প্রয়োজনের চেয়ে বেশি বা কম পানি খেলেই বিপদ!

স্বাস্থ্য ডেস্ক:

পানি খাওয়া শরীরের জন্য অপরিহার্য। কারণ পানিই যে জীবন। প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি না খেলে শরীরে পানিশূন্যতা তৈরি হবে। আর তার রেশ বেশ মারাত্মক।

তবে অনেকেই জানেন না যে, পানি বেশি খেলেও কিন্তু শরীরের চরম ক্ষতি হতে পারে। পরিমাণের বেশি পানি খেলে কিডনি ছেঁকে বের করতে পারবে না, ফলে কোষে কোষে সেই পানি জমে শরীরের অন্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের ক্ষতি করবে।

বেশি পানি খেলে মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা কমে যেতে পারে। এমনকি, প্রয়োজনের বেশি পানি খেলে কিছু ক্ষেত্রে মৃত্যুর ঝুঁকিও থেকে যায়। চিকিৎসার পরিভাষায় একে বলে ‘ওয়াটার ইনটক্সিকেশন’।

বেশি পানি খাওয়া ক্ষতিকর কেন?

এই বিষয়ে চিকিৎসকরা বলেছেন, পিপাসা না পেলেও অল্প সময়ের মধ্যে যদি অতিরিক্ত পানি খেতে শুরু করে দেন কেউ, তাহলে তার রক্তে সোডিয়ামের ঘনত্ব দ্রুত কমতে থাকবে। এক-আধ দিনের অভ্যাসে ক্ষতি নেই। তবে প্রতিদিনই যদি ঘণ্টায় ঘণ্টায় লিটার লিটার পানি বা তরল খাবার কেউ খেতে শুরু করেন, তাহলে তা বিপজ্জনক হতে পারে। তেমন কোনো রোগব্যাধি না থাকলে, একজন সুস্থ ও প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের সারা দিনে ৩ থেকে ৪ লিটার পানি খাওয়া জরুরি। তবে তা-ও নির্ভর করে তিনি কতটা পরিশ্রম করছেন তার উপরে। এবার যদি তিনি দিনে ৬ থেকে ৭ লিটার পানি পান শুরু করেন এবং কায়িক পরিশ্রমও কম হয়, তখন তা শরীরের ক্ষতি করবে। রক্তে সোডিয়াম ও অন্য খনিজ লবণের মাত্রা কমে যাবে। যাকে চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় বলা হয় ‘হাইপোন্যাট্রেমিয়া’। এই অবস্থা তৈরি হলে শরীরের নানা অঙ্গের কার্যক্ষমতা কমতে থাকবে।

এই বিষয়ে চিকিৎসকের মত, শরীরের প্রতি কোষেরই নির্দিষ্ট ধারণক্ষমতা থাকে। কিন্তু তার বেশি হয়ে গেলে তখন শরীরে প্রদাহ শুরু হবে। অতিরিক্ত পানি শরীরে জমতে থাকলে হাত-পা, গোড়ালি ফুলতে শুরু করবে। পেটে পানি জমতে থাকবে, যা চাপ দেবে যকৃৎ ও পাকস্থলীকে। এর জেরে শরীরে পানি ও লবণের ভারসাম্য বিগড়ে যাবে, তখন হরমোনের সমস্যাও দেখা দেয়।

কে, কতটা পরিমাণ পানি খাবেন, তা নির্ভর করে সেই ব্যক্তির ওজন, শারীরিক সক্রিয়তা এবং সামগ্রিক কাজকর্মের উপর। তেমন কোনো শারীরিক জটিলতা না থাকলে সারা দিনে ২ থেকে ৩ লিটার পর্যন্ত পানি খাওয়া যায়। তবে, ঘণ্টায় ১ লিটারের বেশি পানি না খাওয়াই ভালো।

চিকিৎসকের কথায়, মানুষের শরীরে ৫০-৬০ ভাগ পানি থাকে। পানি, খনিজ লবণ ও ইলেক্ট্রোলাইটের ভারসাম্য বজায় থাকলেই শরীর সুস্থ ও তরতাজা থাকে। এই ভারসাম্য যদি নষ্ট হয়ে যায়, তখন বিভিন্ন অসুখবিসুখ দেখা দিতে থাকে। বুকে ব্যথা, শ্বাসকষ্টও হতে পারে। এমন অবস্থা তৈরি হলে চিকিৎসকের কাছে যেতেই হবে। পাশাপাশি, ঘন ঘন চা বা কফি খাওয়া বন্ধ করতে হবে। অ্যালকোহল ছোঁবেনই না। বেশি করে খেতে হবে সবুজ শাকসবজি, ফল। কম তেলে রান্না করা খাবার খেতে হবে ও প্রশিক্ষকের পরামর্শ নিয়ে শরীরচর্চা করতে হবে।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)