সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা নিয়ে মিললো বিশাল সুখবর
অনলাইন ডেস্ক:
সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা নিয়ে বিশাল সুখবর আসছে। জানা গেছে, পুরুষের জন্য চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ বছর এবং নারীদের জন্য ৩৭ বছর করে অন্তর্বর্তী সরকারকে সুপারিশ দিয়েছে পর্যালোচনা কমিটি।
শনিবার সন্ধ্যায় কমিটির সদস্য সদ্য জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগের সচিব হিসেবে পদোন্নতি পাওয়া (আগের অর্থ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, কমিটির সুপারিশের প্রতিবেদন গত মঙ্গলবার প্রধান উপদেষ্টার দফতরে জমা দেওয়া হয়েছে। এ প্রতিবেদন নিয়ে উপদেষ্টা পরিষদের সভায় আলোচনা হবে। সেখান থেকে চাকরিতে প্রবেশের বয়স বাড়ানোর বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসবে।
বর্তমানে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের সাধারণ বয়স ৩০ বছর। তবে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান কোটায় আবেদনের সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৩২ বছর।
চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ বছর করার দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছেন একদল চাকরিপ্রত্যাশী। ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে দেশে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর কয়েক দফায় কর্মসূচি পালন করেছেন তারা।
সম্প্রতি কয়েকশ’ চাকরিপ্রত্যাশী শাহবাগে সমবেত হন। একপর্যায়ে তারা প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার সামনে এসে অবস্থান নেন। সেদিন তাদের ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাসের শেল ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে পুলিশ। এরপরও চাকরিপ্রত্যাশীরা প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে নিজেদের দাবি জানান।
এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে গত ৩০ সেপ্টেম্বর দাবির বিষয়টি পর্যালোচনায় একটি কমিটি গঠন করে সরকার। এই কমিটির প্রধান করা হয়েছিল সাবেক সচিব আবদুল মুয়ীদ চৌধুরীকে, যিনি জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধান। কমিটির সদস্যসচিব ছিলেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব। কমিটিতে আরো তিনজন সদস্য ছিলেন।
এই কমিটির দায়িত্ব ছিল চাকরিপ্রার্থীদের সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বৃদ্ধির দাবির পরিপ্রেক্ষিতে বিষয়টি পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও পর্যালোচনা করে সুপারিশ প্রণয়ন করে জমা দেওয়া। এক সপ্তাহ পর সরকারের কাছে সুপারিশ দিয়েছে তারা।
এতে বলা হয়েছে, সরকারি চাকরির আবেদনে পুরুষের বয়স হবে সর্বোচ্চ ৩৫ বছর, আর নারীদের ৩৭ বছর। উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসতে পারে।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এই কমিটির সাচিবিক সহায়তায় ছিল।
বয়স বৃদ্ধির দাবিতে যারা আন্দোলন করছেন, তাদের সঙ্গেও সম্প্রতি বসেছিল কমিটি। সেদিন কমিটির প্রধান আবদুল মুয়ীদ চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেছিলেন, সার্বিক পরিস্থিতির আলোকে, সরকারের বর্তমান নীতিমালা ও ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা এবং সবকিছু চিন্তা করে এ বিষয়ে তারা সিদ্ধান্ত দেবেন। তবে তাদের (আন্দোলনকারী) যে বক্তব্য, বয়স বৃদ্ধির যৌক্তিকতা আছে। এ বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই।
সেশনজট, করোনাসহ বিভিন্ন কারণে চাকরিতে প্রবেশের বিদ্যমান বয়স বাড়ানো উচিত বলেও মনে করেন তিনি।
বিভিন্ন দেশের উদাহরণ দিয়ে মুয়ীদ চৌধুরী বলেছিলেন, এটা (চাকরিতে প্রবেশের বয়স) বাড়ানো দরকার।