যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে মারপিট, একাধিক নারীর সাথে অবৈধ সম্পর্ক রাখায় শিক্ষক স্বামীর শাস্তির দাবি
নিজস্ব প্রতিনিধি : যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে মারপিট এবং একাধিক নারীর সাথে অবৈধ সম্পর্ক রাখায় শিক্ষক স্বামীর শাস্তির দাবি জানিয়েছেন স্ত্রী। আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে ভুক্তভোগী স্ত্রী আশুরা খাতুন জেলা শিক্ষা অফিসারসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগও দায়ের করেছেন।
জানা গেছে, ১৯৯৮ সালে তালা শাহজাতপুর গ্রামের মৃত মো: আরমান আলী মোড়লের পুত্র ডুমুরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আব্দুর রাজ্জাকের সাথে বিবাহ হয় দক্ষিণ দরগাহপুর গ্রামের মোহর আলীর কন্যা আশুরা খাতুনে। বিবাহের পর থেকে বিভিন্ন সময়ে যৌতুকের জন্য অত্যাচার নির্যাতন করত আব্দুর রাজ্জাক। কিন্তু সংসার টিকিয়ে রাখতে তিনি সকল অত্যাচার সহ্য করে আসলেও বিবাহের কয়েক বছর পর থেকে তিনি জানতে পারেন আব্দুর রাজ্জাক শিক্ষক হলেও চরিত্র ভালো। বিভিন্নভাবে সুন্দরী নারীদের ফাঁদে ফেলে ধর্ষন, বিবাহের নাটক সাজিয়ে অবৈধ মেলামেশার ঘটনা সামনে আসে। এক শিক্ষার্থীকে পড়ানোর সুযোগে শিক্ষার্থীর মা পাইকগাছা উপজেলার বাসিন্দা রিক্তার সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে। শিক্ষক আব্দুর রাজ্জাক তাকে বিবাহের প্রলোভনে দৈনিক সম্পর্ক গড়ে তোলে। তবে পরবর্তীতে আব্দুর রাজ্জাক বিষয়টি অস্বীকার করলে ওই নারী সাতক্ষীরা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতে একটি মামলা করে। মামলাটি তদন্তের জন্য আদালত সিআইডিকে নির্দেশ দেন। যদিও পরবর্তীতে মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে বিষয়টি মিমাংসা করে নেয় ওই নারী। এছাড়া বিবাহের প্রতিশ্রæতিতে খরিয়াটি গ্রামের এক নারীর সাথে বিবাহ বর্হিভ‚ত মেলা মেশা করে পরবর্তীতে অস্বীকার করে। উপায়ন্তর হয়ে ওই নারী বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করে। এর প্রেক্ষিতে দরগাহপুর ইউনিয়ন পরিষদে শালিসীর বৈঠকে আব্দুর রাজ্জাক নিজেই তাদের বিবাহের বিষয়টি স্বীকার করে অঙ্গিকার নামায় স্বাক্ষর করেন। পরবর্তীতে ২ লক্ষ টাকার বিনিময়ে ওই নারীর সাথে মিমাংসা করেন শিক্ষক আব্দুর রাজ্জাক। ভুক্তভোগী আশুরা খাতুন জানান, আব্দুর রাজ্জাকের ঔরশে তাদের দুটি কন্যা সন্তান রয়েছে। মূলক পুত্র সন্তান না হওয়ার অযুজাতে দেখিয়ে দ্বিতীয় বিবাহের জন্য মরিয়া স্বামী রাজ্জাক। এর প্রতিবাদ করায় যৌতুকের দাবিতে তাকে মারপিট করাসহ অত্যাচারের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। এছাড়া কন্যা সন্তান দুটির ভরণ পোষণ না দিয়ে তাদের বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এই মাঝ বয়সে দুটি কন্যা সন্তানকে নিয়ে কোথায় গিয়ে দাড়াবো। উপায়ন্তর হয়ে তিনি আদালতে একটি মামলা দায়ের করেছেন। ইতোমধ্যে মামলায় আটক হয়ে কারাগারে আছেন অভিযুক্ত আব্দুর রাজ্জাক। তিনি ওই চরিত্রহীন স্বামী আব্দুর রাজ্জাকের কঠোর শাস্তির দাবিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
এবিষয়ে তালা উপজেলা শিক্ষা অফিসার গাজী সাইফুল ইসলামের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তার ব্যবহৃত নাম্বার বন্ধ থাকায় যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
তবে ডুমুরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলাম বলেন, আমি শুনেছি আব্দুর রাজ্জাক কারাগারে আছেন। আমার কাছে কেউ কোন অভিযোগ করেনি। ঘটনাটি শোনার পর উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে জানিয়ে রেখেছি