শ্যামনগরের যশোরেশ্বরী কালী মন্দিরে মুকুট চুরির মামলা গ্রেপ্তারকৃত অপূর্ব সাহার জামিন মঞ্জুর

রঘুনাথ খাঁঃ গত ১০ অক্টোবর সাতক্ষীরার শ্যামনগরে শ্রীশ্রী যশোরেশ্বরী কালী মন্দিরে মা কালীর মাথার স্বর্ণের মুকুট চুরির ঘটনায় দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তারকৃত পাঁচজনের মধ্যে অপূর্ব সাহার জামিন মঞ্জুর করেছে আদালত। সোমবার সাতক্ষীরা জেলা ও দায়রা জজ চাঁদ মোঃ আব্দুল আলীম আল রাজী পুলিশ প্রতিবেদন না আসা পর্যন্ত এ জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন।
ঘটনার বিবরনে জানা যায়, ২০২১ সালের ২৭ মার্চ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী যশোরেশ্বরী কালীমন্দির পরিদর্শনে এসে কালী মাতাকে সোনার মুকুট পরিয়ে দিয়েছিলেন। গত ১০ অক্টোবর বিকেলে মুকুটটি চুরি হয়। মন্দিরের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজে এক যুবককে মুকুটটি চুরি করে নিয়ে যেতে দেখা যায়। ঘটনার তদন্তে নেমে ওই দিন বিকেলে পুলিশ ঈশ্বরীপুর গ্রামের মৃত ছিদাম সরকারের স্ত্রী ও মন্দিরের সেবায়েত রেখা সরকার (৪৫),একই গ্রামের অখিল চন্দ্র সাহার ছেলে অপুর্ব কুমার সাহা (৪৬),মৃত গোকুল চন্দ্র সাহার ছেলে সঞ্জয় বিশ্বাস ও শ্রীফলাকাটি এলাকার হরেণ বিশ্বাসের স্ত্রী পারুল বিশ্বাস ও মন্দিরের পূজারী দীলিপ চ্যাটার্জিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে। পরে দীলিপ চ্যাটার্জীকে ছেড়ে দেওয়া হয়।এ ঘটনায় মন্দিরের সেবায়েত জ্যোতিপ্রকাশ চট্টোপাধ্যায় বাদি হয়ে অজ্ঞাত আসামীদের বিরুদ্ধে ১১ অক্টোবর শ্যামনগর থানায় ১২ নং মামলা দায়ের করেন। মামলাটির তদন্তভার জেলা গোয়েন্দা পুলিশের উপপরিদর্শক আহম্মেদ কবীরের উপর ন্যস্ত করা হয়। ওইদিন শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার পর পুলিশ ওই চারজনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে ও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিনের রিমাÐ আবেদন জানিয়ে আদালতে পাঠায়। আদালতে নেওয়ার পরপরই তাদের রিমাÐ শুনানী হয়। আদালত তাদের প্রত্যেককের একদিন করে রিমাÐ মঞ্জুর করে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ১২ অক্টোবর সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার পর ওই আসামীদের আদালতে আনা হয়। এরমধ্যে আসামী রেখা সরকার নিজেকে ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার কথা উল্লেখ করে রাত সাড়ে ৮টার দিকে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। এ ছাড়াও এ মামলায় পুলিশ ঢাকা থেকে গত ২২ অক্টোবর স¤্রাট ফারুক নামে এক আসামীকে গ্রেপ্তার করে। ২৩ অক্টোবর ওই আসামী বিচারিক হাকিম সুজাতা আমিনের কাছে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।এদিকে মন্দির সংশ্লিষ্ট চার আসামীর স্বজনদের অভিযোগ, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য চারজনকে পুলিশ নিয়ে গেলেও পরদিন শুক্রবার সন্ধ্যার পর আদালতে নিয়েই তাদের রিমাÐ শুনানী করা হয়। এতে তারা আইনজীবী নিয়োগ করতে পারেননি। ফলে তাদের রিমাÐ মঞ্জুর হয়েছে।এ ব্যাপারে সাতক্ষীরা জজ কোর্টের আইনজীবী অ্যাড, মিজানুর রহমান পিন্টু মুকুট চুরির মামলার আসামী অপূর্ব সাহার জামিনে মুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। একইসাথে আগামিকাল মঙ্গলবার সঞ্জয় বিশ্বাস ও পারুল বিশ্বাসের জামিন শুনানীর দিন ধার্য আছে বলে নিশ্চিত করেন তিনি।মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের উপপরিদর্শক আহম্মদ কবীরের সঙ্গে যোগযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)