ছাত্রলীগ নিষিদ্ধের ঘটনায় আওয়ামী লীগের প্রতিবাদ

অনলাইন ডেস্ক:

অসাংবিধানিক ও অবৈধ তথাকথিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে বাঙালির মুক্তি সংগ্রাম ও স্বাধীনতা যুদ্ধে অগ্রণী ভূমিকা পালনকারী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর নিজ হাতে গড়া সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এই ঘৃণ্য ও ন্যক্কারজনক ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছে।

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনে করে, যে সংগঠন বাঙালির মুক্তি সংগ্রাম ও বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়েছে, বাংলাদেশ রাষ্ট্রের অস্তিত্বের সঙ্গে যে ছাত্র সংগঠনের নাম জড়িয়ে আছে, সেই সংগঠনকে একটি অসাংবিধানিক ও অবৈধ অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে, যা জাতির জন্য এক দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা, এক নির্মম পরিহাস। এটি বাঙালির মুক্তি সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে ১৯৭১ সালের পরাজিত শক্তির নির্মম প্রতিশোধ।

বাঙালি জাতির পিতা ও বাংলাদেশ রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠাতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশ রাষ্ট্র সৃষ্টিতে যে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ উপকরণ কাজে লাগিয়েছিলেন, ছাত্রলীগ তাদের অন্যতম। স্বাধীনতার পরে জাতির পিতা বলেছিলেন, ‘ছাত্রলীগের ইতিহাস বাঙালির ইতিহাস।’

বঙ্গবন্ধু ১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি এ সংগঠন সৃষ্টি করেছিলেন বাঙালির অধিকার আদায়, আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকার এবং সর্বোপরি মুক্তি সংগ্রামের সৈনিক হিসেবে অবদান রাখার জন্য। একটি রাষ্ট্রের জন্মের সঙ্গে এভাবে যুক্ত থাকার মতো সৌভাগ্য পৃথিবীর ইতিহাসে আর কোনো ছাত্র সংগঠনের হয়নি।

ছাত্রলীগের হাজার হাজার নেতাকর্মী মুক্তি সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধে শহিদ হয়েছে। স্বাধীন বাংলাদেশে সপরিবারে জাতির পিতাকে হত্যার পর এদেশের গণতন্ত্রের সংগ্রামে ছাত্রলীগ নেতৃত্ব দিয়েছে। এরকম একটি প্রতিষ্ঠানকে ‘সন্ত্রাসী’ আখ্যা দিয়ে অসাংবিধানিক ও অবৈধ তথাকথিত অন্তবর্তীকালীন সরকার নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। এটি মুক্তি সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ওপর এক বড় আঘাত।

১৫ জুলাই থেকে ঢাকাসহ সারাদেশে ছাত্র-পুলিশ-আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীসহ অসংখ্য মানুষকে যারা হত্যা করলো, যে হত্যাকাণ্ড আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী গণহত্যার পর্যায়ে পড়ে, সেই হত্যাকারীদের অসাংবিধানিক ও অবৈধ তথাকথিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়মুক্তি দিল। আর ছাত্রলীগের হাজার হাজার নেতাকর্মী যেখানে হত্যা ও নির্যাতনের শিকার হলো, সেই ছাত্রলীগকে অসাংবিধানিক ও অবৈধ তথাকথিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সন্ত্রাসী সংগঠন আখ্যা দিয়ে নিষিদ্ধ ঘোষণা করলো! অসাংবিধানিক ও বেআইনি কোনো গোষ্ঠীর আইনগত ও নৈতিক অধিকার নেই এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেয়ার। তাদের এ সিদ্ধান্ত অবৈধ।

তারা দেশের সব থানায় আক্রমণ করে গর্ভবতী নারী পুলিশসহ হাজার হাজার পুলিশকে হত্যা করেছে। লাখ লাখ আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী সমর্থক এবং হিন্দু-বৌদ্ধ- খ্রিস্টান ভাই-বোনদের ওপর নিপীড়ন চালিয়েছে।

দেশব্যাপী জাতির বিবেক শিক্ষকদের ওপর ‌ চলেছে ব্যাপক নির্যাতন। দেশের অর্থনীতি ধ্বংস করেছে। মানুষ আজ না খেয়ে মরছে। দেশের কোটি কোটি মানুষ এই অবৈধ অপশক্তির অপশাসন থেকে মুক্তি চাচ্ছে। প্রতিটি মুহূর্ত তাদের জন্য যন্ত্রণাদায়ক।

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনে করে, এদেশে সব অসাংবিধানিক ও অগণতান্ত্রিক শক্তির বিরুদ্ধে গণতান্ত্রিক সংগ্রামী ছাত্র সমাজের পক্ষে ছাত্রলীগ নেতৃত্ব দিয়েছে। তাই ছাত্রলীগকে এই অসাংবিধানিক ও অবৈধ গোষ্ঠী তাদের অপশাসনের বিরুদ্ধে এক হুমকি হিসেবে দেখছে।

৩০ লাখ শহিদের রক্তে লেখা এই পবিত্র সংবিধান লঙ্ঘন করে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারী স্বাধীনতাবিরোধী গোষ্ঠী ছাত্রলীগের মতো দেশের স্বাধীনতার সঙ্গে সম্পৃক্ত ঐতিহাসিক একটি সংগঠনকে নিষিদ্ধ করার মতো ঘৃণ্য ও জঘন্য কর্মকাণ্ডের আমরা তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

জয় বাংলা
জয় বঙ্গবন্ধু…
বাংলাদেশ চিরজীবী হোক…

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)