সাতক্ষীরায় জজ কোর্টের পিপি অ্যাড. লতিফসহ ৩৫ জনের নামে মামলা
রঘুনাথ খাঁঃ ২১০৪ সালের ১৩ জুন সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ঝাউডাঙা ইউনিয়নের পাথরঘাাট গ্রামের ইসলাম মোড়লকে বাড়ি থেকে তুলে এনে গুলি করে হত্যার অভিযোগে সাতক্ষীরা জজ কোর্টের পিপি অ্যাড. আব্দুল লতিফ ও ৩৪ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ২০ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। নিহতের ভাই ইসরাইল মোড়ল বাদি হয়ে মঙ্গলবার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম প্রথম আদালতে এ মামলা দায়ের করেন। বিচারক নয়ন বড়াল মামলাটি এফআইআর হিসেবে গণ্য করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছেন।মামলার অন্যতম আসামীরা হলেন, সাতক্ষীরার তৎকালিন পুলিশ সুপার কাজী মনিরুজ্জামান, সদর সার্কেলের তৎকালিন সহকারি পুলিশ সুপার কাজী মনিরুজ্জামান, সদর থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এনামুল হক, পুলিশ পরিদর্শক নাসিরউদ্দিন, তালা- কলারোয়া-১ আসনের সাবেক সাংসদ ফিরোজ আহম্মেদ স্বপন, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ নজরুল ইসলাম, অতিরিক্ত পিপি অ্যাড. ওকালত আলী, কলারোয়া উপজেলা যুবলীগের তৎকালিন সভাপতি কাজী শাহাজাদা, সাতক্ষীরা পৌর কাউন্সিলর জাহাঙ্গীর হোসেন কালু।
মামলার বিবরণে জানা যায়, সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ঝাউডাঙা ইউনিয়নের পাথরঘাটা গ্রামের একব্বর মোড়লের ছেলে ইসলাম মোড়ল (৫৮) একজন মাছ ব্যবসায়ি। বিচার শালিসে তার এলাকায় প্রচুর সুনাম রয়েছে। এ সুনাম সহ্য করতে পারতো না স্থানীয় একটি মহল। এরই ধারাবাহিকতায় ৭ থেকে ৩৫ নং আসামীরা ২০১৪ সালের ১০ জুন সন্ধ্যা ৬টার দিকে তালা- কলারোয়া-১ আসনের সাবেক সাংসদ ফিরোজ আহম্মেদ স্বপনের বাড়িতে এক জরুরী বৈঠক করে। বৈঠকে ইসলাম মোড়লকে হত্যার সিদ্ধান্ত চুড়ান্ত করা হয়। পুলিশসহ সকল আসামীরা ২০১৪ সালের ১২ জুন দিবাগত রাত একটার দিকে বাদির বাড়ি ঘিরে ফেলে। ডাকাডাকির একপর্যায়ে ইসলাম মোড়ল ঘরের বাইরে এলে কয়েকজন আসামী তাকে জাপটে ধরে উঠানে নামায়। কয়েকজন আসামী তাকে মারপিট করে পুলিশ পিকআপে তুলে দেয়। পরে কয়েকজন আসামী পুলিশ পিকআপে উঠে ইসলামের চোখ বেঁধে ফেলে। পুলিশ ভ্যানটি সাতক্ষীরার দিকে চলতে থাকলে বাদিসহ চারজন সাক্ষী দুটি মটর সাইকেলে করে পুলিশ পিকআপের পিছনে পিছনে যেতে থাকে। মাধবকাটি পৌঁছানোর পর পুলিশ বাদিসহ চারজনকে সামনে যেতে মানা করে। মাধবকাটি থেকে সাতক্ষীরার দিকে আনুমানিক ৩০০ হাত যাওয়ার পর ছয়ঘরিয়া নামক স্থানে পুলিশ পিকআপটি থেমে যায়। সেখানে দুটি গুলির শব্দত শুনতে পান বাদি ও কয়েকজন সাক্ষী। বাদি পরে সেখানে যেয়ে রাস্তার উপর তাজ্ রক্তের ছাপ দেখতে পান। ইসলামের লাশ পুলিশ পিকআপে তুলে সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরদিন সকালে বাদিসহ অনেকে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে এসে ইমলাম মোড়লের লাশ দেখতে পায়। ইসলাম মোড়লের বুকে দুটি গুলির ক্ষত ছিলো। সদর হাসপতালের মর্গে ময়না তদন্ত শেষে ইসলাম মোড়লের লাশ গ্রাম পুলিশ কামরুল দফাদারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। রাতেই স্থানীয় মসজিদের সামনে নামাজে জানাযা শেষে ইসলামের লাশ পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। পুলিশের ভয়ে তখন মামলা করা সম্ভব না হলেও বর্তমানে পরিস্থিতি অনুকুলে থাকায় মামলা করা হলো। সাতক্ষীরা জজ কোর্টের আইনজীবী অ্যাড. অ্যাড, জিয়াউর রহমান মামলার বিসয়টি নিশ্চিত করেছেন।