খাজরা ইউপি চেয়ারম্যান শাহানেওয়াজ ডালিম গ্রেপ্তার
রঘুনাথ খাঁঃ গত ৫ আগষ্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশত্যাগের পর সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগর ইউনিয়নের নাকনা গ্রামের বাড়ির সামনে বিক্ষোভ মিছিলে চেয়ারম্যান জাকির হোসেন গুলি করে তিনজনকে হত্যার ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় খাজরা ইউপি চেয়ারম্যান শাহানেওয়াজ ডালিমকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। রবিবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে পুলিশ সাতক্ষীরা শহরের পলাশপোলের হোটেল সীমান্ত থেকে গ্রেপ্তার করে।শাহানেওয়াজ ডালিম আশাশুনি উপজেলার গদাইপুর গ্রামের মোজাহার সরদারের ছেলে।
জানা যায়, চলতি বছরের ৫ আগষ্ট বৈষম্য বিরোধী কোটা সংস্কার আন্দোলনকারিদের আন্দোলনের মুখে দেশ ছাড়তে বাধ্য হন আওয়ামী লীগ সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওইদিন বিকেলে একটি বিক্ষোভ মিছিল প্রতাপনগর ইউপি চেয়ারম্যান জাকির হোসেনের বাড়ির সামনে পৌঁছালে বাড়ির ছাদ থেকে মিছিল লক্ষ্য করে নিজের লাইসেন্সকৃত বন্দুক থেকে গুলি চালান চেয়ারম্যান। এতে কল্যানপুর গ্রামের নূর হাকিম ঘরামীর ছেলে আবুল বাশার আদম, কুড়িকাহনিয়া গ্রামের আব্দুল আরেজ এর ছেলে হাফেজ আনাজ ও হিজলিয়া গ্রামের রহিম সরদারের ছেলে আলম সরদার মারা যান। গুলিবিদ্ধ হয়ে জখম হন কমপক্ষে ১০ জন। একজনের পা কেটে ফেলতে হয়। চেয়ারম্যানের গুলিতে হাতহত হওয়ার খবর পেয়ে আন্দোলনকারিরা বাড়ির ছাদে উঠে চেয়ারম্যান জাকির হোসেনকে জবাই করে হত্যা করে। এ ছাড়া তার ভাইপো আবিদ হোসেন, আওয়ামী লীগ নেতা জাহাঙ্গীর আলম, আসিফ রেজা, শাহীন হোসেন ও শাকেভ হোসেনকে পিটিয়ে হত্যার পর লাশ নীচে ফেলে দেওয়া হয়। পরদিন ময়না তদন্ত ছাড়াই স্থানীয়রা নয়টি লাশ দাফন করে। জাকির হোসেনের বাড়ি, ভাই আসাদুরের বাড়িতে ভাংচুর , লুটপাট অগ্নিসংযোগ ও আন্দোলনকারিদের হামলায় জাকির হোসেনসহ ছয়জনের মৃত্যুর ঘটনায় তার ভাই অজিয়ার রহমান বাদি হয়ে ২২ আগষ্ট অজ্ঞাতনামা ১০০০/১৫০০ জনের বিরুদ্ধে আশাশুনি থানায় মামলা দায়ের করেন। একইভাবে চেয়ারম্যানের গুলিতে কল্যানপুর গ্রামের নূর হাকিম ঘরামীর ছেলে আবুল বাশার আদম, কুড়িকাহনিয়া গ্রামের আব্দুল আরেজ এর ছেলে হাফেজ আনাজ ও হিজলিয়া গ্রামের রহিম সরদারের ছেলে আলম সরদার মারা যাওয়ার ঘটনায় হিজলিয়া গ্রামের রহিম সরদার ১৫ আগষ্ট অজ্ঞাতনামা ১০/১২ জনের বিরুদ্ধে আশাশুনি থানায় মামলা(৩নং) দায়ের করেন । এ মামলার কথা গোপন রেখে কল্যাণপুর গ্রামের নিহত আবুল বাশার আদমের দূর সম্পর্কের আত্মীয় আব্দুল মজিদ বাদি হয়ে ২ সেপ্টেম্বর সাতক্ষীরার ৮নং আমলী আদালতে সিআর-৩৩০/২৪ নং মামলা দায়ের করেন। মামলায় উপজেলা চেয়ারম্যান এবিএম মোস্তাকিমসহ ৩০ জনকে আসামী শ্রেণীভুক্ত করা হয়। থানায় মামলার বিষয়টি আদালতকে অবহিত করায় আব্দুর রহিমের মামলাটির কার্যক্রম চলমান রেখে সিআর মামলার কার্যক্রম বাতিল করা হয়।
আশাশুনি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ নজরুল ইসলাম জানান, হিজলিয়া গ্রামের আব্দুর রহিমের দায়েরকৃত হত্যা মামলায় শাহানেওয়াজ ডালিমকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে সোমবার আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।