শান্তদের সিরিজ হার
স্পোর্টস ডেস্ক:
আন্তর্জাতিক টি-২০ ক্রিকেটকে বিদায় জানিয়ে রাখা মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ব্যাট হাতে একা লড়লেন। বাকি ব্যাটাররা ড্রেসিং রুমে আসা-যাওয়াতেই ব্যস্ত ছিলেন। ফলাফল, ভারতের বিপক্ষে ৮৬ রানের বিশাল পরাজয়। এক ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ হারের স্বাদ পেলো বাংলাদেশ।
বুধবার দিল্লিতে টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নামা ভারত পায় ৯ উইকেটে ২২১ রানের বড় পুঁজি। জবাবে ব্যাটিং ব্যর্থতার পুনরাবৃত্তি ঘটিয়ে রানের বিশাল লক্ষ্য তাড়ায় বাংলাদেশ ৯ উইকেটে ১৩৫ রানেই থামে।
আর্শদীপ সিংয়ের প্রথম ওভারে আসে ১৪ রান। তিনটি চার মারেন পারভেজ হোসেন ইমন। তৃতীয় ওভারে এই ওপেনার আর্শদীপের বলে ব্যক্তিগত ১৬ রানে বোল্ড হন। পঞ্চম ওভারে ড্রেসিংরুমে ফেরেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। ওয়াশিংটন সুন্দরের বলে লং অনে হার্দিক পান্ডিয়ার হাতে ক্যাচ দিয়ে ১১ রান করে তিনি মাঠ ছাড়েন।
বেশিক্ষণ ক্রিজে টেকেননি লিটন দাস। তার ব্যাটে আসে ১৪ রান, বরুণ চক্রবর্তী তাকে বোল্ড করেন। বাঁহাতি স্পিনার অভিষেক শর্মার বলে বোল্ড হন মাত্র ২ রান করা তাওহীদ হৃদয়। মিরাজ ব্যক্তিগত ১৬ রানে রিয়ান পরাগের বলে বদলি ফিল্ডার রবি বিষ্ণোইয়ের হাঁতে ধরা পড়েন। তার অল্প কিছুক্ষণ পর মায়াঙ্ক যাদবের বলে উড়িয়ে মারতে গিয়ে ডিপ স্কয়ার লেগে ওয়াশিংটন সুন্দরের ক্যাচে পরিণত হন জাকের।
৯ রান করা রিশাদ স্পিনার বরুণের শিকার হন। তানজিম সাকিবের ব্যাটে আসে ৮ রান। টি-২০ সুলভ ব্যাটিং না করলেও রিয়াদের ৩৯ বলে ৩ ছক্কায় ৪১ রানের ইনিংসটি একশর নিচে টকে যাওয়ার লজ্জা থেকে অতিথি দলকে বাঁচায়। তার উইকেট দখলে নেন নিতীশ কুমার রেড্ডি।
টিম ইন্ডিয়ার হয়ে নিতীশ ও বরুণ দুই উইকেট শিকার করেন। একটি করে উইকেট ঝুলিতে ভরেন আর্শদীপ, ওয়াশিংটন, অভিষেক, মায়াঙ্ক, পরাগ।
এর আগে দলীয় ৪১ রানের ভেতর ভারতের টপ অর্ডারের তিন ব্যাটারের উইকেট তুলে নিয়েও বাংলাদেশের বোলাররা লাগাম ধরে রাখতে পারেনি। নিতীশ কুমার রেড্ডি ও রিংকু সিংয়ের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে ভর করে পেয়েছে ৯ উইকেটে ২২১ রানের বিশাল স্কোর। খানিক পর ২২২ রানের বড় লক্ষ্য তাড়ায় ব্যাটিংয়ে নামবে বাংলাদেশ।
বুধবার টসে জিতে ফিল্ডিং নিয়ে মেহেদী হাসান মিরাজের হাতে বল তুলে দিয়েছিলেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। ব্যয়বহুল ওভারটিতে আসে ১৫ রান। দ্বিতীয় ওভারে এসেই অবশ্য উইকেটের দেখা পান তাসকিন আহমেদ। শর্ট বল মারতে গিয়েছিলেন সাঞ্জু স্যামসন। বল অবশ্য ত্রিশ গজ বৃত্ত পার হয়নি। মিড অনে থাকা শান্তর হাতে ধরা পড়ে ব্যক্তিগত ১০ রানে ফেরেন।
পরের ওভারে আক্রমণে এসে তানজিম হাসান সাকিবের বলে বোল্ড হন ১৫ রান করা অভিষেক শর্মা। ষষ্ঠ ওভারে অবশ্য টিম ইন্ডিয়ার অধিনায়ক সূর্যকুমারের মূল্যবান উইকেট পান মুস্তাফিজ। ব্যক্তিগত ৮ রানে এই ব্যাটার মিড অফে নাজমুল হোসেন শান্তর তালুবন্দি হন।
নীতিশ ব্যক্তিগত ৫ রানে ক্যাচ দিয়ে পেয়েছিলেন জীবন। তানজিম হাসান সাকিবের শর্ট বল পুল করতে গিয়েছিলেন। বল তার ব্যাটে লেগে উইকেটের পেছনে চলে যায়। লাফিয়ে বল ধরার চেষ্টায় লিটন তা গ্লাভসে ছোঁয়া লাগাতে পারলেও ধরতে ব্যর্থ হন। ফলে পঞ্চম ওভারে স্বাগতিকদের ইনিংসের পড়েনি উইকেট নিতীশ জীবন পান।
ষষ্ঠ ওভারে অবশ্য টিম ইন্ডিয়ার অধিনায়ক সূর্যকুমারের মূল্যবান উইকেট পান মুস্তাফিজ। ব্যক্তিগত ৮ রানে এই ব্যাটার মিড অফে নাজমুল হোসেন শান্তর তালুবন্দি হন।
নিতীশ কুমার রেড্ডির সঙ্গে বাইশ গজে ঝড় তুলে চতুর্থ উইকেটে ১০৮ রানের জুটি গড়ে ভারতকে বিশাল সংগ্রহের পথে এগিয়ে নেন রিংকু সিং। চতুর্থ উইকেটে তারা ১০৮ রানের জুটি গড়েন। মাঝে ১৮ রানে থাকা অবস্থায় আম্পায়ার্স কলে লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়া থেকে বেঁচে যান নিতীশ। সুযোগ কাজে লাগিয়ে বাইশ গজে ঝড় তুলে ২৭ বলে আন্তর্জাতিক টি-২০তে প্রথম ফিফটির দেখা পান নিতীশ। মুস্তাফিজুর রহমানের বলে এক্সট্রা কভারে মেহেদী হাসান মিরাজের ক্যাচে পরিণত হয়ে ড্রেসিংরুমে ফেরার আগে ৩৪ বলে ৪টি চার ও ৭ ছক্কায় ৭৪ রানের ইনিংস খেলেন।
তাসকিন আহমেদের বলে জাকের আলী অনিকের তালুবন্দি হয়ে থামে রিংকুর ইনিংস। তার আগে আগে করেন ২৯ বলে ৫ চার ও ৩ ছক্কায় ৫৩ রান। সাজঘরে ফেরার আগে পঞ্চম উইকেটে হার্দিকের সঙ্গে যোগ করেন ৩৬ রান।
ভারতের স্কোর দুইশ পেরোনোর পর ৬ বলে ২ ছক্কায় ১৫ রান করা রিয়ান পরাগের ক্যান নেন রিয়াদ, দ্বিতীয় উইকেটের দেখা পান তাসকিন। এরপর ১৯ বলে ২ চার ও ২ ছক্কায় ৩২ রানের ক্যামিও ইনিংস খেলা হার্দিকের উইকেট তোলেন রিশাদ হোসেন। এই টাইগার লেগস্পিনার বরুণ চক্রবর্তী ও আর্শদীপ সিংকেও ফেরান। শেষ ৮ রান যোগ করতে ৪ উইকেট হারানো ভারত অবশ্য ততক্ষণে পেয়ে গেছে বড় স্কোর।
বাংলাদেশের পক্ষে ৩ উইকেট পেলেও ব্যয়বহুল বোলিংয়ে রিশাদ ৪ ওভারে দেন ৫৫ রান। তাসকিন ছিলেন বেশ নিয়ন্ত্রিত, ৪ ০ভারে ১৬ রানে তার শিকার ২ উইকেট। মুস্তাফিজ ৩৬ রান খরচায় ২ উইকেট পকেটে পুরেন। তানজিম সাকিব ২ উইকেট পেলেও বল হাতে খরচ করেন ৫০ রান।