পাইকগাছায় শারদীয় দুর্গোৎসবের ১৩০টি মণ্ডপ প্রস্তুত
শাহরিয়ার কবির:সারাদেশের ন্যায় খুলনার পাইকগাছাতে শারদীয় দূর্গাপূজা উপলক্ষে সাজ সজ্জার কাজ সম্পন্ন হয়েছে। দরজায় কড়া নাড়ছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। ৯ অক্টোবর ষষ্ঠী পূজার মধ্যদিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হবে এবারের শারদীয় দুর্গা উৎসব। এই উৎসবকে ঘিরে ইতিমধেই পূজা মণ্ডপের সকল ধরণের প্রস্তুতি শেষ করা হয়েছে। আর প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিরাপত্তার চাদরে মুড়িয়ে দেয়া হয়েছে স্ব স্ব মন্ডপ। সব মিলিয়ে পাইকগাছায় শারদীয় উৎসব পালনে ১৩০টি পূজা মন্ডপ প্রস্তুত থাকায় খুশির আমেজ বিরাজ করছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের পাড়ায় পাড়ায়। জানা যায়, খুলনার পাইকগাছা উপজেলায় এবার মোট ১৩০টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা উদযাপনে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। এর মধ্যে পাইকগাছা পৌরসভায় ৬টি, ১নং হরিঢালী ইউনিয়নে ১৮টি, কপিলমুনি ইউনিয়নে ১৬টি, লতায় ৯টি, দেলুটিতে ১০টি, সোলাদানায় ১০টি, লস্করে ১৪টি, গদাইপুরে ৭টি, রাড়ুলীতে ১৮টি, চাঁদখালীতে ১২টি ও গড়ইখালী ইউনিয়নে ১০টি। উপজেলার বিভিন্ন মন্ডপে সরেজমিনে ঘুরে প্রতিমা শিল্পীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, একটি প্রতিমা তৈরি করতে শিল্পীদের সর্বনিম্ন ২৫-৩০ হাজার টাকা খরচ হয়। প্রতিমা তৈরির জন্য তাদের ৩ থেকে ৪ ভ্যান মাটি লাগে, খড়ের আউর লাগে ৫ থেকে ৬ পৌন। এছাড়াও কাঠ, বাঁশ, দড়ি, পেরেক, সুতা ও ধানের গুড়াসহ বিভিন্ন জিনিসের প্রয়োজন হয়। প্রতিমা তৈরিতে ৪-৫ জন শিল্পী একসঙ্গে কাজ করেন। একেকজন শিল্পী প্রতিমার এক এক কাজে হাত দেন বলেও জানান প্রতিমা শিল্পীরা। এসময় ভক্তরা জানান, দেবীদুর্গা আসবেন তাই ঢাক, ঢোল,শঙ্খধ্বনি আর উলুধ্বনি দিয়ে দেবীদুর্গাকে বরণ করে নেওয়ার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন তারা। শরতের শিশির ভেজা কাঁশফুলই শারদীয় দুর্গোৎসবের আগমনী বার্তা দেয়। আর দুর্গোৎসব ঘিরে নানা আয়োজনে ব্যস্ত হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ। উৎসবের আমেজ ছড়িয়ে পড়েছে সব ধর্ম ও শ্রেণির বাঙালির মধ্যেও। পূজার আনন্দে মাতোয়ারা বাঙালি জাতি। মন্দিরে মন্দিরে চলছে দুর্গোৎসব উদযাপনের শেষ প্রস্তুতি। আর আয়োজকদের ফরমায়েশ আর ডিজাইন অনুযায়ী গড়ে তোলা হয়েছে পূজামণ্ডপ। এদিকে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলের সহযোগিতায় শারদীয় দুর্গাপূজা সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে অনুষ্ঠিত হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন উপজেলাবাসী। সর্বোপরি, জাতির মঙ্গল কামনায় সব অশুভ শক্তি বিনাশে প্রতিবছর মহালয়ার দিনে দেবী দূর্গা শ্বশুরালয় থেকে পিতৃগৃহে আগমন করেন। আসুরিক শক্তির বিনাশ আর পার্থিব শান্তি, কল্যাণ ও সমৃদ্ধি লাভের জন্য হিন্দু সম্প্রদায় যুগ যুগ ধরে মা দূর্গার আরাধনা করে আসছেন। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহেরা নাজনীন ও অফিসার ইনচার্জ (ভারপ্রাপ্ত) তুষার কান্তি দাশ জানান, উপজেলায় মোট ১৩০টি পূজা মন্দিরে অনুষ্ঠিত হবে দুর্গাপূজা। সে কারণে উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসন যথাসম্ভব নিরাপত্তা ও নিরাপদে শারদীয় দুর্গাপূজা সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে পালনের ব্যাপারে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।