ভালো নেই প্রবীর মিত্র
বিনোদন ডেস্ক:
কিংবদন্তি অভিনেতা প্রবীর মিত্র। ১৯৬৯ সালে ‘জলছবি’ সিনেমার মাধ্যমে বড় পর্দায় তার যাত্রা শুরু হয়। নায়কের ভূমিকায় অভিনয় শুরু করলেও পরে চরিত্রাভিনেতা হিসেবে পর্দায় মুগ্ধতা ছড়িয়েছেন তিনি। দীর্ঘ চার দশকের বেশি সময়ে অভিনয় করেছেন অজস্র সিনেমায়।
ঢালিউডের পর্দায় বাংলার নবাব হিসেবে পরিচিতি রয়েছে দুজন অভিনেতার। তাদের প্রবীর মিত্র। স্কুল জীবন থেকেই ছিলেন অভিনয়ের সঙ্গে জড়িত। চলচ্চিত্র ক্যারিয়ারে দর্শকদের অনেক সুপারহিট সিনেমা উপহার দিলেও আজকাল পর্দায় দেখা মেলে না এই অভিনেতার। এর আগে জানা গিয়েছিল, প্রবীর মিত্রের দিন কাটে চার দেয়ালের মাঝে। শরীরে বাসা বেঁধেছে নানাবিধ অসুখ।
প্রবীর মিত্রের ছেলে মিঠুন মিত্র সম্প্রতি বলেন, তার বাবা (প্রবীর মিত্র) আগে থেকেই চলাফেরা করতে পারতেন না। এখনও পারেন না। সারাদিন বাসায়ই থাকেন। টিভি দেখেন, পত্রিকা পড়েন। মাঝে মাঝে বই পড়েন। শারীরিকভাবে স্থিতিশীল আছেন।
তিনি আরো বলেন, কথাবার্তা বলেন। তবে সেটি ওনার মুডের ওপর নির্ভর করে। যখন ইচ্ছা হয় তখন বলেন। তবে কথা বলতে গেলে ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন। কানেও কম শোনেন। এ ছাড়া ডিমেনশিয়া রোগ আছে। সে কারণে মাঝেমাঝে কিছু কথা ভুলে যান।
তবে মানুষজন চেনার ক্ষমতা এখনো আছে উল্লেখ করে অভিনেতার ছেলে বলেন, আমরা যারা কাছাকাছি আছি তাদের চিনতে পারেন।
আক্ষেপ করে মিঠুন জানান, এফডিসি বা অভিনয়জীবন নিয়ে খুব একটা স্মৃতিচারণ করেন না অভিনেতা। তাছাড়া চলচ্চিত্রের কেউ প্রবির মিত্রের খোঁজও নেয় না।
প্রবীর কুমার মিত্রের জন্ম ১৯৪৩ সালের ১৮ আগস্ট চাঁদপুরের নতুন বাজারে। পৈতৃক নিবাস কেরানীগঞ্জের শাক্তায়। পুরান ঢাকায় বড় হওয়া প্রবীর মিত্র স্কুলজীবন থেকেই নাট্যচর্চায় যুক্ত হন। স্কুলজীবনে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘ডাকঘর’ নাটকে অভিনয় করেন। ১৯৬৯ সালে প্রয়াত এইচ আকবরের ‘জলছবি’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য প্রথম ক্যামেরার সামনে দাঁড়ান। পরে ওই পরিচালকের জলছবি সিনেমার মধ্য দিয়ে বড় পর্দায় তার অভিষেক হয়।
‘তিতাস একটি নদীর নাম’, ‘চাবুক’-এর মতো সিনেমায় নায়কের ভূমিকায় প্রবীর মিত্রকে দেখা গেছে। এ ছাড়া ‘রঙিন নবাব সিরাজউদ্দৌলা’ চলচ্চিত্রে মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করেন তিনি। তার অভিনীত অন্যান্য উল্লেখযোগ্য সিনেমা হচ্ছে ‘জীবন তৃষ্ণা’, ‘সীমার’, ‘তীর ভাঙা ঢেউ’, ‘প্রতিজ্ঞা’, ‘অঙ্গার’, ‘পুত্রবধূ’, ‘নয়নের আলো’, ‘চাষীর মেয়ে’, ‘দুই পয়সার আলতা’, ‘আবদার’, ‘নেকাব্বরের মহাপ্রয়াণ’ ইত্যাদি।
কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ ১৯৮২ সালে মহিউদ্দিন পরিচালিত ‘বড় ভালো লোক ছিলো’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান প্রবীর মিত্র। ২০১৮ সালে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে তাকে আজীবন সম্মাননা পান তিনি। সর্বশেষ প্রবীর মিত্র এসডি রুবেল পরিচালিত ‘বৃদ্ধাশ্রম’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। এরপর আর কোনো চলচ্চিত্রে অভিনয় করেননি তিনি।