ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা পেল সেনাবাহিনী, থাকবে যতদিন
অনলাইন ডেস্ক:
রাজধানীসহ সারা দেশে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কমিশনপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদেরকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা দিয়েছে সরকার। এই সিদ্ধান্ত আজ থেকে কার্যকর হয়েছে।
‘দ্য কোড অব ক্রিমিন্যাল প্রসিডিউর, ১৮৯৮’ এর ১২(১) ধারা অনুযায়ী দুই মাসের (৬০ দিন) জন্য এই ক্ষমতা দিয়ে মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, সেনাবাহিনীর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা ‘ফৌজদারী কার্যবিধির, ১৮৯৮’ এর ৬৪, ৬৫, ৮৩, ৮৪, ৮৬, ৯৫(২), ১০০, ১০৫, ১০৭, ১০৯, ১১০, ১২৬, ১২৭, ১২৮, ১৩০, ১৩৩ ও ১৪২ ধারার অপরাধগুলো বিবেচনায় নিতে পারবেন।
৬৪ ধারায় বলা আছে, পেশাগত অসদাচরণ, অপরাধ, চুক্তি বাতিল, ইত্যাদি। (১) এই আইনের অধীন পণ্য, কার্য বা সেবা ক্রয় কর্মকাণ্ডের সহিত সংশ্লিষ্ট কোনো কর্মকর্তা বা কর্মচারী এই আইন বা তদধীন প্রণীত কোনো বিধির বিধান লঙ্ঘন করিয়া কোনো পণ্য, সেবা বা কার্য ক্রয় বা সংগ্রহ করিবেন না বা করিবার চেষ্টা করিবেন না ৷
(২) ক্রয়কারী, ক্রয় প্রক্রিয়াকরণ ও চুক্তি বাস্তবায়নকালে, উহার কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণ যেন কোনো দুর্নীতি, প্রতারণা, চক্রান্ত, জবরদস্তিমূলক বা অন্য কোনো কর্মকাণ্ডে জড়িত না হন তাহার নিশ্চয়তা বিধান করিবে এবং একইভাবে এই আইনে সংজ্ঞায়িত কোনো দরপত্রদাতা বা পরামর্শক বা ব্যক্তি নৈতিক বিধি পালন করিবে এবং এই মর্মে নিশ্চয়তা বিধান করিবে যে, উহা বা উহার কর্মচারীগণ বা উহার পক্ষে কোনো মধ্যস্ততাকারী যেন অনুরূপ কোনো কর্মকাণ্ডে জড়িত না হন ৷
(৩) এই আইন প্রযোজ্য হয় এমন কোনো কর্মকর্তা বা কর্মচারী উপ-ধারা (১) এর বিধান লঙ্ঘন করিয়া কোনো কার্য করিয়া থাকিলে তিনি Government Servants (Discipline and Appeal) Rules, 1985 এর rule 3(b) এবং 3(d) বা উক্ত কর্মকর্তা বা কর্মচারীর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য সাধারণ আচরণ ও শৃঙ্খলা সংক্রান্ত চাকরি বিধি অনুযায়ী অসদাচরণ বা দুর্নীতির জন্য দায়ী হইবে এবং উক্ত কারণে তাহার বিরুদ্ধে বিভাগীয় শৃঙ্খলামূলক কার্যক্রম গ্রহণ করা যাইবে ৷
(৪) উপ-ধারা (৩) এর ব্যবস্থার বিকল্প বা অতিরিক্ত হিসাবে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা, কর্মচারী বা কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে Prevention of Corruption Act, 1947 এর সংশ্লিষ্ট ধারা এবং প্রযোজ্য ক্ষেত্রে Penal Code, 1860 এর অধীনেও ফৌজদারী কার্যক্রম গ্রহণ করা যাইবে ৷
(৫) কোনো ব্যক্তি যদি এই আইনের কোনো বিধান লঙ্ঘন করিয়াছে বলিয়া প্রতীয়মান হয়, তাহা হইলে ক্রয়কারী কার্যালয় প্রধান উক্ত ব্যক্তিকে সংশ্লিষ্ট ক্রয় কার্যক্রমে বা ভবিষ্যতে অন্য কোনো ক্রয় কার্যক্রমে অংশগ্রহণে অযোগ্য বলিয়া ঘোষণা করিতে পারিবেন ৷
(৬) কোনো ব্যক্তি এই আইনের অধীন ক্রয়কারীর সহিত সম্পাদিত চুক্তির কোনো মৌলিক শর্ত ভঙ্গ করিলে বা এই আইন ও বিধির সহিত সঙ্গতিপূর্ণ নহে এইরূপ কোনো কার্য সম্পাদন করিলে, ক্রয়কারী, বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে চুক্তি বাতিল করিতে পারিবে এবং উক্ত ব্যক্তি, ঠিকাদার, সরবরাহকারী বা পরামর্শককে উপ-ধারা (৫) অনুযায়ী, বিধি দ্বারা নির্ধারিত মেয়াদ উল্লেখ ক্রমে, সকল সরকারি ক্রয় কার্যক্রমে অংশগ্রহণে অযোগ্য বলিয়া ঘোষণা করিতে পারিবে।
দ্যা কোড অব ক্রিমিনাল প্রসিডিউর ১৯৯৮ এর ১২ (১) ও ১৭ ধারা অনুযায়ী বর্ণিত অধিক্ষেত্রে ও সময়কালে স্পেশাল এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা পেল সেনাবাহিনী।
কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে ঢাকাসহ সারা দেশে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়লে গত ১৯ জুলাই দিবাগত রাতে সারা দেশে সেনাবাহিনী মোতায়েন ও কারফিউ জারি করেছিল তৎকালীন সরকার। এরপর ছাত্র–জনতার গণ–অভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়।
তিন দিনের মাথায় ৮ আগস্ট শান্তিতে নোবেলবিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়। বিদ্যমান পরিস্থিতিতে এখনো সারা দেশে সেনাবাহিনী মোতায়েন রয়েছে।