রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে নতুন যে প্রস্তাব দিলেন ট্রাম্প

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

দীর্ঘ দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে চলমান রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ বন্ধে নতুন প্রস্তাব দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার প্রস্তাব অনুসারে, রাশিয়া ওই ইউক্রেনের সেনাদের মধ্যে একটি ৮০০ মাইল দীর্ঘ বাফার জোন প্রতিষ্ঠা করা হবে। এই বাফার জোন প্রতিষ্ঠা করবে ইউরোপীয় ও ব্রিটেনের সেনারা।

ট্রাম্পের এই প্রস্তাব এমন এক সময়ে সামনে এল, যখন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি সতর্ক করে বলেছেন, ইউরোপকে রক্ষা করতে গিয়ে রাশিয়াকে তুষ্ট করার চেষ্টা আত্মহত্যার নামান্তর হবে। এই মন্তব্যের মাধ্যমে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি মূলত রাশিয়ার সঙ্গে শান্তিচুক্তির সম্ভাবনা কঠোরভাবে নাকচ করেছেন।

ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার আগে জানিয়েছিলেন, তিনি আগামী জানুয়ারিতে দায়িত্ব গ্রহণের আগেই ইউক্রেন সংকট নিয়ে শান্তি আলোচনার উদ্যোগ নেবেন। এটি তার অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বিবেচনাধীন বেশ কয়েকটি পরিকল্পনার একটি।

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন গত বৃহস্পতিবার ট্রাম্পকে তার নির্বাচনী জয়ের পর অভিনন্দন জানান। এ সময় তিনি বলেন, ইউক্রেনের সংকট নিরসনে আলোচনা করতে মস্কো প্রস্তুত। পুতিন আরো বলেন, ‘রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক পুনরুদ্ধার এবং ইউক্রেন সংকট সমাধানে সহায়তা করতে ট্রাম্প যে ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন, তা আমার মতে, অন্তত কিছুটা মনোযোগের দাবিদার।’

নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্টের পরিকল্পনা অনুসারে, রাশিয়া ইউক্রেনের যে পরিমাণ ভূমি দখল করেছে এবং রুশ বাহিনী ইউক্রেনের রণক্ষেত্রে যে পরিমাণ অগ্রসর হয়েছে সেখানটাকেই সীমান্ত ধরে বাফার জোন প্রতিষ্ঠা করা হবে এবং ইউক্রেনকে ২০ বছরের জন্য ন্যাটোতে যোগদানের পরিকল্পনা স্থগিত রাখতে হবে।

পরিকল্পনায় আরো বলা হয়েছে, এর বিনিময়ে যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র সরবরাহ করবে, যেন রাশিয়া আবারও যুদ্ধ শুরু করতে না পারে। যুক্তরাষ্ট্র এই মিশন পরিচালনা বা তদারকিতে কোনো সেনা পাঠাবে না এবং অর্থায়নও করবে না।

ট্রাম্পের এক সহকারী মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াল স্ট্রিট জার্নালকে জানিয়েছেন, ‘আমরা প্রশিক্ষণ ও অন্যান্য সহায়তা দিতে পারি, তবে বন্দুকের নল থাকবে ইউরোপিয়ানদের হাতে। আমরা মার্কিন পুরুষ ও নারীদের ইউক্রেনে শান্তি রক্ষায় পাঠাচ্ছি না। আর আমরা এর জন্য অর্থও ব্যয় করছি না বরং পোল্যান্ড, জার্মানি, যুক্তরাজ্য এবং ফ্রান্সকে এই দায়িত্ব নিতে বলা হবে।’

এদিকে, গত বৃহস্পতিবার রাশিয়ার সোচিতে অবস্থিত একটি রিসোর্টে রুশ থিংক ট্যাংক ভলদাই ডিসকাশন ক্লাবের এক অনুষ্ঠানে পুতিনের কাছে জানতে চাওয়া হয়, ট্রাম্প যদি তাকে আলোচনার জন্য ডাকেন, তাহলে রাশিয়া কী করবে? জবাবে পুতিন বলেন, ট্রাম্প প্রশাসন চাইলে তিনি আবারও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করতে প্রস্তুত এবং ট্রাম্পের সঙ্গে সংলাপে প্রস্তুত।

পুতিনের এই বক্তব্যের পরপরই মার্কিন সম্প্রচারমাধ্যম এনবিসি নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, তিনি এখনো পুতিনের সঙ্গে কথা বলেননি। তবে তিনি মনে করেন, তাদের মধ্যে শিগগিরই কথা হবে।

সূত্র: দ্য টেলিগ্রাফ

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)