অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্সে মৃত্যু হতে পারে প্রায় ৪ কোটি মানুষের
স্বাস্থ্য ডেস্ক:
বিশ্বব্যাপী স্বাস্থ্যখাতে এক অশনি সংকেত অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স। যখন কোনো ব্যাকটেরিয়া, ছত্রাক ও পরজীবী সময়ের সঙ্গে পরিবর্তিত হয় এবং তাদের বিরুদ্ধে ব্যবহৃত ওষুধে আর কাজ হয় না, তখন অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স তৈরি হয়।
সম্প্রতি প্রকাশিত একটি গবেষণায় দেখা গেছে, ২০২৫-৫০ সাল পর্যন্ত অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স সরাসরি ৩ কোটি ৯০ লাখ মানুষের মৃত্যুর কারণ হতে পারে। আর পরোক্ষাভাবে এটি প্রায় ১৬ কোটি ৯০ লাখ মানুষের মৃত্যু ঘটাতে পারে।
গতকাল সোমবার এ সংক্রান্ত গবেষণাটি চিকিৎসা সাময়িকী ল্যানসেটে প্রকাশিত হয়েছে। আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্সের মৃত্যুর বিষয় নিয়ে আলোচনা হতে পারে। এর আগে আগে এই গবেষণাটি প্রকাশিত হলো।
অ্যান্টিবায়োটিকের অপর নাম অ্যান্টিমাইক্রোবায়াল ড্রাগ। এগুলো মানুষ এবং পশু-পাখির শরীরে ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করে ব্যাকটেরিয়াদের মেরে ফেলে, নয়তো ব্যাকটেরিয়ার দৈহিক বৃদ্ধি ও বংশবিস্তার প্রতিরোধ করে। এই ওষুধ মানুষ বা পশুর দেহে প্রয়োগ করলে এটি শরীরের ব্যাকটেরিয়া মেরে ফেলে বা এর বংশবিস্তার রোধের মাধ্যমে রোগ নিরাময় করে। তাই ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে অ্যান্টিবায়োটিককে চিকিৎসা বিজ্ঞানের এক আশীর্বাদ বলা যায়। কিন্তু সেই অ্যান্টিবায়োটিক সঠিক উপায়ে প্রয়োগ না করলে হিতে বিপরীত হতে পারে।
গবেষণায় বলা হয়, কোনো ব্যবস্থা না নিলে ২০৫০ সাল পর্যন্ত প্রতি বছর সরাসরি অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্সে মৃত্যু হতে পারে ১৯ লাখ ১০ হাজার মানুষের। আর অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্সের পরোক্ষ কারণে প্রতি বছরে মারা যেতে পারে ৮২ লাখ ২০ হাজার মানুষ।
গ্লোবাল রিসার্চ অন অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স প্রজেক্টের গবেষকরা বলছেন, সরাসরি অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্সের কারণে বার্ষিক মৃত্যুর হার ৬৮ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি পাবে। আর এটির পরোক্ষ কারণে বার্ষিক মৃত্যুর হার ৭৫ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে।
গবেষকরা বলছেন, দক্ষিণ এশিয়া ও সাব-সাহারা অঞ্চলে অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্সে বেশি মৃত্যু হয়। তাঁদের ধারণা, এই মৃত্যু বৃদ্ধি স্বাস্থ্য ব্যবস্থা এবং জাতীয় অর্থনীতিকে চাপে ফেলবে।