শ্রীউলায় ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে ৫০ পরিবারকে পানিবন্ধী করে রাখার অভিযোগ
জি এম মুজিবুর রহমান: আশাশুনি উপজেলার শ্রীউলায় পানি আটকে রেখে ৫০ পরিবারকে পানিবন্দি করে রাখা ও প্রতিপক্ষকে লাঞ্চিত করার অভিযোগ উঠেছে এক ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে। অবিলম্বে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন পানিবন্দি পরিবারগুলি।
গতকাল রবিবার সরজমিনে গেলে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পক্ষে মফিজুল ইসলাম মোড়ল জানান, আশাশুনি-কোলাঘোলা সড়কের পশ্চিম পাশে প্রায় ৬০ বিঘা জমির উপর আমরা ৫০ টি পরিবার বসবাস করি। দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে এলাকার বৃষ্টির পানি সড়কের নীচ দিয়ে বসানো পাইপের মাধ্যমে পূর্বপাশে ৪ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আক্তার হোসেনের ঘের হয়ে খালে পড়ে পশ্চিম দিকে গলঘেসিয়া নদীতে নিষ্কাশিত হয়ে আসছে। এবছর আক্তার মেম্বর ইচ্ছাকৃতভাবে পানি সরানো বন্ধ রেখে কৃত্রিম জলাবদ্ধতা সৃষ্টি করে আমাদের পানিবন্দী রেখেছেন। শ্রীউলা ইউনিয়নের আশাশুনি-কোলাঘোলা সড়কের পূর্বপাশে মহিষকুড় মৎস্যসেট থেকে শ্রীউলা গ্রাম পর্যন্ত সবাই নয়নজলি রেখে পানি সরবরাহের পথ রাখলেও আক্তার মেম্বর, শাহিন মোল্যা ও শরিফুল মোল্যা তাদের ঘেরের সামনে কোন নয়নজলি না রাখায় আমাদের ভোগান্তির সীমা নেই। বর্তমানে আমাদের নীচু ঘরবাড়িতে বসবাস ও রান্নাঘরে রান্না করা যায়না। লেট্রিন গুলো পানিতে ডুবে থাকায় স্যানিটেশন ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। মৎস্যঘের গুলো তলিয়ে গিয়ে অর্থনৈতিকভাবে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়েছি। গবাদি পশুগুলো না খেয়ে মরছে। কোলের শিশুসহ সবাই পানিবাহিত নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ছে। পঁচা পানি পায়ে মেড়ে মসজিদে যাওয়া মুশকিল হয়ে পড়েছে।
গত কয়েকদিন আগে পার্শ্ববর্তী আফছার শেখ নামে এক ব্যক্তি মারা গেছে। পারিবারিক কবরস্থান পানিতে তলিয়ে থাকায় তাকে সরকারি কবরস্থানে দাফন করা হয় এবং পানিবন্দী থাকায় মরহুমের মিলাদ ও দোয়া অনুষ্ঠান অন্যের বাড়ি করতে হয়েছে।
দীর্ঘদিন পানিতে তলিয়ে থাকায় মাটির ঘরে বসবাসকারি আফছার শেখের ছেলে কাজল শেখ ও খোকন শেখ, ছাইফুল মোড়ল, আলমগীর মোড়ল, আবুল মোড়ল ও মৃত ইয়ার আলী গাজীর স্ত্রী’র বসতঘর ধ্বসে পড়ার উপক্রম হয়েছে। তাই মেম্বরের ঘেরের ভেতর থেকে আউটড্রেন নির্মান করে অতিদ্রুত পানি নিষ্কাশন করা না হলে ৫০টি পরিবার আরও ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়বে। শুক্রবার আমরা পাইপ দিয়ে পানি সরাতে গেলে মেম্বর ও তার ছেলে বাঁধা দিয়ে আমাদেরকে লাঞ্চিত করেন।
এ ব্যাপারে ইউপি সদস্য আক্তার হোসেন জানান, আমার নির্বাচনি প্রতিপক্ষ অভিযোগকারী মফিজুল ইসলাম অসত্য তথ্য দিয়ে সাংবাদিকদের বিভ্রান্ত করছেন। রাস্তার পূর্বদিকের পানি সরকারি কালভার্ট হয়ে পশ্চিম দিকের গলঘেষিয়া নদীতে পড়ে। তিনি রাস্তার পশ্চিম পাশের পানি অবৈধ পাইপের মাধ্যমে অহেতুক পূর্বদিকে আমার ঘেরের মধ্যে ফেলে আবার পশ্চিম দিকের খালে ফেলার চেষ্টা করছেন। শুক্রবার পানি সরানো নিয়ে তর্কাতর্কি হয়েছে কিন্তু মারধরের কোন ঘটনা ঘটেনি। জনপ্রতিনিধি হিসেবে স্থানীয় সবার সাথে বসে পানি নিষ্কাশনের দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে তিনি জানান।