পল্লীতে
যে কেউ প্যান্ট শার্ট পরা ভদ্রলোক অথবা সংবাদকর্মী তাদের খোঁজ খবর নিতে চাইলে অভাব দুঃখ কষ্টের কথাগুলো বলতে চান বাঘবিধবা সোনা মনি, দীপালি, আন্দারি, বুলিদাসীসহ এই এলাকার বাঘ বিধবারা। উপকূলের দীর্ঘদিন বাঘ বিধবাদের করুন কথা গুলি জোরেশোরে লেখনীর মাধ্যমে উঠে আসছে গণমাধ্যম কর্মীদের নাড়া-চাড়ায়। এতে আরো উঠে এসেছে এ এলাকার বিভিন্ন জনপ্রতিনিধিদের গাফিলতের চিত্র।
অভিযোগ, বিভিন্ন সময়ে বাঘ বিধবারা তাদের কষ্টের কথাগুলি বিভিন্ন মাধ্যমে জানাতে গিয়ে এই এলাকার জনপ্রতিনিধিদের গাফিলতের কথা বলেন । মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আবুল কাশেম মোড়লের সময়ে একই চিত্র লক্ষ্য করা গেছে উঠেছে উঠে এসেছে সংবাদকর্মীদের কলম চিত্রে। সময়ের প্রেক্ষাপটের কারণেই তার ক্ষোপ জালালেন মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়নের ১,২,৩ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত নারী ইউপি সদস্য নিপা চক্রবর্তী।
জানা যায়, সাম্প্রতি কোন একটি অনুষ্ঠানে অতিথি আসনে বসা ইউপি সদস্য নিপা চক্রবর্তী। স্বভাবগতভাবে বাঘ বিধবারা স্থানীয় সরকার প্রতিনিধিদের সঙ্গে দেখা হলে তাদের চাওয়া, ক্ষোপ অভিমানে তাদের দুঃখের কথাগুলো তুলে ধরে। সেদিনও তার ব্যতিক্রম হয়নি। সেই অনুষ্ঠানে ওই জনপ্রতিনিধির পাশে গিয়ে বাঘ বিধবা আন্ধারী রানী ঠিক তাই কষ্টের কথা বলতে গিয়ে বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা পাওয়ার জন্য ওই নারী ইউপি সদস্যের কাছে দাবি করেন। দাবির প্রেক্ষিতে বাঘ বিধবারা সবসময় ‘সাংবাদিকদের সাথে বলে’ বলে তাদের কথাগুলো সেই ক্ষোপে আন্ধারীকে সাংবাদিকদের পাশে যেতে বলেন। এভাবে বলায় ওই বাঘ বিধবা বুকে কষ্ট নিয়ে ওই অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগ করেনস্থানীয়দের অভিযোগ, জনগণের সেবক জনপ্রতিনিধ বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা, গর্ভবতী কার্ড থেকে শুরু করে সরকারি অর্থের অপচয়সহ আত্মসাৎ এর অভিযোগ রয়েছে এই নারীর সদস্যের বিরুদ্ধে।
এ ঘটনার বর্ণনা দিয়ে ষাটোর্ধ্ব বাঘ বিধবা আন্ধারী রানী জানান, তার স্বামী মারা যাওয়ার দুই যুগ পার হলেও একটা সরকারি ভাতার কার্ড জোটেনি তার কপালে। আর সেই ক্ষোভের কথাটা ইউপি সদস্য নেতার কাছে জানাতেই তার ওপরে ক্ষেপে ওঠেন ওই নারী ইউপি সদস্য।
এ ঘটনার উদ্ধৃতি দিয়ে বাঘ বিধবা সোনামণি দাসি কান্না জনিত কন্ঠে প্রতিবেদককে প্রশ্ন করে জানতে চান, সত্যি কি আমরা ওপয়া-অলক্ষী? আমরা কি এভাবেই মরে যাব? আমাদের স্বামীকে বাঘে খাওয়াই কি আমাদের অপরাধ? আমরা কি জনপ্রতিনিধিদের কাছে কোন কিছু চাইতে পারবো না? এমন সব প্রশ্ন করতে করতে কান্নায় ভেঙে পড়েন দুই দুইটি স্বামীকে বাঘে খাওয়া এই বৃদ্ধা বাঘ বিধবা।এ ঘটনার বিষয় অস্বীকার করে নারী ইউপি সদস্য নিপা চক্রবর্তী বলেন, এমন ঘটনা ঘটেছে এটা আমার মনে পড়ে না। তবে সরকারি ভাতার কার্ড যদি আমরা না পাই তাহলে তাদের দেবো কিভাবে বলেন। কার্ডগুলো চেয়ারম্যান সাহেবরা বিতরণ করে। আমাদের কিছু করার থাকে না। তারা বারবার আমাদের বললেও আমরা কিছু করতে পারিনা।