অবশেষে ডুমুরিয়া ও বিলডাকাতিয়াসহ ২৪ বিলের পানি বিকল্প পথে অপসারণের উদ্যোগ নিয়েছে প্রশাসন
আব্দুর রশিদ:ডুমুরিয়াসহ ডাকাতিয়ার বিলের পানি অবশেষে বিকল্প পথ হিসেবে ২৮/১ পোল্ডারের মধ্যদিয়ে অপসারণের সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ পানি শলুয়া নদী ভায়া কালিরঘাট, খয়রামারী, নালা ও পাশখালীর খাল দিয়ে ময়ুর নদী দিয়ে বের হবে। গতকাল শনিবার দুপুরে উপজেলা সম্প্রসারিত কমপ্লেক্স ভবন’র হলরুমে জলাবদ্ধতা নিরাশনের লক্ষ্যে জরুরী এক সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন ইউএনও মুহাম্মদ আল-আমিন। সভায় সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরের সরকারি কর্মকর্তাবৃন্দ, জনপ্রতিনিধি, সাংবাদিকবৃন্দ, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দসহ ক্ষতিগ্রস্ত দুই শতাধিক বিভিন্ন শ্রেনীপেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন। জানা যায়, বিলডাকাতিয়ার পানি দ্রুত অপসারণের লক্ষে জেলা পানি নিষ্কাশন কমিটি গত বুধবারের এক সভায় বিকল্প পথ হিসেবে ২৮/১ পোল্ডার আওতাধীন কালিরঘাট, খয়রামারী, নালা ও পাশখালী স্লুইজ গেট দিয়ে ময়ুর নদীতে নিষ্কাশনের সিদ্ধান্ত দেয়। তারই আলোকে ডুমুরিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ আল-আমিন পরদিন বৃহস্পতিবার সরেজমিনে স্লুইজ গেট পরিদর্শনে যান। এসময়ে তিনি উপস্থিত এলাকাবাসীকে বিষয়টি জানালে এলাকার লোক উত্তেজিত হয়ে জানিয়ে দেয় যে তাদের পোল্ডারের মধ্যে ভিন্ন পোল্ডারের পানি ঢুকবে না। একপর্যায়ে ইউএনও সেদিন সেখান থেকে বেমুখ হয়ে চলে আসেন। এরপর ওই বিষয় নিয়ে শনিবার উপজেলা সম্প্রসারিত কমপ্লেক্স ভবন’র হলরুমে শনিবার জরুরী সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় পক্ষে-বিপক্ষে তর্ক-বিতর্কের একপর্যায়ে সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে ইউএনও আল-আমিন বলেন, প্রাথমিকভাবে আমরা নালার স্লুইজ গেটের খালের সকল-নেট-পাটা-বাঁধ উচ্ছেদ করে ডাকাতিয়ার বিলের পানি ময়ুর নদীতে অপসারণের চেষ্টা করবো। যদি সফল হই তা হলে পরবর্তিতে বাকি গেটগুলোদিয়েও পানি নিষ্কাশনের সব ধরণের ব্যবস্থা করা হবে। তবে ওই বিলের কৃষকের যাতে ক্ষতি না হয় সেব্যাপারে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়া হবে। এসময়ে বক্তব্যদেন, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) মোঃ আরাফাত হোসেন, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ ইনসাদ ইবনে আমিন, সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা এসএম জিল্লুর রহমান রিগান, পাউবো এসডি মোঃ আতিকুর রহমান, ডুমুরিয়া থানা অফিসার ইনচার্জ মোঃ মাসুদ রানা, হরিনটানা থানা অফিসার ইনচার্জ খায়রুল ইসলাম, ডুমুুরিয়া প্রেসক্লাবের সভাপতি এসএম জাহাঙ্গীর আলম, পাউবো এসও মোঃ তরিকুল ইসলাম, গুটুদিয়া ইউপি চেয়ারম্যান শেখ তুহিনুল ইসলাম, পুজা পরিষদের নেতা নির্মল চন্দ্র বৈরাগী, ফুলতলা ইউপি চেয়ারম্যান শেখ আবুল বাশার, রঘুনাপুর ইউপি চেয়ারম্যান মনোজিত বালা, রংপুর ইউপি চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ সমরেশ মন্ডল, বিএনপি নেতা সরদার আব্দুল মালেক, শেখ সরোয়ার হোসেন, শেখ ফরহাদ হোসেন, জামায়াত নেতা হাবিবুর রহমান, জিএম আমানউল্লাহ, নিহার মন্ডল প্রমুখ।
উল্লেখ্য, ভারিবর্ষনে প্রায় ২ মাস যাবত ডুমুরিয়া ও বিলডাকাতিয়া অঞ্চলের ২৪টি বিল জলাবদ্ধ। এসব বিলের পানি শোলমারি স্লুইজ গেট দিয়ে নিষ্কাশন হয়। কিন্তু গেটের মুখে পলি পড়ার কারণে এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। এঅঞ্চলের পানি দ্রæত নিষ্কাশন করতে না পারলে চলতি মৌসুমে প্রায় ৫০ হাজার হেক্টর জমির বোরো ধান উৎপাদন অনিশ্চিত হয়ে পড়বে।